শুরুতেই আপনাকে অভিনন্দন। এই অর্জনটিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
ধন্যবাদ। এটি বড় একটি আয়োজন। একইসঙ্গে খুব গুরুত্বপূর্ণও। তাই আমি আনন্দিত। আমি দাদাসাহেব ফালকে ফিল্ম ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের ধন্যবাদ জানাই, তারা আমাকে জুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে ভেবেছেন।
এর আগে ভারতের বাইরে কাউকে এ আসরের জুরি সদস্য করা হয়নি। আপনিই প্রথম। এটা জানতেন?আমি শুনেছি। এদিক থেকে চিন্তা করেও আমি খুব খুশি। বাংলাদেশি শিল্পী হিসেবে আরও বেশি খুশি।
বিচার প্রক্রিয়া কেমন হবে?
অন্যান্য অনুষ্ঠানের মতো তো আর এটার বিচার প্রক্রিয়া হবে না। পুরো প্রক্রিয়া বুঝতে পারব অনুষ্ঠানে যোগ দিলে। তবে এটুকু জানি, এবার এ পুরস্কারে নতুনদেরও সম্পৃক্ত করা হবে। আগে শুধু চলচ্চিত্রে অবদান রাখার জন্য প্রবীণ কীর্তিমান ব্যক্তিত্বদের পুরস্কার দেওয়া হতো। আসরটি অনেক প্রাচীন।
আপনি যুক্ত হবেন কবে?
সেটা ওরা জানাবে। আপাতত আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, আমি রাজি আছি কিনা জানতে চেয়েছে। আমি সম্মতি দিয়ে দিয়েছি। ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠান হবে। এর আগেই আমাদের কাজ শুরু করতে হবে। তারিখ চূড়ান্ত করে আয়োজকরা আমাকে জানাবে।
আপনি প্লেব্যাকে আগের মতো নিয়মিত নন। কেন?
গাওয়ার মতো ভালো গান তো লাগবে। ভালো গান হলে আমি সবসময়ই সাড়া দেই। এই যেমন কিছুদিন আগে আলী আকরামের সুর-সংগীতে ‘পাঙ্কু জামাই’ ছবির একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছি। তবে প্লেব্যাক না করলেও স্টেজ শো আগের থেকে একটু বেশি হচ্ছে। তবে বেছে বেছে। বিশেষ করে দেশের বাইরে শো বেশি হচ্ছে।
প্লেব্যাক নিয়ে মজার কোনো স্মৃতি আছে?
১৯৬৫ সাল। আমার বয়স ১২ বছর। লাহোর থেকে একজন মিউজিক ডিরেক্টর ও প্রডিউসার এলেন। তারা বড় পর্দায় ১০/১২ বছরের একটি বাচ্চা ছেলের কণ্ঠের গান চিত্রায়ণ করবেন। তখন রেডিও পাকিস্তানে আন্তঃস্কুল গান প্রতিযোগিতা প্রচার হয়।
রেডিও থেকে তাদের জানানো হয় বছর তিনেক আগে একটি মেয়ে প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়। ওকে নিয়ে ট্রাই করে দেখতে পারেন। ছবির নাম ‘জগনু’। গানের কথা ‘গুরিয়সি মুন্নি মেরি ভাইয়াকি পেয়ারি’। স্যাড গান। মাইক্রোফোনের সামনে গাইতে গাইতে আবেগে কেঁদে ফেলি। সেই কান্না আর থামেই না। পরে চকলেট দিয়ে আমার কান্না থামাতে হলো। ব্যাপারটা এখনো আনন্দ দেয়।
জীবনে পাওয়া সবচেয়ে বড় পুরস্কার কোনটি?
ছয় বছর বয়সে প্রথম স্টেজে গাই। নয় বছর বয়স, করাচিতে আছি। সেখানে আন্তঃস্কুল গানের প্রতিযোগিতা হয়। স্কুলের পক্ষ থেকে গেয়ে প্রথম পুরস্কার পাই। বড় অ্যারেঞ্জমেন্টের দিক থেকে এটি আমার কাছে প্রথম বড় মাপের পুরস্কার লাভ।
ভাবতেই মনটা খুশিতে ভরে যায় এমন ঘটনার কথা শুনতে চাই—
আমি গর্ববোধ করি যে, আমি বাংলাদেশি একজন শিল্পী। সব সময় বাংলাদেশকে দেশের বাইরে তুলে ধরার চেষ্টা করি। যেখানেই যাই, বলা হয় ‘রুনা লায়লা ফ্রম দ্য বাংলাদেশ’ অথবা ‘রুনা লায়লা অব দ্য বাংলাদেশ’। ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই গর্বের। ৫০টি বছর ধরে গেয়ে যাচ্ছি। পথটাকে খুব দীর্ঘ মনে হয় না কখনো। মনে হয়, এই তো সে দিনের কথা। সময় কত দ্রুত বয়ে যায়। তবুও আগামীর পানে তাকিয়ে রই...।