শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

যেভাবে সময় কাটছে তাদের

যেভাবে সময় কাটছে তাদের

মহামারী ভাইরাস করোনার কবলে বিপর্যস্ত এখন বিশ্বের মানুষ। শোবিজ জগৎও স্থবির। সবাই এখন গৃহবন্দী। আর ঘরে থেকে যেভাবে কাটছে কয়েকজন সিনিয়র তারকার সময় সে কথাই তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

প্রকৃতির কাছে আমরা সত্যিই অসহায়

শাবানা

আমরা নিজেদের অনেক কিছুই ভাবি, অনেক সময় অনেক বড় করে দেখি। আসলে দুদিনের এ পৃথিবীতে আমরা যে প্রকৃতির কাছে সত্যিই বড় অসহায় তা এ দুর্যোগ আবার মনে করিয়ে দিল। একটি সামান্য ভাইরাস, যা অদৃশ্য তা বিশ্বকে নাকাল করে দিচ্ছে। কোনো চিকিৎসক বা বিজ্ঞানী এর প্রতিকার খুঁজে পাচ্ছেন না। একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ছাড়া এ দুর্যোগ থেকে আর কেউ আমাদের রক্ষা করতে পারবে না। আমেরিকার নিউর্জাসিতে আছি। এখানে যে হারে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে আর মারা যাচ্ছে তা অবর্ণনীয়। মহা আতঙ্কে ঘরবন্দী দিন কাটছে আমাদের। দেশের মানুষ আর সেখানে থাকা স্বজনদের জন্য খুব চিন্তা হয়। সবাই এখন সবার জন্য দোয়া করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। ঘরের কাজ নিয়ে সারা দিন ব্যস্ত থাকি আর নামাজ পড়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করি তিনি যেন দ্রুত এ মহামারীর কবল থেকে বিশ্ববাসীকে রক্ষা করেন।

 

মন স্বতঃফূর্ত নেই তাই সৃজনশীল কাজও বন্ধ

গাজী মাজহারুল আনোয়ার

আল্লাহ যখন পৃথিবীতে মানুষকে পাঠান তখন কোনো দায়িত্ব দিয়েই তাকে পাঠানো হয়। দুর্যোগতো জীবনে আসবেই এবং তাকে প্রতিরোধ করতেই হবে। আর এ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলা কোনো অস্ত্র দিয়ে করা যাবে না। সাহস, নিয়ম মেনে চলা ও ধৈর্য ধারণের মধ্য দিয়েই এর মোকাবিলা করতে হবে। আরেকটি কথা হলো এ দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন একতাবদ্ধ হওয়া। সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে এক হয়ে সবাই সবার পাশে দাঁড়াতে পারলে এ দুর্যোগের যন্ত্রণা অনেকটাই লাঘব করা সম্ভব। তাই একে আগে সার্বজনীন দুর্যোগ হিসেবেই দেখতে হবে। সামর্থ্যবানদের বলব অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ান। তাদের আনাহার অসহায়ত্ব থেকে উদ্ধার করুন। আমরা যারা সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের এ কাজ এখন থমকে গেছে। কারণ মন স্বতঃফূর্ত নেই। মন ভালো না থাকলে কোনো সৃজনশীল কাজ জন্ম নেয় না। এ অবস্থায় সিনেমা দেখবে, গান শুনবে কে? গল্প আর গান লেখাও মন থেকে আসবে কী করে। দোয়া করি সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এ দুর্যোগের কবল থেকে প্রতিটি মানুষ যেন দ্রুত মুক্তি পায়।

 

মানুষ মানুষের জন্য

ফারুক

এমন দুর্যোগে এ অবস্থা একা সরকার দেখবে এটা কেমন দেখায়। একজন জনপ্রতিনিধি বা সেলিব্রিটি হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবে আমি এ অবস্থার মধ্যেও নিজেকে এবং আশেপাশের মানুষকে যতটা সম্ভব সুরক্ষিত রেখে অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। শুধু আমি নই আমার দুই ছেলে মেয়ে রওশন পাঠান শরৎ এবং ফারিহা তাবাসসুম তুলসী তাদের জমানো টাকা আমার হাতে তুলে দিয়েছে অসহায় মানুষের সহযোগিতার জন্য। ১৯ নাম্বার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মফিজুর রহমান ও আমি মিলে  কড়াইল আদর্শনগরে ৬ হাজার মানুষের কাছে খাদ্য সহযোগিতা পৌঁছে দিয়েছি। এর আগেও কড়াইল, সাততলা, মহাখালী, গুলশান, ভাষানটেক, মাটিকাটা, ক্যান্টনমেন্টসহ অনেক স্থানে সরকার প্রদত্ত ও নিজের পকেট থেকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করেছি। আমার ঢাকা ১৭ নাম্বার আসনে অসহায় মানুষের সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। ওয়ার্ড  ও থানা কমিটির সহযোগিতায় যতটুকু সম্ভব তাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছি। আমি মনে করি তাদের পাশে থাকা মানে আমার মাথার ওপর বঙ্গবন্ধু ও তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার ছায়া থাকা। আসল কথা হলো এমন দুর্যোগে একটি কথাই মনে রাখতে হবে-‘মানুষ মানুষের জন্য’।

 

জানি না বেঁচে দেশে ফিরতে পারব কিনা

সুচন্দা

গত সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকার নিউইয়র্কে গেছেন অভিনেত্রী সুচন্দা। কথা ছিল মার্চেই দেশে ফিরবেন। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে ছোবল হানলো মহামারী করোনা। সেখানেই আটকা পড়ে গেলেন তিনি। মুঠোফোনে তিনি জানান, বড়ই আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটছে আমার। এখানে ভাইয়ের সঙ্গে আছি আমি। এখানকার অবস্থা বড়ই উদ্বেগজনক। গণহারে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে আর মারা যাচ্ছে। শুধু আমেরিকা নয়, বিশ্ব এবং আমার জন্মভূমি বাংলাদেশেরও একই অবস্থা। জানি না কী হবে আমাদের। বেঁচে দেশে ফিরতে পারব কিনা তাও জানি না। সবার জন্য খুব চিন্তা হয়। এমন মহামারী আর কখনো কেউ দেখেছে বলে মনে হয় না। নিয়ম মেনে চলে সবাই যেন ঘরে থেকে আল্লাহতায়ালার কাছে এ দুর্যোগ থেকে নাজাত পায় সে দোয়াই করছি।

 

আমাদের যুদ্ধটা অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে

আলমগীর

প্রথমেই বলব আমাদের যুদ্ধটা আসলে একটি অদেখা শত্রুর বিরুদ্ধে, যাকে আমরা দেখতে পাই না, যার সম্পর্কে জানি না, যাকে মারার অস্ত্র আমাদের নেই। এর অর্থ আমাদের নিরাপদ দূরত্ব মানতে হবে।

যাতে সে আমাদের আঘাত করতে না পারে। দ্বিতীয়তঃ সরকার ও চিকিৎসক আমাদের যা মেনে চলতে বলেছেন, যা করণীয়, যতটা মেনে চললে শত্রু থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব সবই আমাদের করতে হবে। আর সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রাখতে হবে। আমি এ দুর্যোগে সরকার ও চিকিৎসকের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি। ঘরে বসে বই পড়ছি, গান শুনছি, নিজে গুন গুন করে গাইছি আর বিকালবেলা নিয়মিত এক ঘণ্টা করে হাঁটছি। আমার টেলিফোনটাও ব্যস্ত থাকে কারণ আমার অভ্যাস হলো সবসময় সবার খবর নেওয়া।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর