মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সামাজিক অপরাধ

মূল্যবোধের অবক্ষয় ঠেকাতে হবে

মূল্যবোধের অবক্ষয় সামাজিক অপরাধের বিস্তার ঘটাচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে স্ত্রী ও সন্তানকে গলা কেটে হত্যার খবরটি বোধশক্তিসম্পন্ন যে কোনো মানুষের সংবেদনশীলতায় আঘাত হানার জন্য যথেষ্ট। স্বামীর দ্বারা সাবেক স্ত্রী হত্যা এবং স্ত্রীর হাতে স্বামী খুনের খবরও স্থান পেয়েছে শীর্ষ প্রতিবেদনে। সন্তানের কাছে বাবা পরম নির্ভরতার স্থান। স্ত্রীর কাছে স্বামী নিরাপত্তার অনুষঙ্গ। অথচ রবিবার বগুড়ায় পাষ- স্বামী পরিকল্পিতভাবে স্ত্রী ও এক বছর বয়সি ছেলেকে হোটেলে নিয়ে হত্যা করেছে। স্ত্রী ও ছেলের লাশের ওপরও প্রতিহিংসার উদাহরণ রেখেছে। একই দিন ঈশ্বরদীতে ইপিজেডের প্রধান ফটক দিয়ে শত শত শ্রমিক যখন কাজে যাচ্ছিলেন তখন এক নারী কর্মী নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার হন। তার ওপর ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাবেক স্বামী। নারী কর্মীটির অপরাধ, তিনি মাদকাসক্ত সাবেক স্বামীর সঙ্গে ঘর-সংসারের প্রস্তাবে রাজি হচ্ছিলেন না। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে রিনা নামের ওই মেয়েটি স্বামী মিলনকে তালাক দেন। পরে মাদক ছাড়ার শর্তে দুজন আবারও বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু স্বভাব না বদলানোয় রিনা নির্যাতন থেকে বাঁচতে স্বামী মিলনকে ছেড়ে চলে আসেন। তারপর থেকে চলছিল রিনাকে ফেরত নিতে মিলনের তৎপরতা। তাতে রাজি না হওয়ায় তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় প্রকাশ্যে। একই দিন গাইবান্ধার এক গৃহবধূকে হত্যার পর র‌্যাব নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে গ্রেফতার করেছে তিন আসামি। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পাপিয়া বেগম নামের ওই নারীকে হত্যা করা হয় গত ১৮ মে। একই দিন রাজধানীর ভাটারা থেকে স্ত্রীর হাতে খুন হওয়া জাপান প্রবাসী এক যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে স্ত্রী পারভীনকে ওই অ্যাপার্টমেন্ট থেকে একা বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে। পরিকল্পিতভাবে ঢাকায় এসে স্বামীকে হত্যা করে তিনি ফিরে গেছেন কানাডায়। সামাজিক অপরাধের সঙ্গে যেহেতু মূল্যবোধের অবক্ষয় জড়িত সেহেতু একের পর এক সমগোত্রীয় অপরাধে নির্বিকার থাকার উপায় নেই। অপরাধীদের বিচারের সম্মুখীন শুধু নয়, অবক্ষয় ঠেকাতেও সক্রিয় হতে হবে।

সর্বশেষ খবর