রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

তৃণমূল ছিন্নমূল ও উন্মূল কাহিনি

মহিউদ্দিন খান মোহন

তৃণমূল ছিন্নমূল ও উন্মূল কাহিনি

তৃণমূল, ছিন্নমূল এবং উন্মূল শব্দ তিনটি শুনতে একই রকম মনে হলেও অর্থগত ভিন্নতা রয়েছে। তিনটি শব্দের শেষে ‘মূল’ শব্দটি সংযোজিত। ‘তুণমূল’ শব্দটির মূল শব্দ ‘তৃণ’, যার অর্থ ঘাস কিংবা লতা জাতীয় ক্ষুদ্র উদ্ভিদ। আর ‘মূল’ মানে ইংরেজি ‘রুট’ শব্দের অর্থ শেকড়। সাধারণত তৃণমূল বলতে মাটির সঙ্গে যার নিবিড় সম্পর্ক তাকেই বোঝায়।  ছিন্নমূলের আভিধানিক অর্থ ‘উৎপাটিত’ অর্থাৎ শেকড় বা মূল ছিঁড়ে স্থানচ্যুত হওয়া। আর ‘উন্মূল’ শব্দের অর্থ ‘মূলসহ তুলে নেওয়া হয়েছে’ এমন বা মূল হারানোকেও বোঝায়।

রাজনৈতিক আলোচনায় তৃণমূল শব্দটি প্রাসঙ্গিকভাবেই স্থান পেয়ে থাকে।  যেমন ‘তৃণমূল পর্যায়ে সম্পৃক্ত’ ‘তৃণমূল নেতা-কর্মী’ কিংবা ‘সংগঠনের তৃণমূল কমিটি’ ইত্যাদি। অর্থাৎ একবারে জনগণের সঙ্গে সম্পর্কিত অর্থে তৃণমূল শব্দটি ব্যবহার হয়ে থাকে। আমাদের নিকট প্রতিবেশী ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ‘তৃণমূল কংগ্রেস’ এক আলোড়ন সৃষ্টিকারী রাজনৈতিক দল। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে জন্ম নেওয়া এ দলটি আক্ষরিক অর্থেই তৃণমূল সংগঠন; যার মূলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি জনসম্পৃক্ত রাজনীতিক হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। লাখ টাকা দামের শিফন জর্জেট কিংবা জামদানি নয়, বরং তাঁতে বোনা আটপৌরে শাড়ি পরে তিনি মিশে গেছেন জনতার সঙ্গে। বস্তুত, ওপারের মমতা দিদি হতে পারেন ‘তৃণমূল’ নেতা বা নেত্রীর প্রতিমূর্তি।

আমাদের দেশেও নামের সামনে তৃণমূল শব্দটি বসিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের জন্ম হয়েছে সম্প্রতি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন প্রথম স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা প্রতিষ্ঠিত দলটির নাম ‘তৃণমূল বিএনপি’। তাঁর মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন আগে দলটি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনভুক্ত হয়। হুদা সাহেবের মৃত্যুর কয়েক মাস পরে একটি কাউন্সিল করে বিএনপির দুই সাবেক নেতা শমসের মুবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকারকে যথাক্রমে চেয়ারপারসন ও মহাসচিব করা হয়। নাজমুল হুদার মেয়ে অন্তরা সেলিমা হুদা হন কো-চেয়ারপারসন। তৃণমূল বিএনপি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তেমন আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারেনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটি দুই শতাধিক আসনে মনোনয়ন দিলেও একজন প্রার্থীও জয়লাভ করতে পারেনি। উপরন্তু সব প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আমাদের মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে দলটির প্রার্থী ছিলেন অন্তরা সেলিমা হুদা; যিনি এই আসনের আধিবাসী নন। নির্বাচন চলাকালে ভিন্ন আরেকটি দলের প্রার্থী তৃণমূল বিএনপিকে ‘ছিন্নমূল’ বলে কটাক্ষ করে বক্তব্য রেখেছিলেন একটি নির্বাচনি সভায়। মূলধারার বিপরীত শব্দ দিয়ে তৈরি নামের সে দলটির নেতার ওই বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ আমার কাছে পাঠিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন সুহৃদ। নিজেকে মহাসাবালক রাজনীতিক হিসেবে জাহির করতে প্রাণান্ত বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিতান্ত নাবালক সাবেক এক রাষ্ট্রপতির ওই পুত্রপ্রবরের বক্তব্য শ্রবণ করে বিস্মিত হয়েছেন সবাই। কেননা, যেখানে তাদের নিজেদের মূলেরই কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই, সেখানে তিনি আরেকজন প্রার্থী ও তাঁর দলকে কটাক্ষ করেছেন ছিন্নমূল বলে! প্রশ্ন হলো, নিজ এলাকার বাইরের নির্বাচনি আসনে প্রার্থী হলেই কি কেউ ছিন্নমূল হয়ে যান? বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া একাধিকবার বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হয়েছেন। তাই বলে কি তাঁরা ছিন্নমূল ছিলেন? এমনকি ওই ব্যক্তির পিতা (সাবেক রাষ্ট্রপতি) ২০০৮ সালের নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জ-১ ও ২ এবং ঢাকা-৬ আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন। মুন্সীগঞ্জ-২ ও ঢাকা-৬ আসনে তিনি ছিলেন বহিরাগত। পুত্রের সংজ্ঞা মোতাবেক পিতাও তো ছিন্নমূল। আরও মজার ব্যাপার হলো, একদা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ চেয়ারে উপবেশনকারী বয়োবৃদ্ধ পিতাজি ওই দুটি আসনে জামানত হারিয়েছিলেন। আর নিজের আসনে কানের পাশ দিয়ে বুলেট যাওয়ার ন্যায় মাত্র হাজার দেড়েক ভোটে জামানত রক্ষা পেয়েছিল।

পিতার সে ঐতিহ্য অক্ষুণœ রেখে এবার পুত্রধনও তার জামানত খুইয়ে চুপসে গেছেন। নির্বাচনের আগে লম্বা-চওড়া কথা বললেও পরে তিনি একেবারেই ‘স্পিকটি নট’ হয়ে গেছেন। অবশ্য এটাই তার জামানত হারানোর প্রথম অভিজ্ঞতা নয়। ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হয়ে জামানত হারিয়েছিলেন তিনি। এ জন্য বিক্রমপুরের দুষ্টু বালকরা এখন এই পিতা-পুত্রকে ‘জামানত হারাইন্না গোষ্ঠী’ বলে উপহাস করে থাকে। দেশের রাজনীতিতে নিজেকে দিকপাল ভেবে বেলুনের মতো ফুলে ওঠা পিতা-পুত্র এখন চুপচাপ। কারণ বেলুনের সম্বল তো বাইরে থেকে ভরা হাওয়া। সে হাওয়া বেরিয়ে গেলে বেলুন তার স্ফীতাবস্থা হারায়। এই পিতা-পুত্রের রাজনীতির মূল ভিত্তিভূমি ছিল বিএনপি। সেখান থেকে মূল ছিন্ন অর্থাৎ উৎপাটিত হয়ে বরং তারাই পরিণত হয়েছেন ছিন্নমূলে।

পুত্রধন তার বক্তৃতায় ২০১৮ সালে নিজস্ব মার্কা ফেলে দিয়ে নৌকার বৈঠা ধারণের কৈফিয়ত দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘১৯৫৪ এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তার পিতামহ নৌকা মার্কায় ইলেকশন করেছিলেন। এত দিন পরে তিনি তার দাদার নৌকায় চড়েছিলেন।’ আহ্! কী অপূর্ব দাদা এবং নৌকা-প্রেমের ব্যাখ্যা! দাদার নির্বাচনি মার্কার প্রতি যদি এতই প্রেম, তাহলে তিনি এবং তার পিতাজি মাঝখানে কেন ধান খেতের কিষান সেজেছিলেন? আসল কথা হলো সুবিধা। যখন যেখানে সুবিধা, সেখানে পাত পাতা। তাছাড়া নৌকা কি আসলেই তার মরহুম দাদার? ইতিহাস তো তা বলে না। ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজামে ইসলাম পার্টি ও গণতন্ত্রী দলের সমন্বয়ে গঠিত যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনি প্রতীক ছিল নৌকা। কৃষক-শ্রমিক পার্টির সদস্য হিসেবে অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী নৌকা মার্কায় প্রার্থী হন এবং জয়লাভ করেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় পরিষদের তৎকালীন ঢাকা-৫ (শ্রীনগর-সিরাজদিখান-লৌহজং) আসনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কফিল উদ্দিন চৌধুরীকে নৌকা মার্কায় মনোনয়ন দেন। উল্লেখ্য, ওই নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার আগে কফিল উদ্দিন চৌধুরী কখনোই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। দুটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হলেই কি কেউ সেটার মালিক বনে যান? সুতরাং ‘আমি আমার দাদার নৌকায় চড়েছিলাম’ কথাটি ঐতিহাসিক সত্যের ধোপে টেকে না। নৌকার লোক না হয়েও ১৯৫৪ এবং ১৯৭০ সালে দাদা যেভাবে নৌকার চড়েছিলেন ২০১৮ সালে একই কায়দায় নাতিও নৌকার খন্ডকালীন যাত্রী হয়েছিলেন।

বক্তৃতার একপর্যায়ে তিনি বলেছেন, ‘আমরা কোনো দিন বিএনপি করি নাই। আমরাই তো বিএনপি।’

উল্লেখ্য, এর আগেও অনেকবার তিনি বলেছেন, যেহেতু তার বাবার মগবাজারের বাড়ির ঠিকানায় বিএনপি নিবন্ধিত, তাই এই দল তাদেরই। তিনি আরও বলেছেন, বিএনপি গঠিত হওয়ার পর ধানমন্ডিতে (২৭ নম্বর রোড) বিএনপির যে অফিস নেওয়া হয়েছিল প্রেসিডেন্ট জিয়ার উদ্বোধনের আগে ওই বক্তার মা নাকি তাদের মগবাজারের বাসার ড্রইং রুমের পর্দা খুলে অফিস সাজাতে নিয়ে গিয়েছিলেন! এমন হাস্যকর তথ্য কোনো সুস্থ মানুষ প্রচার করতে পারে, ভাবতে অবাক লাগে।

আমি (এ নিবন্ধকের লেখক) যেহেতু বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন একজন ক্ষুদ্র কর্মী, তাই এর গঠন প্রক্রিয়া সম্বন্ধে অনেক কিছুই অবগত আছি। বিশেষত এ দল গঠনের মূল নিউক্লিয়াসের অন্যতম তৎকালীন ন্যাপ চেয়ারম্যান মশিয়ুর রহমান যাদু মিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে ভিতর-বাইরের অনেক কিছু জানতে পেরেছি। ডা. বি চৌধুরী ১৯৭৬ সাল থেকে একজন পেশাজীবী হিসেবে জিয়াউর রহমানের উপদেষ্টা পরিষদে থাকলেও বিএনপি মহাসচিব মনোনীত হওয়ার আগ পর্যন্ত রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। বিএনপি গঠনের আগে জিয়াউর রহমান নেপথ্যে থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে আহ্বায়ক করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) নামে যে দল গঠন করেছিলেন, বি চৌধুরী সে দলেরও সদস্য ছিলেন না। এমনি ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিয়াউর রহমানের সমর্থনে বিক্রমপুরের যেসব সভায় তিনি বক্তৃতা করতেন, তাতে তাকে জিয়ার উপদেষ্টা হিসেবেই উল্লেখ করা হতো, কোনো দল বা জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের নেতা হিসেবে নয়। বিএনপির গঠন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রস্তাবে দলটির মহাসচিবের পদে যোগ দেন তিনি। বি. চৌধুরীর সঙ্গে এক সময় আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাঁকে একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম, রাজনীতিতে তাঁর সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়ে। তিনি বলেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়া একদিন তাকে বলেন, ডাক্তার সাহেব, রোগীর সেবা তো অনেক করলেন এবার রোগাক্রান্ত এই দেশটার একটু সেবা করেন।’ জবাবে বি. চৌধুরী বলেছিলেন, ‘স্যার, আপনার উপদেষ্টা হিসেবে সে কাজ তো করছিই।’ তখন প্রেসিডেন্ট জিয়া তাকে বলেন, বিএনপি নামে যে নতুন দলটি করতে যাচ্ছি, আপনি তার মহাসচিব হবেন। বি. চৌধুরী তিনটি শর্ত দিয়েছিলেন। ১. আমি মিথ্যা কথা বলতে পারব না। ২. কারও বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করতে পারব না এবং ৩. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে কখনো কটূক্তি করতে পারব না। জিয়াউর রহমান তিনটি শর্তই মেনে নিয়েছিলেন। বলেছিলেন, আমরা কারও বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করব না। আমরা আমাদের কর্মসূচির কথা জনগণকে জানাব। আর মিথ্যা কথা বলার তো কোনো দরকারই নাই। শেষ শর্ত সম্বন্ধে প্রেসিডেন্ট জিয়া বি. চৌধুরীকে বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আমাকে কি কখনো বিরূপ মন্তব্য করতে শুনেছেন? তাঁকে আমরা রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে টেনে আনব কেন? এরপর বি. চৌধুরী বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হতে সম্মত হন। আলহামদুলিল্লাহ, তার জীবদ্দশায় আমি কথাগুলো বলতে পারলাম। তাছাড়া বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তৎকালীন ‘পলিটিক্যাল পার্টি রেগুলেশন’ বা পিপিআর-এর অধীনে। যেহেতু তখন দলটির কোনো দফতর ছিল না, তাই মহাসচিব বি. চৌধুরীর ২২৬ আউটার সার্কুলার রোড, মগবাজার, ঢাকার বাসার ঠিকানা ব্যবহার করেই নিবন্ধনের আবেদন করা হয়েছিল। রেজিস্ট্রেশনের আবেদনে ঠিকানা ব্যবহার যদি দলের মালিকানা নির্দেশ করে, তাহলে অবশ্য বলার কিছু নেই।

তবে ঐতিহাসিক সত্য হলো, ডা. বি. চৌধুরী জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন, দলটি প্রতিষ্ঠা করেননি। আর পিতার পারিবারিক উত্তরাধিকারী হিসেবে পুত্রধনও বিএনপিতে সম্পৃক্ত হয়ে জীবনে প্রথম এমপি হয়েছিলেন। ডা. বি. চৌধুরী তাঁর রাজনৈতিক জীবনের ভিত্তিমূল স্থাপন করেছিলেন বিএনপিতে। ঘটনাচক্রে সে মূল এক সময় উপড়ে যায়।  তারপর উন্মূল হয়ে এখানে সেখানে শেকড়, প্রোথিত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিএনপির মতো উর্বর ভূমি না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ‘স্ব-আখ্যায়িত পুঁটিমাছের কলিজার আওয়ামী লীগেই পুত্রধনকে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ‘ওয়ান টাইম’ বলপেনের মতো তাকে একবার ব্যবহার করেই ছুড়ে ফেলে দিয়েছে।

অনেক রাজনৈতিক সভায় আমি মন্তব্য করেছি-ডা. বি. চৌধুরী কোনো নক্ষত্র তো ননই, গ্রহও নন, উপগ্রহ মাত্র। আপন আলোয় আলোকিত নন তিনি। জিয়াউর রহমানের রাজনীতির আলোয় নিজেকে উদ্ভাসিত করেছিলেন। সে আলোকরশ্মি যখন তাঁর ওপর থেকে সরে যাওয়ায়, তিনি নিষ্প্রভ হয়ে গেছেন। আর তাঁর পুত্রধন তো কৃত্রিম উপগ্রহ।  যার মেয়াদ ও কার্যক্ষমতা প্রযুক্তিনির্ভর এবং অপরের হাতে নিয়ন্ত্রিত। বলা নিষ্প্রয়োজন, কৃত্রিম উপগ্রহ মানুষের সৃষ্টি বিধায় নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে তার কার্যকারিতা শেষ হয়ে যায়। সাবেক রাষ্ট্রপতির পুত্রপ্রবরের রাজনৈতিক জীবনের মেয়াদ ও কার্যকারিতা কতদিন কে জানে!

লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি-বিশ্লেষক

সর্বশেষ খবর