শনিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আসমানীর গল্প ------

আলাউদ্দীন মাজিদ

আসমানীর গল্প ------

আসমানী ছবির দৃশ্যে বাপ্পী ও সুস্মী

‘আসমানীকে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও...’ না কবির কবিতার মতো আসমানীকে দেখতে এখন আর রসুলপুর গ্রামে যেতে হবে না। সিনেমা হলে গেলেই চলবে। বড় পর্দায় দেখা মিলবে আসমানীর। এমনটিই জানালেন চট্টগ্রামের সুশ্রী মেয়ে সুস্মী রহমান। ছোটবেলা থেকেই শোবিজ জগতের সঙ্গে তার সখ্য। যাত্রাটা গান দিয়ে শুরু হলেও এক সময় ঢাকায় এসে বিজ্ঞাপন, টিভি নাটক তারপর স্বপ্নের চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হন। ‘আসমানী’ ছবিটি নিয়ে বড় পর্দা আলোকিত করতে যাচ্ছেন সুস্মী। পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের কবিতা ‘আসমানী’ অবলম্বনে ছবিটি নির্মাণ করেছেন এম সাখাওয়াত। ২ নভেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে এটি। সুস্মী বলেন, বড় পর্দায় অভিনয়ের অনুভূতির কথা ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। আমার ধারণা সব শিল্পীরই স্বপ্ন থাকে বড় পর্দায় অভিনয়ের। প্রধান এই গণমাধ্যমের প্রতি আমারও প্রবল আগ্রহ ছিল। সাখাওয়াত ভাই [ছবির পরিচালক] আমার সেই স্বপ্ন পূরণ করে দিলেন। আমি খুবই হ্যাপি। ছবিটির সঙ্গে সুস্মীর যুক্ত হওয়ার গল্পটি ছিল এমন-এই ছবির নির্মাতা সাখাওয়াত ভাই ২০১৫ সালে আমাকে নায়িকা করে বিটিভির জন্য ১৩ পর্বের একটি ধারাবাহিক নাটক ‘চন্দ্র নদীর বাঁকে’ নির্মাণ করেন। নাটকটিতে কাজ করার সময় সাখাওয়াত ভাই জানান তিনি একটি ছবি নির্মাণ করবেন আর সেই ছবিতে নায়িকা হিসেবে আমাকে কাস্ট করবেন। কারণ চলচ্চিত্রের নায়িকা হওয়ার জন্য যে ধরনের ফিগার ও গ্লামার দরকার সবই আমার মধ্যে রয়েছে। ব্যাস তার আগ্রহ আর আমার ইচ্ছে, দুই মিলিয়ে আসমানীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেলাম। ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছি। মানে আমিই আসমানী। আর আসমানীর জীবন যন্ত্রণার চিত্র ফুটে উঠেছে চারটি চরিত্রের মাধ্যমে। আমাকে একাই চার চরিত্রে অভিনয় করতে হয়েছে। একটির সঙ্গে অন্যটির কোনো মিল নেই। দর্শক বুঝতেই পারবেন না চারজনই সুস্মী। গেটআপ, মেকআপ সব ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম আর বৈচিত্র্যের ছোঁয়া আছে। ছবির শুটিংয়ে ক্যামেরার সামনে প্রথম দাঁড়নোর কথা বলতে গিয়ে উচ্ছ্বসিত তন্বী নায়িকা বলেন, প্রথম দিন ছিল নায়ক বাপ্পীর সঙ্গে একটি রোমান্টিক গান। প্রথম দিনেই অন্তরঙ্গ দৃশ্যে কাজ করতে হলো। আমার কোনো অসুবিধা হয়নি। যখন নায়কের

সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে যাই তখন নিজেকে আর সুস্মী ভাবিনি, আসমানীকে নিজের মধ্যে পুরোপুরি ধারণ করে নিই। ব্যাস এতেই কাজটা আমার জন্য সাবলীল হয়ে যায়। শুটিংয়ের সময়কার মজার ঘটনা জানিয়ে সুস্মী বলেন, গাইবান্ধার একটি গ্রামে শুটিং করে যখন ফিরছিলাম তখন হঠাৎ গ্রামের লোকজন দল বেঁধে ছবির পুরো ইউনিটকে ঘিরে ফেললো। ভয় পেয়ে গেলাম। ভাবলাম তারা বুঝি চাঁদা চাইবে বা অন্য কিছু। না, তারা আমাদের কাছে আবদার করল সেখানে যে বাজারটি আছে সেটি যেন এই ছবির নাম মানে ‘আসমানী’ নামে করার অনুমতি দিই। নির্মাতা সাখাওয়াত ভাই অনুমতি দিলেন। তাদের কথায় এই ছবির কাজ দেখে তারা এতটাই মুগ্ধ হয়েছে যে তারা নামটি স্মরণীয় করে রাখতে চায়। এখন বাজারটির নাম আসমানী বাজার নামেই সবাই চেনে। এই অভিজ্ঞতা সত্যিই খুব গর্বের। সুস্মীর কথায় একটি অন্যরকম গল্পের সত্যিকারের ছবি হয়েছে আসমানী। ছবিটি দর্শক বারবার দেখবে বলে তার বিশ্বাস। সুস্মী বিনয়ের সঙ্গে বলেন, দর্শকের কাছেও আমার অনুরোধ আপনারা সিনেমা হলে গিয়ে ছবিটি দেখবেন, কথা দিতে পারি হতাশ হবেন না। এ ছবির পর সুস্মী চান হরর গল্পের ছবিতে অভিনয় করতে। তার কথায় ভৌতিক মানে হরর গল্পের প্রতি আমার দুর্বলতা বেশি। সুযোগ পেলে এমন গল্পে কাজ করতে চাই।

সুস্মীর অভিনয় জীবনের আদর্শ কে? এমন প্রশ্নে তার এককথার জবাব- শাবনূর। সুস্মী বলেন, ছোটবেলা থেকে শাবনূর আপুর অভিনয় দেখে তার মতো অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। এখন যখন অভিনয় করি তখন আমার মনেপ্রাণে থাকে শুধুই শাবনূর আপু। তিনিই আমার আদর্শ আর আইকন। স্বপ্নের ছবি আসমানী নিয়ে কথা বলতে বলতে এক সময় ফিরে যান নিজের এক রত্তি বয়সের স্মৃতিতে। বলেন, আমার জন্ম চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে। ছোটবেলা থেকেই গান শিখতাম। আমার গানের ওস্তাদ ছিলেন মিহির লালা। বাংলাদেশ টেলিভিশনের চট্টগ্রাম কেন্দ্রে ছোটবেলা থেকেই নিয়মিত গান করতাম। পাশাপাশি র‌্যাম্প মডেল হিসেবেও কাজ করতাম। ২০০৮ সালে ঢাকায় এসে বিভিন্ন টিভিসিতে কাজ শুরু করি। ২০০৯ সালে গ্রামীণফোনের ব্র্যান্ড অ্যম্বেসেডর নিযুক্ত হই। ২০১৫ সাল পর্যন্ত গ্রামীণফোনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। এরপর সাখাওয়াত ভাইয়ের মাধ্যমে টিভি নাটকে অভিনয় শুরু। আর এখন আমি আসমানী। আর চলচ্চিত্রের বাসিন্দা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর