বুধবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

শব্দ ও বায়ুদূষণ

কঠোরভাবে রুখতে হবে অপকর্ম

শব্দদূষণ ঢাকাবাসীর নিত্যসঙ্গী। তবে প্রতি বছর গ্রেগরিয়ান নববর্ষ উপলক্ষে থার্টিফার্স্ট রাতে যে শব্দদূষণ হয় তা জুলুমের নামান্তর। এ বছর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষেধাজ্ঞার পরও ভয়ংকরতম শব্দদূষণের পাল্লায় পড়তে হয়। আতশবাজি পোড়ানোর কারণে ঢাকার বায়ু হয়ে পড়ে চরম অস্বাস্থ্যকর। মাত্রাতিরিক্ত শব্দ এবং বায়ুদূষণে শিশু ও বৃদ্ধদের নাজেহাল হতে হয়। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের অনুরোধ উপেক্ষা করে মেট্রোরেলের এক কিলোমিটারের মধ্যে ফানুস ওড়ানো হয়েছে এবারের থার্টিফার্স্টে। এ অবস্থায় মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ থার্টিফার্স্ট রাতেই ৩৮টি ফানুস মেট্রোরেলের তারের ওপর থেকে সরিয়ে নেয়। নতুন বছরের প্রথম ঘণ্টায় শব্দদূষণ হার ৩০ ডিসেম্বরের তুলনায় ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এ সময় বেশির ভাগ শব্দের মাত্রা ৮০ থেকে ৯০ ডেসিবেলের মধ্যে ছিল। আর ৭০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ মানুষসহ পশুপাখির কানের বধিরতা সৃষ্টি করতে সক্ষম। এমনকী এ শব্দ গর্ভপাত, শিশুমৃত্যু ও বয়স্কদের হার্টের ঝুঁঁকি বাড়ায়। বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)-এর গবেষণা দল সাত বছর ধরে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বায়ু ও শব্দদূষণের তীব্রতা পর্যবেক্ষণ করে আসছে। এ গবেষণায় নববর্ষ উদযাপনের কয়েক ঘণ্টা আগে ও পরে বায়ু এবং শব্দদূষণের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। ২০২৪ সালের নববর্ষের রাত ১১টা থেকে ১২টার তুলনায় পরবর্তী এক ঘণ্টার বায়ুদূষণের পরিমাণ প্রায় ৬৪ মাইক্রোগ্রাম বা ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। নতুন বছরের প্রথম দিনেই ঢাকার বাতাসের মান ছিল ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’। এ দিনও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় অবস্থান করেছে ঢাকা। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের স্কোর হিসেবে সোমবার ঢাকার বায়ুমানের স্কোর ছিল ২৪৬। এ স্কোর নিয়ে ঢাকা বায়ুদূষণের দিক দিয়ে বিশ্বে প্রথম স্থানে অবস্থান করছিল। গ্রেগোরিয়ান নববর্ষের প্রথম দিনে শব্দ ও বায়ুদূষণে ঢাকার অধঃপতিত অবস্থা নিঃসন্দেহে লজ্জার ঘটনা। জাতীয় নির্বাচনে মাত্র ছয় দিন আগে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজধানীতে যেভাবে আতশবাজি পোড়ানো ও ফানুস ওড়ানো হয়েছে তা অপ্রত্যাশিত এসব অপকর্ম কঠোরভাবে রুখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর