রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভেজালের দৌরাত্ম্য

জিম্মি হয়ে পড়ছে দেশের মানুষ

বাংলাদেশের পরিচিতি গড়ে উঠছে ভেজাল নকলের দেশ হিসেবে। ওষুধ, খাদ্যপণ্য, প্রসাধনী এমন কোনো পণ্য নেই যেখানে ভেজাল নকল নেই। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত তথা উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে মানসম্মত ওষুধ তৈরিতে এগিয়ে। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ উন্নত বিশ্বেও রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। শতাধিক দেশে বাংলাদেশের ওষুধ গুণমানের জন্য প্রশংসিত হয়েছে। অথচ এ দেশে ভেজাল ও নকল ওষুধের উৎপাদনও ঘটছে অহরহ। জীবন বাঁচাতে রোগীকে দেওয়া হচ্ছে যে ওষুধ তাতেই মৃত্যু হচ্ছে রোগীর। ফরসা হতে ক্রিম ব্যবহার করে। ঝলসে যাচ্ছে চামড়া। প্রসিদ্ধ ব্র্যান্ডের মোড়ক নকল করে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল পণ্য। নকল বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের কারণে হরহামেশা ঘটছে অগ্নিদুর্ঘটনা। খাবারে মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত রং ও রাসায়নিক। নিষ্পাপ শিশুর খাদ্যেও মেশানো হচ্ছে ভেজাল। এতে স্বাস্থ্যগত ও আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ। ঘটছে অপমৃত্যু এবং বাড়ছে অসুস্থ মানুষের সংখ্যা। দিনের পর দিন প্রকাশ্যে এমন অনিয়ম চললেও সরকারের তদারকি সংস্থাগুলো নির্বিকার। মাঝেমধ্যে ভেজালবিরোধী অভিযান চালানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। উল্টো মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করা এসব প্রতারক কিছুদিনের মধ্যে আবারও একই কাজে ফিরছে। খাদ্যপণ্য, জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, পশুখাদ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম, শিশুখাদ্য, বেকারি পণ্য, খাবার পানি, প্রসাধনী থেকে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ-সবকিছুতেই মেশানো হচ্ছে ভেজাল। নকল ভেজালে মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যহানির ঘটনা ঘটছে। অর্থনৈতিকভাবেও ঘটছে বিপর্যয়। নকল ভেজাল জ্বালানি তেল ও মবিল ব্যবহার করে প্রতি বছর শত কোটি টাকার যানবাহন নষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে ওষুধে ভেজাল আগ্রাসি রূপ ধারণ করেছে। জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা। নকল চেতনানাশক ওষুধ ব্যবহার করে সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকজন শিশু ও প্রসূতির মৃত্যু ঘটেছে। নকল ভেজালের বিরুদ্ধে দেশে আইন থাকলেও প্রয়োগের অভাবে তা কোনো কাজে লাগছে না। নকল ভেজালের অশুভ চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ছে দেশের মানুষ। এ অকাম্য অবস্থার অবসানে সরকারকে সক্রিয় হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর