বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিশেষায়িত হাসপাতাল

যন্ত্রপাতি পড়ে আছে লোকবলের অভাবে

চিকিৎসার জন্য বিদেশমুখী প্রবণতা নিরুৎসাহিত করতে রাজধানীর শাহবাগে দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হাসপাতাল ‘শিব গড়তে গিয়ে বানর গড়ার বিড়ম্বনা সৃষ্টি করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নির্মিত এই হাসপাতাল উদ্বোধনের পৌনে দুই বছর পার হয়ে গেলেও লোকবলের অভাবে তা পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা যায়নি। হাসপাতালের জন্য শুধু যন্ত্রই কেনা হয়েছে ২৮৩ কোটি টাকার। এসব যন্ত্রপাতির মেয়াদ তিন বছর। তার ৯০ শতাংশ যন্ত্র অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে লোকবলের অভাবে। হাসপাতাল পরিচালনায় চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজন অন্তত ২ হাজার ৭০০ জন। এখন জনবল আছে ৩৮৪। সব শেষ নিয়োগে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও বিতর্কের কারণে জটিলতা তৈরি হয়েছে। যে কারণে ৮৬ শতাংশ কম জনবল দিয়ে চলছে এ হাসপাতাল। এ পর্যন্ত পাঁচ দফায় ১৬০ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশিক্ষণ নিলেও হাসপাতালে যুক্ত হয়েছেন মাত্র ৩২ জন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রশিক্ষণই বন্ধ করে দিয়েছে কোরিয়া। একই মানের আরও একটি হাসপাতাল তৈরি করে দিতে চায় বন্ধু দেশটি। তবে এ হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ সেবা চালু না করে আরেকটির কাজ শুরু সম্ভব নয়। নিয়োগ থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে ঘটেছে দুর্নীতির ঘটনা। হাসপাতালের ভিতরে ভাড়া দেওয়া ফার্মেসিটির নাম ‘হসপিটাল ফার্মেসি’। নাম দেখে মনে হবে এটি প্রকল্পের অংশ। কিন্তু বাস্তবতা হলো নামমাত্র দামে এটিসহ আরও একটি জায়গা ভাড়া দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে লুটেরারা কীভাবে আস্তানা গেড়েছে তার সাক্ষাৎ উদাহরণে পরিণত হয়েছে বিশেষায়িত হাসপাতালটি। এটি ঠিকমতো চালু হলে যারা চিকিৎসার জন্য মুম্বাই, চেন্নাই, সিঙ্গাপুর, ব্যাংককে ছোটেন তাদের একাংশ দেশে চিকিৎসা পেতে আগ্রহী হতেন। আরও একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল হলো বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা খাতে শত শত কোটি টাকা ব্যয় রোধ হতো। কিন্তু স্বাস্থ্য খাতের সীমাহীন অব্যবস্থাপনায় দেশেই মানসম্মত চিকিৎসার সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালটিতে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর