রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঘাতক ময়লার গাড়ি

সিটি কর্তাদের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

দুই সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি মৃত্যুর ফেরেশতা আজরাইল বা যমদূতের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে বললে খুব একটা ভুল বলা হবে না। গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সিটির বেপরোয়া ময়লার গাড়ি কেড়ে নিয়েছে মাহিন আহমেদ নামে সপ্তম শ্রেণির এক মেধাবী শিক্ষার্থীকে। এ নিয়ে গত ১৩ বছরে রাজধানীতে ময়লার গাড়িচাপায় অন্তত ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। একের পর এক প্রাণহানি ঘটালেও এজন্য কাউকে শাস্তি পেতে হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। স্মর্তব্য, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাড়িচাপায় ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর গুলিস্তানে প্রাণ হারান নটর ডেম কলেজের ছাত্র নাঈম হাসান। পরদিন ২৫ নভেম্বর দুপুরে পান্থপথে সংবাদকর্মী আহসান কবির খানের মৃত্যু হয়। সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নাঈমের মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজপথে নেমেছিল শিক্ষার্থীরা। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী গাড়িচাপায় ২০২৩ সালের ৬ মার্চ মারা যান আবু তৈয়ব নামের একজন কাপড় ব্যবসায়ী। ২০২২ সালে ময়লার গাড়ি দুর্ঘটনায় অন্তত চারজন মারা যান। ওই বছরের ২ এপ্রিল খিলগাঁওয়ে ডিএসসিসির ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নাসরিন খানম নামের এক নারী নিহত হন। ২৩ জানুয়ারি মহাখালীর উড়ালসড়কের কাছে ময়লার গাড়ির ধাক্কায় শিখা রানী ঘরামির মৃত্যু হয়। তিনি ছিলেন ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মী। একই বছরের জুলাইয়ে মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজের সামনে ময়লার গাড়িচাপায় সাব্বির আহমেদ নামের এক তরুণ নিহত হন। ওই বছরের ৩১ মে রাতে মুগদার টিটিপাড়া মোড়ে দক্ষিণ সিটির বর্জ্যবাহী গাড়ির ধাক্কায় নিহত হন নাজমা বেগম নামে এক পথচারী। বৃহস্পতিবার রাতে আইডিয়াল স্কুলের স্কুলছাত্র মাহিন এক বন্ধুর বাসায় যাচ্ছিল। এমন সময় বেপরোয়া ময়লার গাড়ি তাকে ধাক্কা দিলে গুরুতরভাবে আহত হয়। সঙ্গে সঙ্গে নেওয়া হয় মুগদা হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেলে এবং সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সে। আমরা চাই দুই সিটির ময়লার গাড়ির দৌরাত্ম্য থামাতে কর্তৃপক্ষ কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জেগে উঠবেন। নিহতের পরিবারকে দেওয়া হবে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর