শনিবার, ৯ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

কপিরাইট নিয়ে যত সমস্যা

কপিরাইট নিয়ে যত সমস্যা

কপিরাইট নিয়ে শিল্পী, সুরকার ও গীতিকারদের মধ্যে রয়েছে নানা মত। তারা মনে করেন প্রাপ্য সঠিকভাবে বুঝে পাচ্ছেন না। সম্প্রতি গীতিকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিন অভিযোগ আনেন আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে। তারপরের ঘটনা এখন অনেকেরই জানা। গানের কপিরাইট নিয়ে দ্বন্দ্ব ও সমস্যার সমাধান নিয়ে কথা বলেছেন গানের জগতের কিছু গুণী মানুষ। বিষয়টি গ্রন্থনা করেছেন- আলী আফতাব

 

গাজী মাজহারুল আনোয়ার

কপিরাইট নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে অনেক আগে থেকেই। আমার নিজেরও প্রশ্ন, আজ শিল্পীদের মধ্যে এই বিষয়টি নিয়ে যে কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে এর সমাধান কোথায়? আমাকে নিয়ে যদি বলতে চাই। আমি এখনো পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার গান করেছি। আমার এখনো ভাবতে হয়, কাল সকালটা কেমন যাবে? কেন আমাদের এই অনিশ্চিত জীবন? একজনের সম্পত্তি অন্যজন কেন  ভোগ করবে? আজ কেন শিল্পীদের চিকিৎসার জন্য অনুদানের প্রয়োজন হবে। শিল্পীরা কেন আজ এই অনৈতিক কাজ করবে? রাষ্ট্রীয়ভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমাদের অনেক দুর্ভাগ্য, যাদের যে কাজটি করা প্রয়োজন, তারা সে কাজটি করছে না। আমি মনে করি, যার যে কাজটি করা প্রয়োজন, সে যেন ওই কাজটি করে। তবেই সব সমস্যার সমাধান হবে।

 

সাবিনা ইয়াসমিন

আমরা নিজেরাই এখন হতাশায় নিমজ্জিত। কারণ আমরা শিল্পী বা সংগীতের সাধক ও আয়োজকরা নিজ নিজ প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত। যারা আমাদের সংগীত নিয়ে টাকার পাহাড় গড়েছে, তারাই আমাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এটি আমাদের শিল্পী সমাজের জন্য অনেক কষ্টের। আমি মনে করি একটি গানের জন্য যার যতখানি প্রাপ্য, তাকে ততখানি বুঝিয়ে দেওয়া হোক।

 

সৈয়দ আবদুল হাদী

টেকনোলজির কারণে কোনো কিছুই আটকে রাখা যাচ্ছে না। গান যদি বিনা পয়সায় কেউ পেয়ে যায়, তাহলে সেখান থেকে কেউই কোনো অর্থ পাবে না। কেউ কেউ মামলা-মোকদ্দমা করে মোবাইল রিং-টোনের কিছু প্রাপ্য আদায় করতে পেরেছে। কিন্তু এটি সমস্যার সমাধান নয়। আর এই সমাধানটা তারাই দিতে পারবে, যারা এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করে।

 

কুমার বিশ্বজিৎ

হিসাব করা শিল্পীর কাজ নয়। আর হিসাব করে শিল্পী নতুন কিছু তৈরি করতে পারে পারবে না। আজ শিল্পীদের মধ্যে কপিরাইট নিয়ে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে তা অনেক দুঃখজনক। আমি মনে করি, শিল্পীদের জানতে হবে কার কতখানি প্রাপ্য। আর যারা এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করে, তাদের কাজ হলো সেই প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়া। নীতি ও নৈতিকতা দিয়ে আমরা যদি আমাদের নিজ নিজ কাজগুলো করে থাকি, তবে আমাদের কোনো সেক্টরেই আর কোনো সমস্যা হবে না।

 

আইয়ুব বাচ্চু

আমি মনে করি এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের সিনিয়র শিল্পীদের একসঙ্গে হওয়া প্রয়োজন। আমাদের জানতে হবে গানের প্রকৃত মালিক কে? কি আছে এই কপিরাইট আইনে। কপিরাইট নিয়ে আমরা চিৎকার চেঁচামেচি করে আসছি শুধু। আমরা কি পারি না গীতিকার, সুরকার, শিল্পী গানের জগতের অন্য কলাকুশলীরা এক হতে। আর এই বিষয়টি পারিনি বলেই আমাদের আজ এই অবস্থা। কেউ কেউ না খেয়ে মরছে, আর  কেউ কেউ টাকার পাহাড় গড়ছে। আর ন্যায্য পাওনা চাইতে গেলেই অপরাধ। শিল্পী শিল্পীর মধ্যে এই দ্বন্দ্ব কখনো আমাদের কম্য নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর