শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

উপজেলা নির্বাচন

সম্পদের উৎস তদন্ত করা হোক

চার ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে আজ ১৫৬টি উপজেলায় চলছে ভোটাভুটি। এ নির্বাচনে ৭০ দশমিক ৫১ শতাংশ চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং ৬৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীই ব্যবসায়ী। প্রথম ধাপে এই হার ছিল যথাক্রমে ৭০ শতাংশ ও প্রায় ৬৭ শতাংশ। বাংলাদেশে চোখে পড়ার মতো উন্নতি হয়েছে গত দেড় দশকে। কমেছে দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থানকারী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা। তারপরও দেশের লাখ লাখ মানুষের অবস্থান এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে। তবে স্বীকার করতেই হবে এ দেশে রাতারাতি শত শত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া লোকের সংখ্যাও কম নয়। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা তাদের সম্পদের যে তালিকা দিয়েছেন তা চোখ কপালে ওঠার জন্য যথেষ্ট। বিশেষ করে চেয়ারম্যান পদে যারা অধিষ্ঠিত ছিলেন তাদের অনেকে আয়ের যে ফিরিস্তি দিয়েছেন তা ভিরমি খাওয়ার মতো। প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি জানিয়েছে, ১০ বছরে একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের আয় বেড়েছে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৩৩৬ শতাংশ, পাঁচ বছরে বৃদ্ধির এই হার সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৯০০ শতাংশ। অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৬৬৬ শতাংশ আর স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদ বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৯৬৮ শতাংশ। একজন সংসদ সদস্যের অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধির হার যেখানে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৬৫ শতাংশ, সেখানে একজন চেয়ারম্যানের অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধির হার সাড়ে ১১ হাজার শতাংশের বেশি। একমাত্র আলাদিনের চেরাগধারীদের পক্ষেই কোনো জনপ্রতিনিধির পক্ষে নিজেদের আয় এমন বাড়ানো সম্ভব। প্রার্থী প্রবরগণ হলফনামায় যে হিসাব দিয়েছেন তার ঠিক-বেঠিক নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। যেখানে ১ ভরি সোনার দাম লাখ টাকারও ওপরে সেখানে ২০-২৫ বছর আগের দামে দেখানোর ঐতিহ্য রয়েছে নির্বাচন প্রার্থীদের। দেশের রাজনীতি প্রকৃত রাজনীতিকদের বদলে অসৎ ব্যবসায়ী ও লুটেরা চক্রের হাতে চলে যাচ্ছে এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। আমরা আশা করব টিআইবি শুধু নয়, দুদকও নির্বাচন প্রার্থীদের হলফনামায় উল্লিখিত সম্পদের উৎস তদন্তে এগিয়ে আসবে।

সর্বশেষ খবর