রবিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঢাকার ছবিতে মাতোয়ারা কলকাতা

পান্থ আফজাল

ঢাকার ছবিতে মাতোয়ারা কলকাতা

প্রথমবারের মতো কলকাতায় শুরু হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব। কলকাতার নন্দন-২, ৩ এবং নজরুল তীর্থ-৩ প্রেক্ষাগৃহে এই উৎসবটি ৫ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। উৎসব চলবে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। বাংলাদেশের দর্শকনন্দিত কিছু চলচ্চিত্র এখানে প্রদর্শিত হচ্ছে। এখানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর পাশাপাশি নন্দন গ্যালারি-৪ এবং নজরুল তীর্থ আর্ট গ্যালারিতে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনীও হচ্ছে। গত শুক্রবার বিকাল ৪টায় নন্দন-২ প্রেক্ষাগৃহে এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও চলচ্চিত্র) মনজুরুর রহমান, পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়, দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান ও নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘চেতনার চিরন্তন উেসর অপর নাম চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র আমাদের আনন্দ দেয়, আবার চলচ্চিত্র আমাদের শিক্ষা দেয়। মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই বাংলাদেশে চলচ্চিত্রের পথ চলা শুরু। একদিকে যেমন মিছিলের প্রয়োজন অন্যদিকে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চেতনা জাগ্রত হওয়া প্রয়োজন। সেই সময় অনেক সিনেমা মুক্তিযুদ্ধকে উদ্বুদ্ধ করেছে। বিশ্বে হাজার হাজার ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষার অবস্থান ছয় নম্বরে। এই ভাষায় কথা বলে বিশ্বে ৩৫০ মিলিয়ন মানুষ। তবু আমরা অনেকটা পেছনের দিকে আছি। আমরা আমাদের সাহিত্য, শিল্প-সংস্কৃতি বিশ্বের কাছে সেভাবে মেলে ধরতে পারিনি। আমি দেখেছি বিশ্বে বাংলা শিল্প-সাহিত্য ও সিনেমার বড় বাজার আছে। এজন্য একযোগে কাজ করতে হবে দুই দেশকে।’ উৎসব প্রসঙ্গে নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘এ উৎসবে আমার দুটি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। একটি ‘অনিল বাগচীর একদিন’ আর অন্যটি ‘আমার বন্ধু রাশেদ’। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। চলচ্চিত্র নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম। তবে শুধু মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রই নয়, সব ধরনের চলচ্চিত্র নিয়ে উৎসবটি সাজানো হয়েছে। এতে শিশুতোষ চলচ্চিত্র যেমন আছে, অন্য বিষয়ের চলচ্চিত্রও আছে।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল দেশের ও কলকাতার জনপ্রিয় কিছু রঙিন মুখ। ছিলেন সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক, গার্গী রায় চৌধুরী, বাংলাদেশের অভিনেত্রী পূজা চেরী প্রমুখ। এই চলচ্চিত্র উৎসবে স্বল্পদৈর্ঘ্য ও পূর্ণদৈর্ঘ্য মিলিয়ে দেখানো হচ্ছে ২৫-৩০টি চলচ্চিত্র।

উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসেবে দেখানো হয় ২০১৫ সালের জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত ছবি রিয়াজুল রিজুর ‘বাপজানের বায়োস্কোপ’। চার দিন ধরে চলা এই উৎসবে নাসির উদ্দীন ইউসুফের ‘গেরিলা’, মোরশেদুল ইসলামের ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ ও ‘অনিল বাগচীর একদিন’, সৈকত নাসিরের ‘দেশা দ্য লিডার’, মানিক মানবিকের ‘শোভনের স্বাধীনতা’, দীপঙ্কর দীপনের ‘ঢাকা অ্যাটাক’, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘টেলিভিশন’, অমিতাভ রেজার ‘আয়নাবাজি’, মাসুদ পথিকের ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’, আবু শাহেদ ইমনের ‘জালালের গল্প’, নাদের চৌধুরীর ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’, শাহ আলম কিরণের ‘একাত্তরের মা জননী’, আশরাফ শিশিরের ‘গাড়িওয়ালা’, শবনম ফেরদৌসীর ‘জন্মসাথী’ এবং ডকুমেন্টারি ‘চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু’সহ একাধিক চলচ্চিত্র দেখানো হবে। চলচ্চিত্র উৎসবের পাশাপাশি এই চার দিনজুড়ে থাকবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনীও।  উল্লেখ্য, প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত এ উৎসব চলবে।

সর্বশেষ খবর