মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

দেশের সবাই আমরা এক পরিবার

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

দেশের সবাই আমরা এক পরিবার

বহুদিন পর কাউকে গালাগালহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জগৎখ্যাত অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বেতার ভাষণ শুনলাম। বড় ভালো লেগেছে। বিশেষ করে তিনি যখন বললেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ছাত্ররা আমাদের নিয়োগ দিয়েছেন, অনুমোদন করেছেন দেশবাসী। তারা যেদিন বলবেন আমরা সেদিনই চলে যাব।’ এক অভাবনীয় বক্তব্য। দেশ গঠনের জন্য, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটু স্বস্তির সময় চেয়েছেন। বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে সবাইকে আন্তরিক অনুরোধ জানিয়েছেন। সর্বোপরি বলেছেন, ‘দেশের সবাই আমরা এক পরিবার।’ এই সংকটের সময় এর চেয়ে বাস্তবসম্মত কথা আর কিছু হতে পারে না।

সেদিন শুক্রবার ২৩ আগস্ট সিডস্টোর হয়ে আবদুর রহমানের হোতাপাড়ায় টাইলসের দোকানে গিয়েছিলাম। এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা। সিডস্টোরে সখীপুরের রাস্তা থেকে ময়মনসিংহের রাস্তা ধরতে প্রায় ১ কিলোমিটার রং রোড দিয়ে এগিয়ে তবে ঢাকার পাশে আসতে হয়। রং রোডে এগোতে মন সায় দিচ্ছিল না। ময়মনসিংহের দিকে মোড় ঘুরতেই বন্যার্তদের ত্রাণের বাক্স হাতে অনেক ছেলেমেয়ে দাঁড়িয়েছিল। সামনে বাক্স পাততেই সহযোগিতা করেছিলাম। ১ কিলোমিটারের মতো ময়মনসিংহের দিকে গিয়ে ঘুরে আসতে আবার ত্রাণ সংগ্রহকারী, আবার সহযোগিতা। বড় ভালো লেগেছিল ছাত্র-ছাত্রী, যুবক-যুবতীর উদ্যম দেখে। আমারও যখন ২০-২৫ বছর বয়স ছিল তখন অমনটাই করেছি। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে একসময় যখন নির্বাসনে ছিলাম, উরিরচর প্লাবিত হলে আমরা প্রতিরোধ যোদ্ধারা কলকাতায় ত্রাণ সংগ্রহে বেরিয়েছিলাম। অসম্ভব সাড়া পেয়েছিলাম। এমনকি শতাধিক যুবক-যুবতী রক্ত বিক্রি করে ত্রাণ তহবিলে দিয়েছিল। সেখানে আমার রক্ত বেচার টাকাও ছিল। আমার বহুদিনের সহকর্মী ফরিদ ৪৫-৪৬ কেজি হওয়ায় রক্ত দিতে পারেনি। আর পারেনি গোপাল অধিকারী। ওরও বয়স আন্দাজে ওজন কম ছিল। সেদিন টাঙ্গাইলের বাসাতেও একদল ছাত্র-ছাত্রী এসেছিল। তারা ত্রাণকাজে কুমিল্লায় যাবে। নোয়াখালী, ফেনী, হবিগঞ্জ আরও যেখানে যেখানে যেতে পারে, যাবে। আনিসা, সুমি, চৈতী, মলি, মেঘলা, নিহাল, আজাদ, জাহাঙ্গীর- বাচ্চাগুলোকে খুবই ভালো লেগেছে। সময় পেরিয়ে গেলে আমরা অনেক কিছু ভুলে যাই। তেমন কিছু মনে রাখি না। বহুদিন পর মতিউর রহমানের মানবজমিনে বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারের জন্য ভীষণ পীড়াপীড়ি করছিল। তার সাংবাদিকরা এসেছিল। ৩ তারিখ মানবজমিনে সাক্ষাৎকারটি ছাপা হয়েছিল, ‘ছাত্র-যুবকরা মরে যায়নি। আন্দোলনে প্রমাণিত।’ ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাবেন- এটা কি কেউ ভেবেছিলেন? আমার কিন্তু ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকেই মনে হচ্ছিল সামনে এক মহা-দুর্দশা অপেক্ষা করছে। শেষ পর্যন্ত তাই হলো। একটা দেশে রাজনীতি থাকলে বিরোধী দল থাকবে, তাকে শত্রু ভাবা যায় না। কিন্তু কেন যেন নেত্রী শেখ হাসিনা সবকিছুতেই ষড়যন্ত্র দেখতেন। কোথাও কোনোখানে কখনো রাজনীতি দেখেননি। প্রতিপক্ষকে যে সম্মান দিতে হয়, সেটা তার কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। মাঝখান থেকে শোকের মাসে সারা দেশকে আরও শোকাহত করে গেলেন। বঙ্গবন্ধুর স্ট্যাচু ভাঙা, যেখানে-সেখানে রাসেল-জামাল-কামাল আরও কত স্ট্যাচু। অনেকবার বলেছি, দয়া করে সাবধানে পা ফেলবেন। কেউ কথা শোনে নাই। শেখ হাসিনা থাকতে কথা শোনার কারও কোনো প্রয়োজন ছিল না। সেদিন বঙ্গবন্ধুর বাড়ির পাশে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছেলে আমার গাড়ি ভেঙেছে। ২৫-২৬ বছরের পুরনো গাড়ি। যে গাড়িতে কোনো দিন ফুলের টোকা লাগেনি, কোনো গাড়ির বা অন্য কিছুর সঙ্গে কোনো ঘষাও লাগেনি। সেই গাড়ি ভেঙে চুরমার করেছে। আল্লাহর অসীম দয়া আমি কোথাও কোনো আঘাত পাইনি। ভাঙা কাচের টুকরা হাতের কয়েক জায়গায় কেটেছে। এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য কে দায়ী? কোথা থেকে কে বা কারা বিবৃতি দিয়ে বসে, তারা ৩২-এর বাড়ি দখল করবে? এরকম হঠকারিতা ভালো নয়। যাই হোক, একজন পোড় খাওয়া বিশ্ববিখ্যাত মানুষ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশ শান্ত হয়ে আসছে। অন্যদিকে ভেঙেপড়া পুলিশের মনোবল কিছুটা ফিরে আসতে শুরু করেছে। প্রশাসনেও গতি ফিরতে শুরু করেছে। সার্বিকভাবে দেশ মোটামুটি একটা অবস্থায় এসেছে বা আসছে। কিন্তু এর মধ্যেই মহা-বিপর্যয়কর বন্যা। এবার এত বৃষ্টি হয়েছে যেটা বলার মতো নয়।

চলে যাচ্ছে আমার জীবনের সব থেকে দুর্যোগের মাস। কষ্ট ও দুর্ভাগ্যের মাস। সেই কবে ’৭৫-এ গতিহারা হয়েছি আর দাঁড়াতে পারলাম না। ভাঙা মন, ভাঙা শরীর, সব ভাঙাই রয়ে গেল। কখনো আর তেমন জোড়া লাগল না। ’৭৫-এ শত্রু ছিলাম বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছিল তাদের, ’৯০-এ দেশে ফিরে জানপ্রাণ সঁপে সারা দেশ চষে বেড়িয়ে ক্ষমতায় এনে শত্রু হলাম শেখ হাসিনার। তিনি কখনো যোগ্যতার পরিচয় দেননি। খামখেয়ালি ছিল তার জীবনের শ্রেষ্ঠ অলংকার। তিনি সারা জীবন খামখেয়ালি করে গেছেন। শেষের দিকে খামখেয়ালি করে দেশের সর্বনাশ করে গেছেন। বিশেষ করে বারবার ভোট চুরি করে রাজনীতির প্রতি মানুষের একটা মারাত্মক অনীহা সৃষ্টি করেছেন। আমার মনে হয় না, কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এত অগণতান্ত্রিক কর্মকান্ড কেউ করেছে। গণতান্ত্রিক দেশে এত গণতন্ত্রহীনতা কতটা মানা যায়? সীমা অতিক্রম করে ফেলেছেন। তাই এমন করুণ পরিণতি। ন্যায় বলতে, নিয়ম বলতে, আইন বলতে কখনো কোনো কিছুর মূল্য দেওয়া হয়নি। এই সেদিন শামসুদ্দিন মানিক নামে এক বিচারপতি। তাও যে সে বিচারপতি নয়, হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি। ব্রিটিশ নাগরিক বিচারপতি হয় কী করে? এমন নিম্নস্তরের নিম্নমানের অখাদ্য ধরনের মানুষ শেখ হাসিনার প্রিয় পাত্র ভাবা যায়? শামসুদ্দিন মানিক একবারও যুদ্ধক্ষেত্রে না গিয়ে লন্ডনে থেকেই মুক্তিযোদ্ধা। এক মহা-প্রতারক। শামসুদ্দিন মানিক মুক্তিযোদ্ধা হলে লন্ডনে মুক্তিযুদ্ধের জন্য আন্দোলনরত আরও বেশ কয়েক হাজার লোকের মুক্তিযোদ্ধা হওয়া উচিত। কিন্তু তা হয়নি। শামসুদ্দিন মানিকের তখন যে অবস্থা এবং অবস্থান, পোস্টার লাগানোর যোগ্যতাও ছিল না। ’৯০ সালে আমি একবার তার লন্ডনের বাড়ি গিয়েছিলাম। তার ছটফটানি আমার একেবারেই ভালো লাগেনি। এমনিতেই আমার কাছে ছটফট করা মানুষ পছন্দের না। দুই-তিনবার সভা-সমাবেশে দেখা হয়েছে। কথাবার্তা একদম ভালো লাগেনি। একবার হঠাৎ শুনলাম কোনো টকশোতে এক মহিলাকে ‘রাজাকার ফাজাকার’ বলে চেয়ার ছেড়ে তেড়ে গিয়েছিলেন। এমনিতে মহিলা, তার ওপর লাখো মানুষ যে অনুষ্ঠান দেখছে, তার মধ্যে ক্ষিপ্ত হয়ে কাউকে মারতে যাওয়া- সে তো মানুষের মধ্যেই পড়ে না। অথচ সেই ছিল সরকারের এক মস্তবড় মুখপাত্র। কারও এ ধরনের মুখপাত্র থাকলে তার পতনের জন্য আর অন্য কাউকে লাগে না, লাগেওনি। ভদ্রলোক এই সেদিন সিলেটের কোনো সীমান্ত থেকে কলার পাতায় শুয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন। মানুষের যে একটা সামান্য মান-মর্যাদা থাকে, ভদ্রলোকের তাও নেই। আমি গামছা ব্যবহার করি, আমার দলীয় মার্কা গামছা। ছোটবেলায় গ্রামেগঞ্জে, হাটে-বাজারে দেখেছি কেউ অন্যায় করলে চুরি-চামারি করলে তার গলায় গামছা দিয়ে টেনেহিঁচড়ে বিচার করা হয়। শামসুদ্দিন মানিকের ব্যাপারটা অনেকটাই সেরকম। কেউ একজন একটা কিছু গলায় পেঁচিয়ে ধরে আছে। এই হলো বিচারপতি শামসুদ্দিন। দুঃখ রাখার জায়গা নেই।

গতকাল থেকে মেট্রোরেল আবার চালু হয়েছে। যারা মেট্রোতে যাতায়াত করতেন তারা অনেকটাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। মেট্রো যেদিন আক্রান্ত হয় তার দু-এক দিন পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গিয়েছিলেন ধ্বংসযজ্ঞ দেখতে। তিনি ফুঁপিয়ে কেঁদেছিলেন। অথচ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কত মানুষ মারা গেছে, কোনো জায়গায় তিনি কাঁদেননি। আমার কাছে খারাপ লেগেছে। কত দিন থেকে বলে আসছি, দেশে যে উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে সেটা এক টাকার ঘোড়াকে দশ টাকার দানা খাওয়ানোর মতো। মেট্রোরেলের দুইটা স্টেশন ভাঙচুরের পরই বলা হয়েছিল এটা ঠিক করতে এক-দুই বছর লাগবে, টাকা লাগবে ৫-৭’শ কোটি। কী তাজ্জব ব্যাপার! ২০ দিনও লাগেনি আবার চালু হয়ে গেছে। টাকা ৫-৭’শ কোটির জায়গায় ৩০-৪০ কোটির বেশি লাগবে না। এই ছিল শেখ হাসিনার আমলের উন্নয়ন, উন্নয়নের গতিধারা। এক টাকার ঘোড়াকে দশ টাকার দানা খাওয়ানো, হাজার টাকার কাজ দশ হাজার টাকায় করা। কিছু লোকের পকেট ভারী। এসব থেকে রক্ষার কোনো পথ এবং সুযোগ ছিল না। জাতিকে প্রতারিত করতে করতে এমন ক্ষোভ ও বিক্ষোভের সৃষ্টি করা হয়েছিল যে, মানুষ ফেটে পড়েছিল। যার ফল বহন করছে সাধারণ আওয়ামী লীগাররা। চোর চোট্টা ধড়িবাজ যারা টাকা-পয়সা কামিয়েছে, তাদের বস্তায় বস্তায় নষ্ট হলে কিছু যায় আসে না, অঢেল আছে নষ্ট হলে কত আর হবে। ছিটেফোঁটা যা থাকবে তাই চৌদ্দ পুরুষ বসে খেতে পারবে। মরণ হলো ভালোদের, যারা সত্যিকারে দেশের সেবা করতে চেয়েছে তাদের কষ্টের শেষ নেই। সেদিন দেখলাম ইসহাক আলী পান্না নামে এক অত্যন্ত নিষ্ঠাবান তরতাজা যুবক হঠাৎই মেঘালয়ের শিলংয়ের কাছে মারা গেছে। কেউ বলছে পা পিছলে খাদে পড়ে, কেউ বলছে গুলি লেগে, আবার কেউ কেউ বলছে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে। কোনটা সত্য কিছুই জানি না। কিন্তু ইসহাক আলী পান্নাকে ’৯২-’৯৩ সালে কোনো এক দিন বিয়ানীবাজারে পেয়েছিলাম। বিয়ানীবাজার কলেজের নবীনবরণ অথবা সমাবর্তনে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে গিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ-প্রতিবাদে ১৬ বছর নির্বাসনে কাটিয়ে কেবলই দেশে ফিরেছিলাম। তাই চাহিদা ছিল সর্বত্র। যেখানে যেতাম সেখানেই হাজার মানুষের ভিড়। নবীনবরণে ছাত্র-ছাত্রীদের ভীষণ ভালো লেগেছিল। ওর পরে ইসহাক আলী পান্না প্রায়ই আমার খোঁজখবর নিত। স্বাধীনতার আগে বড়রা আমাদের ছোটদের যেমন খোঁজখবর নিতেন, স্বাধীনতার পর আমিও অনেকের খোঁজখবর নিয়েছি, এখনো নেই। ইসহাক আলী পান্না ছিল আমার অনুরক্ত ভক্তদের মধ্যে প্রথম কাতারের। আমি আওয়ামী লীগ ছাড়লে ইসহাক আলী পান্নার যথেষ্ট অসুবিধা হয়। কারণ আওয়ামী লীগ খোলা চোখে দেখে না। তারা দুই চোখে দুই রকম দেখে। একটায় তেল আরেকটায় নুন। ইসহাক আলী পান্নাকে আরও বেশি করে কাছে পেয়েছিলাম ভোলার চরফ্যাশনে অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের আকস্মিক মৃত্যুতে এক উপনির্বাচনে। নেত্রী হাসিনার সঙ্গে সাগর লঞ্চে ভোলা গিয়েছিলাম। ’৬৯-এর গণ অভ্যুত্থানের মহানায়ক তোফায়েল আহমেদের ভোলার বাড়িতে খেয়ে চরফ্যাশনে গিয়েছিলাম। সেখানে ছিলাম প্রায় ১৬ দিন। সেকান্দার হাওলাদারের সাগর লঞ্চেই খুব সম্ভবত ফিরেছিলাম। সেই যাত্রায় চরফ্যাশন, মনপুরার এমন কোনো জায়গা ছিল না, যেখানে যাইনি এবং যেখানে রাত সেখানেই কাত মানে সেখানেই রাতযাপন করেছি। কোনো আপন-পর ভেবে দেখিনি, নিরাপত্তার কথা ভাবিনি। লোকজন বড় যত্ন করে থাকতে দিয়েছে, খেতে দিয়েছে। দু-একবার বিরোধী প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িতেও রাত কাটিয়েছি। তারা বেশুমার যত্ন করেছে। সেই কদিন ইসহাক আলী পান্না ছায়ার মতো পাশে পাশে কাছে কাছে ছিল। আমার পক্ষে যখন যা করা সম্ভব করেছি, টাকা-পয়সা দিয়েছি। তখন কারও চাহিদা খুব বেশি ছিল না। তাই আমাদের কোনো অসুবিধা হতো না। বিএনপির প্রার্থী ছিল শহীদ মালিতা, আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাফরউল্যাহ। বেশ বড়সড়ো মাছ ব্যবসায়ী। আওয়ামী লীগ সেই সময় থেকে পচতে শুরু করেছিল। কারণ সেই তখন থেকে আওয়ামী লীগ টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। আগে নৌকার ক্রয়মূল্য ছিল দেশপ্রেম-শ্রম-ঘাম-সততা আর সেই তখন থেকে শুরু হয়েছিল অর্থবিত্ত। নৌকা অর্থে বিক্রি হতো। অন্য প্রতীকও এখন অর্থে বিক্রি হয়। কিন্তু হুজুর মওলানা ভাসানীর নৌকা, বঙ্গবন্ধুর নৌকা অর্থে বিক্রি হতো না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে পদ-পদবি যেমন বিক্রি হতো, প্রতীকও বিক্রি হতো। যার পরিণতি এমন ভয়াবহ হয়েছে।

গত ১৬ আগস্ট শুক্রবার টুঙ্গিপাড়ায় পিতার কবরের পাশে জুমার নামাজ আদায় করতে চেয়েছিলাম। সম্ভব হয়নি। তাই আশা করি, ৩০ আগস্ট টুঙ্গিপাড়ায় জুমার নামাজ আদায় করে পিতার কবরে ফাতেহা পাঠ করব। জানি না আর কত দিন বা কবার পিতার কবরে যেতে পারব। কিন্তু যতক্ষণ বেঁচে আছি, ততক্ষণ তাঁকে বুকে লালন করে, ধারণ করে দেশের মানুষের সেবায় বেঁচে থাকব বা থাকতে চাই। পরম করুণাময় দয়ালু আল্লাহ আমাকে সেই সুযোগটুকু দিলেই হলো।

লেখক : রাজনীতিক

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর