শনিবার, ১১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

নতুন গতিসীমা

সড়ক শৃঙ্খলা নয় বিশৃঙ্খলা বাড়াবে

ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়া আর যাই হোক সুস্থ চেতনার পরিচয় নয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ সড়কে গতিসীমা নির্ধারণের নামে তেমন ‘কৃতিত্বই’ দেখিয়েছে। ঘটা করে তারা সড়ক ও মহাসড়কে মোটরযানের শ্রেণিভেদে যে সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে তা নিছক দায়সারা বললেও কম বলা হবে। এতে সড়কে শৃঙ্খলা না আরও বিশৃঙ্খলা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে- তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। এমনিতেই বাংলাদেশে শৃঙ্খলার অভাব সব ক্ষেত্রেই প্রকট। সড়ক-মহাসড়কে তো এর কোনো বালাই নেই। বিআরটিএ যে সর্বোচ্চ গতি বেঁধে দিয়েছে তা যানবাহন চালক ও পথচারীসহ অন্যরা মেনে চলবেন- সেটি দূরের প্রশ্ন। কারণ সব সম্ভবের এই দেশে যারা আইন প্রয়োগ করেন তাদের মধ্যেই আইন ভঙ্গের প্রবণতা কম নয়। আমরা সেদিকে না গিয়ে শুধু এতটুকু বলতে চাই, অবিবেচনাপ্রসূত গতিসীমা সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার বদলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে উৎসাহ জোগাবে। আরব্য উপন্যাসের আলাদিনের চেরাগের দৈত্য ছাড়া আর কারও পক্ষে গতিসীমার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, দ্রুতগতির জন্য সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে বলে যারা ভাবেন তা নিছক অনুমাননির্ভর। বিআরটিএ সড়ক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা ও তথ্যউপাত্তের বদলে যেভাবে অনুমানকে প্রাধান্য দিয়েছে তা অপ্রত্যাশিত। এ ক্ষেত্রে তারা নিজেদের সবজান্তা ভাবার বিভ্রান্তিতে যে ভুগেছেন তা স্পষ্ট। সব জান্তা কর্তাব্যক্তিরা ভুলে গেছেন একই সড়কে বিভিন্ন গতির গাড়ি চলাও বিশৃঙ্খলা। এতকাল বিভিন্ন ধরনের গাড়ির গতির মধ্যে যে পার্থক্য হতো তাতে বৈধতা দিয়ে প্রকারান্তরে বিশৃঙ্খলা উসকে দেওয়া হয়েছে। সড়ক শৃঙ্খলার স্বার্থে মহাসড়কে নসিমন, করিমন, স্কুটার চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে। উদ্ভট ভাবনাকে প্রাধান্য না দিয়ে গতি নির্ধারণে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার মাধ্যমে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর