বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

এবার ভর্তিযুদ্ধ

ভালো কলেজই সাফল্যের শেষ ঠিকানা নয়

ভালো কলেজে ভর্তির চেষ্টা এবং পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে না পারার হতাশা নতুন কিছু নয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ গরিবের এই দেশে শিক্ষা যেহেতু মূলত কিছু করে খাওয়ার যোগ্যতা অর্জনের জন্য- তাই ভালো কলেজে পড়ে, ভালো ফল করে, ভালো চাকরি পাওয়াই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের লক্ষ্য। সমস্যাটা এখানেই। এবার দেশে এসএসসি পাস করেছে প্রায় ১৭ লাখ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্থাৎ জিপিএ-৫ পেয়েছে প্রায় ২ লাখ। দেশের কলেজগুলোতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য আসন প্রায় ২৮ লাখ। তাহলে তো কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ভালো কলেজ দুই শর বেশি নয়। সেগুলোতে ভর্তিযোগ্য আসন সর্বোচ্চ এক লাখ। ফলে জিপিএ-৫ পেয়েও এক লাখ শিক্ষার্থী ওই ভালো কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ পাবে না। এ সংকটের নগদ কোনো সমাধান নেই। এক্ষেত্রে কতগুলো বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। এমপিওভুক্ত অর্থাৎ সরকারের দেওয়া সব সুবিধা পাওয়া কলেজগুলোকে মানোন্নয়ন করতে হবে। পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষকমণ্ডলীর সদিচ্ছা এবং অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় তা অসম্ভব কিছু নয়। মানোন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগ খুবই কার্যকর বলে বিবেচিত হবে। অন্যদিকে ভালো কলেজে না পড়লেই ভালো ফল করা যাবে না- এ ধারণাও ঠিক নয়। অজ পাড়াগাঁয়ের অখ্যাত কলেজে পড়ে, অবসরে বাবার সঙ্গে মাঠে কৃষিকাজ করেও অনেক শিক্ষার্থী তাক লাগানো ভালো ফল করেছে- এমন নজির অসংখ্য। ফলে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। মনে রাখতে হবে- রাজধানীর পাঁচটি কলেজই ভালো লেখাপড়ার শেষ ঠিকানা নয়। বর্তমান ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়েও কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে। শৈশব-কৈশোর উত্তীর্ণ যে সদ্য তরুণরা জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় পাস করে উচ্চমাধ্যমিকের অঙ্গনে পা দিতে যাচ্ছে- তাদের প্রতি আমাদের শুভ কামনা। স্কুলের ঘেরাটোপ থেকে কলেজের উন্মুক্ত পরিবেশ তাদের জন্য উন্নত মনমানসিকতা, শৃঙ্খলা, দায়িত্ববোধ ও উচ্চতর শিক্ষার ভিত্তি তৈরি করুক- সেটাই কামনা। কলেজ ভালো হলে ভালো, না হলে কি জীবন থেমে থাকবে? না। পুষ্পের মতো ফুটে উঠতে হবে প্রয়োজনে প্রতিকূল মাটিতেও। সেখানেই শিক্ষার্থীর মেধা ও সক্ষমতার পরিচয়। অন্যদিকে ভালো কলেজের সংখ্যা বাড়ানো, মন্দ কলেজকে ভালোয় উন্নীত হতে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দায়িত্ব। আশা করি, তারা প্রয়োজনীয় কর্মপন্থা গ্রহণ করবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর