শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

এভাবে আর কতকাল?

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

এভাবে আর কতকাল?

বাবা চলে গেছেন ২০০০ সালের ১৩ মে, মাকে হারিয়েছি ২০০৪ সালের ৪ এপ্রিল। মা-বাবা হারালে সন্তান এতিম হয়। আমরা এতিম হয়েছিলাম মা-বাবা থাকতেই ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যার মধ্য দিয়ে। বর্তমান অবক্ষয়ের জমানায় আমাদের কষ্ট অনেকেই বোঝে না, বুঝতে চায়ও না। বিশেষ করে যাদের অর্থবিত্ত ক্ষমতা তারা প্রায় সবাই হাওয়ায় ভাসে। তাই তাদের বাস্তবতার সঙ্গে অনেকেরই মিল নেই। জীবন একটা বহতা নদীর মতো। উত্তরের পানি দক্ষিণে যায়, হিমালয়ের দিক থেকে আমাদের বুক চিরে সমুদ্রে গিয়ে মিশে। প্রতিটি জীবনও তেমনি, জন্মিলে মরিতে হবে অমর কোথা কে কবে? কিন্তু বুঝতেই পারলাম না, কীভাবে দিন চলে গেল। আওয়ামী লীগ নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন হাসিনা প্রচন্ড দুর্যোগ দুর্বিপাকে ’৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরেছিলেন। সেই ১৭ মে প্রায় ১৫ বছর পর গ্রামের বাড়ি ছাতিহাটিতে রাত কাটিয়েছি। বিদ্যুৎ আসে কম, যায় বেশি। প্রচন্ড গরম এক অস্বস্তিকর পরিবেশ। তারপরও বহুদিন পর গ্রামের বাড়িতে ভালো লেগেছে। বাবা যেদিন মারা যান বাবাকে কবরে রেখে ছাতিহাটি ছাড়তে ইচ্ছে করেনি। অনেকটা সময় কবরের পাশে মসজিদেই পড়েছিলাম। রাতে ছিলাম বড় চাচা আবদুল বারী সিদ্দিকীর ঘরে। ঘর বলা যায় না। ক্ষেতমজুর, রিকশাওয়ালাদেরও ঘর-দুয়ার-বিছানাপত্র আমাদের বাড়ির চেয়ে ভালো। কারণ আমাদের বাড়িতে কেউ থাকে না। ’৫০-৬০ সালের দিকে বাড়ি ছিল ঝকঝকে তকতকে। ২৫-৩০ জনের বাস। তিন উঠানের বাড়ি-বাইরে, মধ্যে এবং পেছনে ধান উড়ানোর উঠান। এখন সব জঙ্গল হয়ে আছে। এরপর বাবার কুলখানির দিনও ছিলাম। লোকজন ছিল শত শত। তখন এনায়েত করিম, সবুর খান, মিলন সরকার, হাবিবুর রহমান বীরপ্রতীক, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট হাসান আলী রেজা, আজাদ, মুরাদ, মিরন শত শত নেতা-কর্মী ছিল। এখন তেমন নেই। এরপর মা যখন মারা যান, মাকে কবর দিয়ে একেবারে ভেঙে পড়েছিলাম। দুনিয়ার কোনো কিছুই যে কখনো-সখনো একেবারেই আকর্ষণ করে না সেটা মায়ের মৃত্যুর পর উপলব্ধি করেছিলাম। পুরো জগৎ আমার কাছে অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। কুশি আমাদের বুকে আসায় অন্ধকার দূর হয়ে জগৎ সংসার আবার আলোকিত হয়েছে। যত কষ্টই হোক, আনন্দ আমাদের পিছু ছাড়েনি। পারিবারিক জীবনে এক মহানন্দে এখন আমাদের জীবন কাটছে। তাই গত ১৭ তারিখ গ্রামের বাড়িতে বড় ভালো লেগেছে। ৮-১০ বছর আগে ছোট বোন শুশু দুই কামরার একটা টিনের ঘর করেছে। সেই ঘরেই ছিলাম। দেখাশোনা যারা করে তাদের বোধ-বিবেচনা নেই। তেমন পয়ঃপরিষ্কার রাখা হয়নি। তবু আমি যাওয়ায় অনেকেই ঘরটিকে ঝকঝকে তকতকে করার চেষ্টা করেছে। বিদ্যুৎই ছিল প্রধান সমস্যা। প্রায় ২৫ বছর বাইরে বাইরে ঘোরাফেরা করায় আলাদা বিদ্যুতের জেনারেটর আছে। কিন্তু সেদিন সে জেনারেটরও ভালো কাজ করেনি। তবে হু হু করা বাতাসে এক সময় ভালোই ঘুম হয়েছিল। ৫০-৬০ গজের মধ্যে আমাদের মসজিদ। মুয়াজ্জিনের আজানে ঘুম ভেঙেছিল। অজু করে নামাজ পড়ে আবার শুয়েছিলাম। ৬টার পর আর বিছানায় থাকতে ইচ্ছে করেনি। বাইরে বসেছিলাম। ১৭ তারিখ যেমন প্রচন্ড তাপ ছিল ১৮ তারিখ তেমন ছিল না। হু হু করা ঝড়ো হাওয়া উড়িয়ে নিতে চাচ্ছিল। বাড়ির দক্ষিণ আঙিনায় যেখানে বসেছিলাম সেখানেই আগে আমাদের বাংলো ঘর ছিল। পথিক মুসাফির এলে তারা সেই ঘরে উঠতেন, রাত কাটাতেন। আমিও ছেলেবেলায় প্রায় তিন-চার বছর কারারি ঘরে রাত কাটিয়েছি। দক্ষিণে জানালা, সোজাসুজি উত্তরেও ছিল। জানালা খুলে শুলে এমন চমৎকার বাতাস আসতো যার কোনো তুলনা হয় না। বাংলো ঘরের সামনেই ছিল পুকুর, যেটা এখনো আছে। এক বিকালে খেলা করতে গিয়ে ছোট বোন রহিমাকে ধাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দিয়েছিলাম। সেখানে ছিল এক মস্ত বড় খাসি। রহিমা তার সামনে পড়লে এমনভাবে সে শিং দিয়ে গুঁতো দিয়েছিল ওর পুরো গাল এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল। সে ক্ষতচিহ্ন আজও রহিমা বয়ে বেড়ায়। আর আমার সমস্ত হৃদয়ে এক অপরাধবোধের পাহাড় মাথা উঁচু করে থাকে। আমি যখন দক্ষিণমুখী বসেছিলাম তেমন লোকজন ছিল না। একজন, দুজন আসছিল, যাচ্ছিল। বাড়িতে যারা কাজ করে তারা ধান কাটতে মাঠে যাচ্ছিল। আমি বসেছিলাম আর ভাবছিলাম দুই-আড়াই বছর বয়সে এই দক্ষিণের পালানের পানিতে পড়ে গিয়েছিলাম। যেখানে অনেকগুলো হাঁস ডুবোডুবি করছিল। ভিতর বাড়ি থেকে মা আমার কিচিরমিচির না শুনে বাইরে এসে দেখেন আমি পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছি। ঝাঁপিয়ে পড়ে আমাকে তুলে এনেছিলেন। মাথায় তুলে অনেক নাচানাচি করে পেটের পানি বের করে আমাকে বাঁচানো হয়েছিল।

বাতাস বইছিল আর ছেলেবেলার কথা মনে হচ্ছিল। বাড়িতে অনেকগুলো তাল গাছ ছিল। আষাঢ় মাসে তাল পড়ত। রাতের ঘুম ভেঙে যেত। ছুটে গিয়ে তাল কুড়াতাম। পশ্চিমপাড়ার সেলিম, সেলিমের মেয়ে নুরজাহান রুটি এনেছিল। খুবই ভালো সুস্বাদু। তার আগে কে যেন আমার জন্য একটি মিষ্টিআলু চমৎকার করে পুড়ে দিয়েছিল। এ বছর প্রথম সেই মিষ্টিআলু মুখে দেওয়া। অভাবনীয় লেগেছে। এরপর গিয়েছিলাম সংগ্রামপুর, সিলিমপুর। সেখানে সোনার বাংলা মৎস্য ও কৃষি খামার। গত দুই মাস পুকুর সংস্কার করা হচ্ছে। কিছু গাছ লাগানো হয়েছে। আম গাছগুলোতে থরে থরে আম ধরে আছে দেখে বুক জুড়িয়ে যায়। গত মঙ্গলবার এক পুকুরে মাছ ছাড়া হয়েছে। আর ৪-৫ দিনের মধ্যে সব কটাতেই ছাড়া হবে। কিন্তু পানির প্রচন্ড অভাব। ছোট ছোট যে কটি পাম্প আছে তাতে কোনোমতেই হয়ে উঠছে না। এখন আল্লাহর দয়ার ওপরই ভরসা। সেখান থেকে সখীপুর বড়চওনা, জোড়দিঘি, সাগরদিঘি হয়ে আষারিয়াচালায় বাদশাদের বাড়ি গিয়েছিলাম। আষারিয়াচালা বটতলা প্রাইমারি স্কুলের পাশে বাদশাদের চমৎকার হাটিবাড়ি। এমনিতেই গত ৪০-৫০ বছর কখনো হুমড়ি খেয়ে খাবারের ওপর পড়ি না। আর ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর মাংস তো একেবারেই খাই না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ২৮ বছর মাংস স্পর্শও করিনি। এখন কোরবানির মাংস ২-১ বার মুখে তুলি। তাই সব সময় সাধারণ খাবার খাই। বাদশাদের বাড়িতে এক অসাধারণ খাবার খেয়েছি। বিশেষ করে ডাল। গত ১০-১৫ বছর সব সময়ই ডাল মুখে দিই। তবে লেবু ছাড়া ডাল খেলে আমার সহ্য হয় না। বাদশাদের বাড়িতে সেই ডালই সব থেকে ভালো লেগেছে। ডাল ভালো হয়েছে বলার সঙ্গে সঙ্গে এক বাবুর্চি বলে উঠল, আমি রেঁধেছি। অন্য তরিতরকারি বাড়ির মেয়েরা রান্না করলেও মাংস, পোলাও এবং ডাল সে রান্না করেছে। আমি পোলাও খাই না, সাদা ভাত খাই। শুধু সে ডাল রান্না করেছে বলে বিশেষণ জুড়ে দিয়ে বলল, আমি টুঙ্গিপাড়ায় আপনাদের জন্য খাবার রেঁধেছি। মিলন সরকার ছিলেন, সবুর খান ছিলেন, মিরন ছিলেন। তার কথায় আমি অবাক হয়েছি, ভালো লেগেছে। অনেক স্থানীয় লোক এসেছিলেন। সবাই জানে জাহাজমারা কমান্ডার বীরবিক্রম হাবিবের ছেলে আতিকের উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর চশমা মার্কায় ভোট চাইতে গেছি। মনে হলো জোড়দিঘি, সাগরদিঘি, গুপ্ত বিন্দাবন, শহর গোবিনপুর, কাজলা কামালপুর, আষারিয়াচালা, ধলাপাড়া, বিশেষ করে আমার যেখানে মুক্তিযুদ্ধে গুলি লেগেছিল সেই মাকরাইয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধার ছেলে হিসেবে আতিক বেশ ভালো ভোট পাবে। তার এলাকা গলগন্ডা ও অন্যান্য ইউনিয়নে খুব একটা খারাপ হবে তেমন ভাবার কোনো কারণ নেই। আমার মনে হয়েছে আতিক জয়ী হবে। সন্ধ্যায় ঘাটাইল কলেজ মোড়ে রাস্তার ওপর একটি নির্বাচনি সভা ছিল। সম্মানজনক লোকজন হয়েছিল। রাস্তাঘাট বন্ধ করে সভা-সমাবেশ আমার পছন্দ না। তবু সমাবেশটি বেশ ভালো লেগেছে। বারবার মনে হয়েছে আমাদের নেতা শামসুর রহমান খান শাজাহানের কথা, মনে হয়েছে মোয়াজ্জেম হোসেন খানের কথা, বিশেষ করে মনে পড়েছিল টাঙ্গাইলের বর্তমান পিপি এস আকবর খানের বাবা মাদবর খাঁর কথা। মানুষ কতটা ভালো হতে পারে, মানুষ মানুষকে কতটা ভালোবাসতে পারে ঘাটাইলের মাদবর খাঁ তার প্রমাণ। মাদবর খাঁ আমার থেকে ২৩-২৪ বছরের বড়। দেখা হলেই পায়ে হাত দিয়ে সালাম করত। আমি বিব্রত হতাম। এ নিয়ে কথা বললে দু-একবার বলেছে, ‘আমি আমার বাবাকে সালাম করি, আপনার কী?’ কী বলি তাকে! বাবার চেয়ে ছেলে ২৩-২৪ বছরের ছোট। তবু আমি তার বাবা। হৃদয় কেড়ে নিত তার ব্যবহার। ১৫ আগস্ট ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ প্রতিরোধে আমি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে একদিন কী করে যেন তিনি খবর পান আমাকে বঙ্গবন্ধুর খুনিরা, বিশেষ করে জিয়া সরকারের লোকেরা গ্রেফতার করেছে। তিনি তখন চকে কাজকর্ম দেখছিলেন। সেখান থেকে পাগলের মতো ছুটে এসে তার চারিতে বাঁধা পালের সব থেকে বড় বড় দুটি ষাঁড় ছেড়ে দিয়েছিলেন আর আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে চিৎকার করছিলেন, ‘হে আল্লাহ, পাক পরোয়ার দিগার, আমি আমার সামর্থ্যমতো ষাঁড় দুইটা ছেড়ে দিলাম, মুক্ত করে দিলাম। তুমি আমার বাবা কাদের সিদ্দিকীকে সব বিপদ-আপদ থেকে মুক্ত করে দেও।’ এই হলো তখনকার মানুষের আবেগ অনুভূতি।

বহুদিন পর ঘাটাইলের এমপি রানার বাড়ি গিয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওরা ছিল খুবই ছোট। শাজাহান ভাই আমাদের নেতা। শাজাহান ভাইয়ের ছোট ভাই আতোয়ার রহমান খানের সন্তান রানারা। আগাগোড়াই আমি বাচ্চাদের ভালোবাসি, বাচ্চারাও আমাকে ভীষণ ভালোবাসে। আমি গেলে মিষ্টি খাওয়ার জন্য পাগল হয়ে যেত। চাচার পকেট থেকে মিষ্টির টাকা নিত। বড় ভালো লাগত। আমি যখন দেশে আসি আজাদ-মুরাদের সঙ্গে ওরা উন্মাদের মতো কাজ করেছে। ১৮ ডিসেম্বর ’৯০ টুঙ্গিপাড়া গিয়েছিলাম। প্রায় তিন-চার শ নেতা-কর্মীর মধ্যে মিরন, কিসলু, ফারুক, রানা-বাপ্পীরা সবাই ছিল। দিন যায় স্বার্থের দ্বন্দ্বে কে কোথায় ছিটকে পড়ে কিছুই বলা যায় না। ২৫-৩০ বছর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। খাওয়া-দাওয়ায় তাই খুব একটা বেপরোয়া না। কিন্তু তারপরও জোর করে এটা ওটা খাইয়েছে। আসার সময় একগাদা মিষ্টি, নানা ধরনের খাবার গাড়িতে গুঁজে দিয়েছে। খুব ভালো লেগেছে। রানা, রানার বউ, মেয়ে ওদের আল্লাহ ভালো রাখুন, হেফাজত করুন।

দেশে নির্বাচনি ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে খানখান হয়ে গেছে। মানুষেরও তেমন ভোট দেওয়ার আগ্রহ নেই। সখিপুরে আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন সজীব দলীয় প্রতীক গামছা নিয়ে নির্বাচন করছে। আর আজ ২১ মে কালিহাতীতে আনারস মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছে ছোট ভাই আজাদ সিদ্দিকী। বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী এমপি হওয়ার কারণে নির্বাচনি নীতিমালার জন্য বাইরে কিছু বলতে পারেননি, প্রচারেও যেতে পারেননি, যানওনি। আমি এদিক-ওদিক গেছি। ১৭ তারিখ গিয়েছিলাম কস্তুরিপাড়া নির্বাচনি সভায়। সেখানে সেলিম এবং চেয়ারম্যান সোহরাবকে একত্রে দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে। পারকীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান তোতা, পাইকরার চেয়ারম্যান আজাদ সভাতে ছিল। ওর আগে গিয়েছিলাম বেরী পটল, নারান্দিয়া, মাইস্তা, সিঙ্গুরিয়া, বানারপাড়া। নানা জায়গায় ঘোরাঘুরি করে বেশ ভালো লেগেছে। সেই সঙ্গে শুনলাম, এলেঙ্গা, সহদেবপুর, দশকিয়া এই ইউনিয়নগুলোতে নাকি মোল্লারা সব ভোট নিয়ে নেবে। নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত যারা আছেন তাদের বলেছি, গাওজুরি ভালো না। এমনিতেই ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। সে আগ্রহ বাড়াতে হলে, ভোটের সম্মান রক্ষা করতে হলে ভোটে যত জালিয়াতি কম হবে ততই মঙ্গল এবং আমার প্রিয় বোন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যও মঙ্গল হবে। 

বলতে চাচ্ছিলাম না, কিন্তু না বলেও পারি না। চোখের সামনে যখন যেটা আসে সেটা না বলে পারি না। গত ১৯ মার্চ বাংলাদেশের অতিরিক্ত গেজেটে বলা হয়েছে- (৭) বিধি ১৬-এর উপ-বিধি (১) এ উল্লিখিত ‘চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনের ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা’ শব্দগুলো, সংখ্যা, কমা, চিহ্ন ও বন্ধনীর পরিবর্তে ‘চেয়ারম্যান নির্বাচনের ক্ষেত্রে এক লাখ টাকা এবং ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৭৫ হাজার টাকা’ শব্দগুলো, সংখ্যাগুলো ও বন্ধনীগুলো প্রতিস্থাপিত হইবে।

একটি দেশে জাতীয় সংসদ হচ্ছে সর্বোচ্চ পরিষদ। জাতীয় সংসদের মনোনয়নপত্র দাখিলের জামানত ২০ হাজার। সে ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ তারপর উপজেলা। সেই উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এক লাখ, ভাইস চেয়ারম্যান ৭৫ হাজার। একে তো মর্যাদার দিক থেকে হাস্যকর, অন্যদিকে বুঝতে হবে সাধারণ গরিবের রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণের সুযোগ-সুবিধা ধীরে ধীরে সীমিত হয়ে আসছে। সবই দেখছি টাকার খেলা। আমি অনেক কথা বলতে পারি না, বলতে চাই না। কিছু বললে সবই যায় আমার প্রিয় বোনের ওপর। হেমায়েতপুর তো ঢাকাতে নয়, যদিও আমার মোহাম্মদপুরের বাসার পাশেই মানসিক হাসপাতাল। এটা কী ধরনের কথা! জাতীয় সংসদ সদস্যদের জামানত ২০ হাজার আর তার থেকে তিন স্তর নিচে উপজেলার জামানত লাখ টাকা। এ এক বদ্ধ পাগলামি নয় কি? দেশকে এরকম পাগলাগারদে পরিণত করা উচিত না। জানি যাদের হাতে ক্ষমতা যাদের হাতে কাগজ-কলম তারা হয়তো আমার কথা শুনবে না, আমার এই চিন্তা-চৈতন্য তাদের স্পর্শ করবে না। কিন্তু যাদের জন্য আমার বলা তাদের স্পর্শ করলে তাদের চিন্তার খোরাক হলেই নিজেকে সার্থক মনে করব।

লেখক : রাজনীতিক

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর