শিরোনাম
শনিবার, ৬ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

এখনো নজরকাড়া সেই মাধুরী ...

এখনো নজরকাড়া সেই মাধুরী ...

‘এক-দো-তিন-চার-পাঁচ-ছে’, ‘মুঝে ধাক্ ধাক্ করনে লাগা’, ‘চলি কে পিছে ক্যায়া হ্যায়’  কিংবা ‘মার ডালা’র মতো অসংখ্য জনপ্রিয় গান শুনলেই এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠে বলিউডের ভুবনমোহিনী রূপের অভিনেত্রী মাধুরীর ছবি। চলতি মাসে জন্মগ্রহণ করা মাধুরী এখনো নজরকাড়া রূপ দিয়ে আলো জ্বালিয়ে রেখেছেন বলি পাড়ায়। তাকে নিয়েই লিখেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

এক নজরে মাধুরী দীক্ষিত

মাধুরী দীক্ষিত ১৯৬৭ সালের মে মাসে মহারাষ্ট্রে মারাঠি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ভারতের ডিভাই চাইল্ড হাইস্কুল এবং মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন ও মাইক্রো-বায়োলজিস্ট হতে চেয়েছিলেন। তিন বছর বয়স থেকে তিনি নৃত্যের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। আট বছরে কত্থক নৃত্যের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এবং একজন প্রশিক্ষিত ও পেশাদার কত্থক নৃত্যশিল্পী হয়ে ওঠেন।

মাধুরীকে ‘ডান্সিং কুইন’ হিসেবে গড়ে তোলার নেপথ্য কারিগর ছিলেন প্রখ্যাত কোরিওগ্রাফার সরোজ খান। তাঁর কোরিওগ্রাফিতে একের পর এক হিট গানে রুপালি পর্দায় সম্মোহিত করেছেন মাধুরী। ১৯৮৪ সালে ‘অবোধ’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে তার অভিষেক। মাত্র চার বছরের মাথায় ১৯৮৮ সালে এন চন্দ্রা পরিচালিত ‘তেজাব’ ছবিতে দক্ষ অভিনয় আর ভুবনমোহিনী রূপ দিয়ে দর্শক-নির্মাতার হৃদয় টালমাটাল করে দেন তিনি। এরপর প্রায় চার দশক ধরে মাধুরীজ্বরে কাঁপছে বলিউড।

 

ভাগ্য বদলে দিলো ‘এক-দো-তিন’

বলিউডে নব্বই দশকের বাঘা সব অভিনেত্রীকে কড়া টক্কর দিয়ে সবার ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। ১৯৮৪ সালে ‘অবোধ’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে তার অভিষেক। মাত্র চার বছরের মাথায় ১৯৮৮ সালে এন চন্দ্রা পরিচালিত ‘তেজাব’ ছবিতে দক্ষ অভিনয় আর ভুবনমোহিনী রূপ দিয়ে দর্শক-নির্মাতার হৃদয় টালমাটাল করে দেন তিনি। একই সঙ্গে এই ছবির অসাধারণ জনপ্রিয় একটি গান ‘এক-দো-তিন’-এ তুখোড় নাচের পারদর্শিতা দেখিয়ে স্বয়ং এ নাচের বিখ্যাত কোরিওগ্রাফার সরোজ খানকে তাক লাগিয়ে দেন। সুদক্ষ নাচের মুদ্রায় ইতিহাস রচনা করলেন মাধুরী। মাধুরীর প্রতিভায় মুগ্ধ সরোজ তাকে আশীর্বাদ জানাতে ভোলেননি। সিনেমা হলে ছবিটি চলার সময় আরও একদফা গানটি দেখতে চাইতেন দর্শকরা। গান শুরু হলেই পর্দায় টাকা ছুড়ে মারতেন তারা। এ ছবিতে মাধুরীর নাম ছিল মোহিনী। দর্শক সে সময় মাধুরীকে ‘মোহিনী’ ডাকা শুরু করেছিল। এরপর রুপালি জগতে তার ‘এক-দো-তিন’ করে অপ্রতিরোধ্য যাত্রা কেউ থামাতে পারেনি আর।

সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক...

সালমানের সঙ্গে নির্মাতা সুরুজ বারজাতিয়ার ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব এলে মাধুরী সাফ জানিয়ে দেন পারিশ্রমিক হিসেবে তাকে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা দিতে হবে। কারণ তখন মাধুরীর জনপ্রিয়তা যেমন তুঙ্গে, তেমনি ব্যস্ততাও মধ্যগগন ছুঁয়েছে। এই বিশাল অঙ্কের পারিশ্রমিক যেন মাধুরীর দর্শকপ্রিয়তার সামনে অতি তুচ্ছ। তাই নির্মাতা এক কথায় রাজি হয়ে গেলেন। এই ছবিতে সালমানের পারিশ্রমিক ছিল মাধুরীর অর্ধেকেরও কম। ছবিটি বলিউডে রীতিমতো ঝড় তুলেছিল। পায় ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড।

 

২৫০ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক

বলিপাড়ার এক সময়ের পয়লা নম্বর নায়িকার সম্পত্তির পরিমাণও গগনচুম্বী। মাধুরীর মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। ইদানীং বড় পর্দায় সেভাবে মাধুরীকে দেখা না গেলেও তার জনপ্রিয়তায় একটুও ভাটা পড়েনি। বরং উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। বর্তমানে ছবিপিছু চার-পাঁচ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেন অভিনেত্রী। বর্তমানে টেলিভিশনে বিভিন্ন রিয়্যালিটি শোয়ের বিচারকের ভূমিকায় দেখা যায় মাধুরীকে। রিয়্যালিটি শোয়ের এক একটা সিজনের জন্য নায়িকার পারিশ্রমিকের অঙ্ক ২৪-২৫ কোটি টাকা। বিজ্ঞাপনেও দেখা যায় মাধুরীকে। বিজ্ঞাপনে তার পারিশ্রমিক প্রায় আট কোটি টাকা।

 

আরব সাগরের তীরে প্রাসাদ

মাধুরীর নতুন ফ্ল্যাটটির ঠিকানা মুম্বাইয়ের লোয়ার পারেল এলাকা। গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর ফ্ল্যাটটি কিনেন তিনি। ফ্ল্যাটটি রয়েছে ৫৪ তলায়। বিলাসবহুল এই আবাসনে রয়েছে বহু সুযোগ-সুবিধা। ফ্ল্যাটটি কিনতে মাধুরীকে গুনতে হয়েছে ৪৮ কোটি টাকা। এর আয়তন ৫ হাজার ৩৮৪ বর্গফুট। সাতটি গাড়ি রাখার বন্দোবস্ত রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে স্যুইমিং পুল, জিম, স্পা ক্লাব এবং ফুটবল খেলার জায়গা। ফ্ল্যাটটি এমন জায়গায় রয়েছে, যেখান থেকে দেখা যায় আরব সাগর।

 

বিলাসী জীবন

মাধুরী মহারাষ্ট্রের একটি গ্রাম দত্তক নিয়েছেন। বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজেও তার ভূমিকা চোখে পড়ে। নতুন ফ্ল্যাট কেনার আগে মাধুরী থাকতেন মুম্বাইয়ের লোখান্ডওয়ালার বিলাসবহুল বাড়িতে। একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে মাধুরীর। তালিকায় রয়েছে অডি, টয়োটা ইনোভা ক্রিস্টা, রোলস রয়েস, স্কোডা র‌্যাপিডের মতো গাড়ি। গত তিন বছরে মাধুরীর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ শতাংশ। ইদানীং ওটিটি প্ল্যাটফরমেও কাজ করছেন মাধুরী। নেটফ্লিক্সে ‘দ্য ফেম গেম’-এর পর সম্প্রতি অ্যামাজন প্রাইমে মুক্তি পেয়েছে নায়িকার নতুন ছবি ‘মাজা মা’। ৫৭ বছর বয়সেও রূপে-গুণে রীতিমতো হাল আমলের নায়িকাদের সঙ্গে টক্কর দিচ্ছেন ‘ধক ধক গার্ল’।

 

মানবহিতৈষী কাজ ও ছোট পর্দায়...

মাধুরী মানবহিতৈষী কাজের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন। ২০১৪ সাল থেকে তিনি ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে শিশুদের অধিকার ও শিশুশ্রম বন্ধের জন্য কাজ করছেন। তিনি ভারত সরকারের ‘বেটি বাঁচাও বেটি পাড়াও’ ক্যাম্পেইনের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করছেন। তিনি একাধিক কনসার্ট সফর ও মঞ্চ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

সর্বশেষ খবর