শিরোনাম
সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

চলচ্চিত্রের আরেকটি দুর্যোগের বছর

মুক্তি-৬২, ব্যবসা সফল-২, গড় ব্যবসা-৮

মানহীন গল্প ♦ নকল  ♦ পাইরেসি ♦ প্রেক্ষাগৃহের বাজে পরিবেশ ♦ দক্ষ নির্মাতার অভাব

নব্বই দশকের শেষ ভাগ থেকেই চলচ্চিত্রে খরা চলছে। মানসম্মত চলচ্চিত্র নেই, সিনেমা হল দর্শকশূন্য, চলচ্চিত্রের ব্যবসা মন্দ, চলচ্চিত্র নির্মাণ হ্রাস ইত্যাদি। এসব সমস্যা যেন কোনোভাবেই কাটছে না। এ বছরের চলচ্চিত্রের ব্যবসায়িক চিত্র এই দুর্যোগকে আবারও প্রকট করে তুলেছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ছবি নির্মাণ যেমন কমেছে তেমনি ব্যবসায়িক সফলতাও হ্রাস পেয়েছে। গত বছর ছবি মুক্তি পেয়েছিল ৭৫টি। আর ব্যবসায়িক সাফল্য পায় প্রায় একডজন চলচ্চিত্র। এ বছর ছবি মুক্তি পেয়েছে ৬২টি। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও প্রদর্শক সমিতির মতে এর মধ্যে ভালো ব্যবসা করেছে মাত্র দুটি। এগুলো হলো— ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ ও ‘লাভ ম্যারেজ’। আর গড় ব্যবসা এবং পুঁজি ঘরে তুলতে পেরেছে ৮টি ছবি [এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত]। এসব হচ্ছে— রোমিও বনাম জুলিয়েট, এইতো প্রেম, অগ্নি টু, আরও ভালোবাসবো তোমায়, আশিকী, রাজাবাবু, মহুয়া সুন্দরী এবং ব্ল্যাক। কেন এই অবস্থা এবং উত্তরণের পথ নিয়ে বলেছেন কয়েকজন চলচ্চিত্রকার। তাদের মতামত তুলে ধরেছেন— আলাউদ্দীন মাজিদ

রাজ্জাক

ভালো গল্প ও নির্মাণের অভাবে দর্শক দীর্ঘদিন ধরে সিনেমা হলে যাচ্ছে না। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চলচ্চিত্রকারদের অনৈক্য। ভালো কাজ করতে গেলে ঐক্যের বিকল্প নেই। কারণ চলচ্চিত্র হচ্ছে একটি টিম ওয়ার্ক। তাছাড়া নকল ও পাইরেসি তো রয়েছেই। আর যারা অভিনয়ে আসছে তারা অল্প পরিশ্রমে অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। এতে এই শিল্প পড়েছে চরম অনিশ্চয়তায়।

ইফতেখার নওশাদ

সিনেমা হল চালানোর মতো যথেষ্ট ও মানসম্মত ছবি কোথায়? নির্মাতারা যদি পর্যাপ্ত ও দর্শক পছন্দের ছবি দিতে পারে তাহলে তো সিনেমা হল সংস্কার ও বন্ধ প্রতিরোধ স্বাভাবিকভাবেই হয়ে যাবে।

সুচন্দা

মানসম্মত গল্প ও নির্মাতা, প্রেক্ষাগৃহের বাজে পরিবেশ, নকল এবং পাইরেসি আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান চলচ্চিত্রকারদের ঐক্যবদ্ধভাবে করতে হবে, না হলে এ শিল্পকে রক্ষা করা যাবে না।

অনুপম হায়াৎ

প্রযুক্তির কারণে এখন মোবাইলেও ছবি দেখতে পাওয়া যায়। পাইরেসি তো রয়েছেই। একই সঙ্গে নকল প্রবণতা। উন্নত গল্প এবং চিত্রনাট্য কোথায়? সিনেমা হলে পরিবার নিয়ে যাওয়ার মতো পরিবেশ কি আছে? এসব প্রশ্নের সমাধান করতে না পারলে উত্তরণ কীভাবে সম্ভব হবে। যদি প্রোডাক্ট না থাকে তাহলে লোকসান গুনে কীভাবে সিনেমা হল টিকিয়ে রাখা সম্ভব?

আমজাদ হোসেন

জীবনঘনিষ্ঠ গল্প নিয়ে নির্মাণ নেই, পাইরেসি, সিনেমা হলের নিম্ন পরিবেশ, নকল এসব সমস্যার কারণে আমাদের চলচ্চিত্র আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। আমি নিজেও পাইরেসি সন্ত্রাসের শিকার। আমার সর্বশেষ ছবি ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ মুক্তির পরপরই পাইরেসি হলে আর্থিক লোকসানের মুখে পড়ি।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

আমাদের চারপাশে গল্পের উপকরণের অভাব নেই। তারপরেও কেন আমরা অনুকরণ করি। নিজেদের ঢংয়ে কেন গল্প বলতে পারি না। নিজেদের জীবনের ছবি পর্দায় তুলে ধরতে এত অনীহা কেন আমাদের। আগে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে।

সর্বশেষ খবর