সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ : জাকির হোসেন রাজু

ধারার বিভাজন চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করেছে

বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তার নির্মিত ‘অনেক দামে কেনা’ ছবিটি। এ ছবি এবং অন্যান্য প্রসঙ্গে আজ তার ইন্টারভিউ—

শোবিজ প্রতিবেদক

ধারার বিভাজন চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করেছে

নির্মাতা হিসেবে আপনার সফলতার মূল মন্ত্র কী?

সফলতার মূলমন্ত্র একটিই। যথাযথ নির্মাণ। নির্মাণের সংজ্ঞা মেনে দর্শকের সামনে ছবি উপস্থাপন করতে পারলে কেন তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

 

গল্প ও দক্ষ নির্মাতা নেই, আপনি একমত?

গল্পের অভাব নেই। প্রত্যেক মানুষেরই চারপাশে গল্পের অজস্র  উপকরণ রয়েছে। কিন্তু তা তুলে ধরার মতো দক্ষতার অভাব রয়েছে।

 

গল্পের অভাব সত্যি আছে?

একটি বিশেষ শ্রেণি বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের সুনাম নষ্টে  চলচ্চিত্রকে একসময় বলতে শুরু করে মূলধারা, তারপর বাংলা সিনেমা, সবশেষে এফডিসি ফিল্ম। আর এফডিসি ফিল্ম মানেই নিম্ন রুচির সিনেমা বলে বোঝাতে শুরু করে। এতে স্বনামধন্য লেখকরা এ ধরনের ছবির জন্য গল্প লেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।

 

চলচ্চিত্রের নিম্নগামিতার জন্য দায়ী কে?

এর জন্য একশ্রেণির নির্মাতা, যারা নিজেদের শিক্ষিত ও মেধাবী বলে দাবি করেন তাদের দায়ী করব। তারা মূল ধারা আর বিকল্প ধারার তকমা এঁটে চলচ্চিত্রের মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছেন। সুধীজনদের কাছে বাণিজ্যিক ধারার ছবিকে মন্দভাবে পরিচিত করার অপচেষ্টায় ব্যস্ত। তাদের কথায় এগুলো কোনো ছবি নয়। এ বিভাজন চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করেছে।

 

চলচ্চিত্রের রুগ্ন অবস্থায় আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

আমি ব্যথিত, মর্মাহত। যখন চলচ্চিত্র নিয়ে পড়াশোনা আর গবেষণা করি তখন ইচ্ছা ছিল আর্ট ফিল্ম নির্মাণ করব। বাস্তবে দেখলাম ৯৫ ভাগ মানুষ বিনোদন পেতে বাণিজ্যিক ছবিই দেখতে চায়। সিদ্ধান্ত নিলাম আর্ট ফিল্ম নয়, বাণিজ্যিক ছবিই নির্মাণ করব। আজ সবার পছন্দের সেই বাণিজ্যিক ছবিকে বিভাজনের জাঁতাকলে ফেলে ধ্বংস করা হয়েছে। এর চেয়ে বড় কষ্টের ব্যাপার আর কী হতে পারে।

 

বড় মাপের প্রযোজনা সংস্থা কিংবা প্রযোজকের অভাব কেন?

একসময় ছবি প্রযোজনার লক্ষ্য ছিল শিল্প ও বাণিজ্যের সংমিশ্রণ। শিল্পই ছিল মুখ্য। আর এখন শুধুই বাণিজ্য। বাণিজ্যের নামে চলছে রুচি বিবর্জনের প্রতিযোগিতা। এতে ছবির ব্যবসায় চরম ধস নেমেছে।

 

অনেক দামে কেনা ছবিটি চার্লি চ্যাপলিনের সিটি লাইটস অবলম্বনে নির্মিত। এ গল্প কেন বেছে নেওয়া?

গল্পে নতুনত্ব খুঁজতে হয়। ‘সিটি লাইটস’ দেখার পর মনে হয়েছে এ গল্পটি দেশের মানুষের মেজাজ ও রুচির সঙ্গে যায়। নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নিলেই হবে। ফলাফলটাও বেশ ভালো। দর্শক আগ্রহভরে ছবিটি দেখছেন আর প্রশংসা করছেন।

 

যৌথ প্রযোজনার হিড়িক চলছে, এ জাতীয় ছবি নির্মাণে আপনাকে পাওয়া যাবে?

যৌথ প্রযোজনা বলতে বুঝি দুজনের দুটি পা একসঙ্গে বেঁধে দেওয়া। এ অবস্থায় স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটা কি সম্ভব? এ নিয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাই না।

সর্বশেষ খবর