মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

তীব্র দাবদাহ

ফসলহানির শঙ্কা

তীব্র দাবদাহে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দাবদাহে বোরো ধানের উৎপাদন হ্রাস পেতে পারে। অধিকাংশ বোরো ধান কৃষকের ঘরে উঠলেও এখনো দেশের বেশকিছু এলাকায় ধান কাটা হয়নি। ফলে দুশ্চিন্তা বেড়েছে কৃষকের। প্রচন্ড দাবদাহে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে আম ও লিচুর গুটি। তীব্র গরমে ধানসহ অন্যান্য ফল-ফসলের বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সারা দেশে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ৫০ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টর জমিতে। যেখানে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ কোটি ২২ লাখ ৫৬৪ টন। তবে অতি তাপে উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে এবার। কেননা, ২০২১ সালে কয়েক ঘণ্টার হিটশকে ৩ লাখ কৃষকের ২১ হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছিল। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, ধানের জন্য ক্রিটিক্যাল টেম্পারেচার ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রিও ছাড়িয়ে গেছে; যা ধানের জন্য সহনীয় মাত্রার বেশি। এখন যদি দু-তিন ঘণ্টা ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে গরম বাতাস বয়ে যায় তবে হিটশক হবে। ফলে ধান নষ্ট হয়ে চিঁটা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রচন্ড দাবদাহে শুধু বোরো ধান নয়, অন্যান্য ফল ও ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন চাষিরা। আম, লিচুর মতো রসালো ফলের পাশাপাশি মরিচ, কচু, ভুট্টা, কলা, করলা, পাট ও বিভিন্ন সবজির ফলন নিয়ে নানা শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ আম চাষি অর্থাভাবে গাছে সেচ দিতে পারছেন না। বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকছেন বাধ্য হয়ে। অনেকে সেচ দিলেও আমের গুটি পড়ে যাওয়ায় চিন্তায় আছেন। রোদের তীব্রতায় ঝরে পড়ছে আমের গুটি। পাশাপাশি লিচু শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। অতিরিক্ত খরায় পাট-মরিচসহ মাঠের ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবদাহে ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নেমে গেছে বেশির ভাগ এলাকায়। নদ-নদী, খাল-বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে সব ধরনের কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তা নিরসনে কৃষি প্রশাসনকে কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কীভাবে ফসল রক্ষা ও উৎপাদন করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ ও সহায়তা দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর