শনিবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

এলআরবির ২৭ বছরের কাণ্ডারি

আলী আফতাব

এলআরবির ২৭ বছরের কাণ্ডারি

বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যান্ডদল এলআরবি পার করেছে তাদের পথচলার ২৭ বছর। ২৮ বছরে পদার্পণ করেও দেশ-বিদেশের শ্রোতাদের মাতিয়ে চলেছে এলআরবি (লাভ রানস ব্লাইন্ড)। ১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যান্ডদল হিসেবে এলআরবি যাত্রা করলেও ১৯৯০ সাল থেকেই ধীরে ধীরে গড়ে উঠতে থাকে ব্যান্ডটি। দীর্ঘ এই ২৭ বছরের ভাঙা-গড়ার খেলায় কাণ্ডারির ভূমিকা পালন করছেন এলআরবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও লিড ভোকাল ও গিটারিস্ট আইয়ুব বাচ্চু। একক ক্যারিয়ারেও সফল তিনি। অনেক জনপ্রিয় গান রয়েছে তার একক কণ্ঠে। তবে কখনো একক ক্যারিয়ারকে ব্যান্ডের চেয়ে বড় করে দেখেননি এ মানুষটি। এ কারণেই তার নেতৃত্বে চলা এলআরবি ব্যান্ডটি এ প্রজন্মের ব্যান্ডগুলোর জন্য আদর্শও বটে। এখনো শ্রোতাদের ভালোবাসা নিয়ে স্টেজে, অ্যালবামে গান করে চলেছে এলআরবি। এতটা বছর আপনার হাত ধরে এলআরবি পাড়ি দিয়েছে সফলতার সঙ্গে। অনেক বাধা-বিপত্তি, সমস্যা তো ছিলই। কিন্তু তারপরও সব কিছু পেরিয়ে এ পর্যায়ে আসার অনুভূতিটা কেমন? আইয়ুব বাচ্চু বলেন, এ অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আজকে আমাদের এই সফলতার সমান ভাগিদার ১৬ কোটি মানুষ। যাদের ভালোবাসায় আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি। এ সময়টাতে অনেক আনন্দ, বেদনা, হাসি, কান্না, বাধা, সমস্যা কিংবা সফলতার প্রহর এসেছে। আছে অনেক ত্যাগ স্বীকারের গল্পও। ত্যাগ না থাকলে এতটা বছর একসঙ্গে পাড়ি দেওয়া সম্ভব হতো না। এ পর্যায়ে আসার গল্প আসলে দু-তিন দিনেও বলে শেষ করা যাবে না। তবে শ্রোতাদের ভালোবাসা নিয়ে আমরা এখানে এসেছি। তারাই আমাদের প্রধান শক্তি। শুরুতে নিশ্চয়ই অনেক সমস্যা হয়েছিল? আইয়ুব বাচ্চু বলেন, আমরা ১৯৯১ সালে শুরু করেছিলাম পথচলা। সে সময় অনেকে আমাদের পাগল বলত। কিন্তু এতটা বছর পথ পাড়ি দেওয়ার পর আজ প্রশ্ন জাগে আসলে আমরা পাগল ছিলাম, নাকি যারা আমাদের বলত তারা? কারণ এলআরবি সব সময় শ্রোতাদের ব্যান্ড। মিউজিশিয়ানদের আসলে কোনো খাদ্য দরকার হয় না। তাদের কোনো পাকস্থলি নেই। শ্রোতাদের ভালোবাসাই মিউজিশিয়ানদের ক্ষুধা মেটায়। শ্রোতাদের ভালোবাসাই আমাদের বাঁচার শক্তি। সুতরাং আমি অনুরোধ করব মিউজিশিয়ানদের তাদের যোগ্য সম্মানটা দিতে। মিউজিশিয়ানদের অবস্থা এখন কেমন বলে মনে হয় আপনার কাছে? আইয়ুব বাচ্চু বলেন, ব্যান্ড একটি সংসারের মতো। একটি সংসারে যেমন সুখ-দুঃখ থাকে, তেমননি একটি ব্যান্ডের মধ্যেও থাকে। এটি ব্যান্ডের মধ্যে সমস্যা থাকতেই পারে। কিন্তু আমরা তা বাইরে প্রকাশ করব কেন?’  তিনি আরও বলেন, ‘শীর্ষ ব্যান্ডগুলোর পাশাপাশি নতুন ব্যান্ডের প্রচার, প্রসারও দরকার। সুতরাং মিডিয়াসহ সবাইকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের দেশে অনেক তরুণ মেধাবী মিউজিশিয়ান রয়েছে। তাদের প্লাটফর্ম গড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।’ আমরা চাই এলআরবির ১০০ বছরপূর্তি করুক। আইয়ুব বাচ্চু বলেন, ২৮ বছরে পা দিয়েছি আমরা।

১০০ বছর বাঁচতে চাই না। কারণ যত বাঁচব তত সমস্যা আসবে। কারণ মানুষের যত বয়স বাড়ে সমস্যাও তত বাড়ে। সুতরাং, এ পর্যায়ে আমরা এসেছি, ব্যান্ড হিসেবে ২৮টি বছর পার করেছি। সব কৃতিত্বই শ্রোতাদের জন্য। শ্রোতাদের ভালোবাসার অক্সিজেন নিয়েই এলআরবি বাকি সময় পার করবে। আজ আমার ভক্ত ও শ্রোতাদের কাছে একটি অনুরোধ করতে চাই— ‘আপনারা আপনাদের বাবা-মাকে কোনো দিন বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাবেন না।’

সর্বশেষ খবর