মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

মাদক ব্যবসা

জিরো টলারেন্সের বিকল্প নেই

মাদকের অভিশাপে ভুগছে সারা দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষ। বাংলাদেশের মানুষ সংস্কৃতিগত ও ধর্মীয় মূল্যবোধের কারণে মানসিকভাবে মাদকবিরোধী। তারপরও আমাদের দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে মাদক আগ্রাসন। মাদক ব্যবসার অভিযোগে চুনোপুঁটিরা মাঝে-মধ্যে ধরা পড়লেও গডফাদাররা থেকে যাচ্ছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। কারণ বেশির ভাগ সময়ই গ্রেফতার হচ্ছেন মাদক বহনকারী এবং খুচরা ব্যবসায়ীরা। মাদক সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কিত এজাহারের দুর্বলতা ও সাক্ষীর অভাবে মামলা থেকে খালাস পেয়ে যাচ্ছেন তারা অল্প সময়ের মধ্যেই। বিপরীতে আড়ালে থেকে সবকিছুর কলকাঠি নাড়ছেন গডফাদাররা। তাদের আশ্রয় দিচ্ছেন ক্ষমতাসীনদের অনেকে। আর এ কারণে গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান। মাদকের রাহুগ্রাস থেকে বের হতে পারছে না দেশ। এ ব্যবসার মূলহোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকার কারণে। মাদকের গডফাদারদের মধ্যে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির তালিকাভুক্ত অন্তত ১০ জন দীর্ঘদিন ধরে সারা দেশের মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের বেশির ভাগ টেকনাফ ও কক্সবাজারের বাসিন্দা। তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা দেশব্যাপী তিন সহস্রাধিক মাদক ব্যবসায়ী মাঠপর্যায়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের সঙ্গে রয়েছে কিশোর অপরাধীরাও। মাদক নিয়ন্ত্রণে মাদক ব্যবসায়ীদের ডিজিটাল ডেটাবেজ করতে যাচ্ছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। এক ক্লিকেই মাদক ব্যবসায়ীদের সব ধরনের তথ্য তাতে উঠে আসবে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে টেকনাফ উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ১০১ মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন। এরপর মনে করা হয়েছিল কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্তে মাদক চোরাচালান কমবে। তবে বাস্তবে এখন তার উল্টোটা ঘটছে। আত্মসমর্পণকারীরা জামিন পেয়ে তাদের অনেকে আবার মাদক ব্যবসায় জড়িত হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। মাদক আগ্রাসন বন্ধে নরম কোনো ব্যবস্থা যে কাজে লাগবে না তা ইতোমধ্যে প্রমাণিত। এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে।

সর্বশেষ খবর