শনিবার, ১১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

সোহেল চৌধুরী হত্যার রায়

প্রত্যাশা গতিশীল বিচার ব্যবস্থা

দীর্ঘ ২৫ বছর পর ঘোষণা হয়েছে নব্বই দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার রায়। এতে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড  হয়েছে। অন্যদিকে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনসহ ছয়জন খালাস পেয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে না পারায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, ‘সাক্ষীরা গা বাঁচিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের মধ্যে পক্ষপাতদুষ্টতা ছিল। অনেক সাক্ষী মারাও গেছেন। দীর্ঘকাল ধরে একটা মামলার বিচার চলতে পারে না।’ বিলম্বিত বিচারে ন্যায়বিচার অস্বীকৃত- এটা একটা প্রবাদ। তবু সান্ত্বনা হচ্ছে, অবশেষে বিচারটা হলো। মৃতের আত্মার শান্তি হোক বা না হোক, তার স্বজনদের মনের কষ্ট, হৃদয়ের ভার কিছুটা হলেও কমবে। যদিও সোহেল-দিতির মেয়ে লামিয়া চৌধুরী রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমি যা হারিয়েছি, যে জীবন থেকে বঞ্চিত হয়েছি- কোনো কিছুই তা আমাকে ফিরিয়ে দিতে পারবে না। এরকম প্রেক্ষাপটে আমাদের প্রত্যাশা, গতিশীল বিচার ব্যবস্থা। একজন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক হত্যাকাণ্ডের বিচারে যদি ২৫ বছর লাগে তা হতাশাজনক। এ অবস্থা থেকে বিচার ব্যবস্থাকে বের করে একে গতিশীল করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এটা সময়ের ব্যাপার। তবে উদ্বেগজনক হচ্ছে, সোহেল হত্যা মামলার রায়ে বিচারকের পর্যবেক্ষণ। যেখানে তিনি বলেছেন, সাক্ষীরা গা বাঁচিয়ে, পক্ষপাতদুষ্ট সাক্ষ্য দিয়েছেন। যাতে আসামিদের অনেকেরই অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন। অনুমান করা যায় যে, নিরাপত্তার অভাবে, হুমকির মুখে অথবা অর্থের বিনিময়ে সাক্ষীরা প্রকৃত সত্যের বর্ণনা থেকে বিরত থেকেছেন। পাশ কাটিয়ে গেছেন। কিংবা শিখিয়ে দেওয়া মিথ্যা উপস্থাপন করেছেন আদালতে। যার ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে গেছে অপরাধ জগতের রাঘব বোয়াল। এখানে নিহতের স্বজন-পরিবার, অসংখ্য ভক্ত, সচেতন সুশীল সমাজ, সবাই যেন অসহায়। এ থেকে উত্তরণে প্রয়োজন সামাজিক শৃঙ্খলা, সুশাসন, দ্রুত বিচার এবং সব ক্ষেত্রে সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা। অপরাধীরা অর্থবিত্ত প্রতিপত্তির অধিকারী হয়ে সমাজে ছড়ি ঘোরাবে- তা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর