রবিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
পরমব্রত

নাড়ির টান দুই বাংলাকে এক করেছে

ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা-নির্মাতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। গতকাল থেকে তিনি ঢাকায় শুটিং করছেন জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘শনিবার বিকেল’ ছবিতে। এ ছবিতে অভিনয় ও অন্যান্য প্রসঙ্গে তার মুখোমুখি হয়েছেন —আলাউদ্দীন মাজিদ

নাড়ির টান দুই বাংলাকে এক করেছে

আবার ঢাকায় আপনাকে স্বাগতম, এপার বাংলার টানটা কি ভাষার নাকি ভালোবাসার?

ধন্যবাদ, আসলে আত্মিক মানে ভালোবাসার টানেই এপার বাংলায় বার বার ছুটে আসাটা অভ্যাস হয়ে গেছে। ভাষা আর নাড়ির টান কিন্তু দুই বাংলাকে এক করে রেখেছে। তাই দুই বাংলার মানুষ ভালোবাসার টানে বার বার দুই পাড়ে পারাপার করবে, এটিই হচ্ছে, এটিই হতে থাকবে।

 

শনিবার বিকেল। গল্প আর চরিত্র কেমন?

শনিবার বিকেল ছবির গল্পটি যে জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলছে তা একেবারেই সময়োপযোগী। এতে রিয়েলিটিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এমন একটি গল্পের সন্ধান পেয়ে এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার লোভ সামলাতে পারিনি। ছবিটিতে আমি পলাশ নামের একটি চরিত্র রূপায়ণ করছি। এ ছবিতে অভিনয় করতে পেরে সত্যি আমি গর্বিত। ছবির গল্প আর চরিত্র নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না। দর্শক ছবিটিতে সমকালীন বাস্তবতার দেখা পাবেন। উচ্ছ্বসিত হবেন। সেই অপেক্ষায় রইলাম।

 

চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে দুই বাংলার বন্ধন কেমন হওয়া দরকার?

যেহেতু দুই বাংলার মানুষ একই আশা, ভাষা আর ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ তাই চলচ্চিত্র বা সংস্কৃতির ক্ষেত্রে আমাদের যোগসূত্রটা সুদৃঢ় থাকা বাঞ্ছনীয়। এ ক্ষেত্রে কন্টেন্ট অবশ্যই বাংলার সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। দক্ষিণ ভারত বা অন্য কোনো গল্পের অনুকরণ বা ছায়া থাকা উচিত নয়।

কন্টেন্ট কেমন হওয়া দরকার?

এই যেমন পশ্চিমবঙ্গের সত্যজিৎ রায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এবং বাংলাদেশের হুমায়ূন আহমেদ ও তাঁর মতো জনপ্রিয় যেসব লেখক, নির্মাতা আছেন তাঁদের রচনা বা কর্ম হতে পারে ছবির কন্টেন্ট। তাহলে সেটি হবে বাংলার হৃদয়ের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাপ্রেমী মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য।

 

যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণে টানাপড়েন চলছে, কী বলবেন?

বিষয়টি হতে হবে সমবণ্টনভিত্তিক। এতে উভয়ের সমান অংশগ্রহণ দরকার। তাহলে আর কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। দুই বাংলার দরকার স্ব স্ব স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে যথাযথ একটি নীতিমালা তৈরি করা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করা। তাহলে আর কোনো প্রশ্ন উঠবে না।

 

দুই বাংলার মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া চলচ্চিত্র বা সংস্কৃতির ক্ষেত্রে কতটা অন্তরায়?

কাঁটাতারের বেড়া নিয়ে মন খারাপ না করে আত্মিক সম্পর্কটা জোরালো রাখতে পারলে এই কাঁটা আর মনে বিঁধবে না।

 

দুই বাংলার কোন বিষয়গুলো মনকে নাড়া দেয়?

পশ্চিমবঙ্গ আমার জন্মস্থান, ওখানকার আলো-বাতাসে বেড়ে উঠেছি। তা ছাড়া ওখানে  অসাম্প্রদায়িক একটি কালচার আছে। তাই নিজের জন্মস্থান নিয়ে আমি গর্বিত। অন্যদিকে ভাষার জন্য প্রাণ দেওয়া, সংস্কৃতির জন্য লড়াই করার ইতিহাস একমাত্র বাংলাদেশের রয়েছে। বিষয়টি ভাবলে পূর্ব বাংলাকে নিয়ে গর্বে বুকটা ভরে ওঠে।

 

বাংলা চলচ্চিত্রের আগামীর প্রত্যাশা কেমন?

আগামীতে আরও উন্নত চলচ্চিত্র হবে দুই বাংলায়।   এ ক্ষেত্রে পশ্চিম বাংলা যেমন ভূমিকা রাখছে তেমনি বাংলাদেশে বিশেষ করে জাজ মাল্টিমিডিয়া  প্রশংসনীয় অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে।

চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দুই বাংলার বন্ধনকে এক সুতায় গাঁথতে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আবদুল আজিজের নিরলস প্রচেষ্টা অনবদ্য। আর মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও এ ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।

এতে আগামীতে দুই বাংলায় আরও সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র নির্মাণ ও আদান-প্রদান হবে এ কথা নিশ্চিত করে বলতে পারি।

সর্বশেষ খবর