বুধবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
কথোপকথন

জাহিদ নামটি রেখেছিলেন দাদা

জাহিদ নামটি রেখেছিলেন দাদা

জনপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হাসানের জন্মদিন আজ। দুই যুগের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক, চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন তিনি। একসময় মঞ্চেও দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি নাটক নির্মাণেও সপ্রতিভ। তাঁর সঙ্গে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

কেমন আছেন? জন্মদিনটা কীভাবে কাটাবেন?

সব সময়ই বলি, আমি সাধারণ একজন মানুষ। সব সময় সহজভাবে সবকিছু চিন্তা করতে পছন্দ করি। আমি শুকরিয়া জানাই এই জন্য যে আল্লাহপাককে, সাধারণভাবেই এতদিন বাঁচিয়ে রেখেছেন। আমি এই নিয়ে খুব সন্তুষ্ট। তবে জন্মদিনে তো অনেকেই অনেক কিছু করেন, আমি তেমন কিছু করি না। এ দিনটিতেও চেষ্টা করি মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে।

 

দীর্ঘ জীবনে উপলব্ধি কী?

আমি সব সময় পারফেক্ট হতে চেয়েছি, কিন্তু এখনো মনে হয় পারিনি। সব সময় ভাবি জীবনে যা ভুল করেছি, আর করব না। কিন্তু আমার মনে হয় প্রতিবারই সে একই ভুলগুলো করে ফেলি। একভাবে না হলে আরেকভাবে ভুল হয়েই যায়। তবে আমি শেখার চেষ্টা করেছি, এখনো।

 

পুলক থেকে জাহিদ হাসান কীভাবে?

আসলে আমার ডাক নাম পুলক। মা রেখেছিলেন পুলক নামটি। ছেলেবেলার বন্ধুরা এখনো পুলক নামেই ডাকেন। কাছের মানুষরাও কেউ কেউ পুলক নামে ডাকেন আজও। জাহিদ নামটি রেখেছিলেন দাদা। পুলক থেকে সবার ভালোবাসায় আজকের জাহিদ হাসান।

 

প্রথম অভিনীত নাটক কোনটি এবং পারিশ্রমিক কত ছিল?

নাটকটির নাম ছিল ‘জীবন যেমন’। নাটকটি প্রযোজনা করেছিলেন আলীমুজ্জামান দুলু। প্রথম টিভি নাটকেই গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্র পেয়েছিলাম। অভিনয় করে পেয়েছিলাম ১ হাজার ২০০ টাকা।

 

অভিনেতাই কি হতে চেয়েছিলেন?

হ্যাঁ, অভিনেতা হতে চেয়েছিলাম। তবে আব্বা-আম্মা চাইতেন আমি ডাক্তার হই। কিন্তু আমি চাইতাম অভিনেতা হব। এ জন্য অভিমান করে অনেক দিন বাড়ি থেকে টাকা নিইনি। অভিমান করার কারণে একসময় অনেক কষ্ট হয়েছে আমার। তারপরও ঢাকায় পড়ালেখা ও নাটক দুটি একসঙ্গে করে গেছি।

 

মঞ্চে কাজ করার শুরুর সময়টা কেমন ছিল?

শুরুতে ফ্লোর ঝাড়ু দিতাম। এরপর হয়তো কখনো শোর দিন টিকিট বিক্রি করতাম। তারপর চা পরিবেশন করতাম সবাইকে। শুধু অভিনয়ের টানে পরিবারের সঙ্গে আমার অভিমানের জায়গা তৈরি হয়েছিল। নামি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েও ঢাকা চলে এসেছিলাম অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসায়। পরিবার থেকে হাত খরচের টাকা না নিয়ে ঢাকায়ই সংগ্রাম করে থাকতাম। একটা সময় যাতায়াত ভাড়ার টাকা বাঁচানোর জন্য টিএসসি থেকে রামপুরা বিটিভি ভবনে হেঁটে হেঁটে যেতাম। নাটকের মহড়ায় ছিঁড়ে যাওয়া প্যান্ট আর গেঞ্জি পরে চলে যেতাম। অনেক বড় নাট্যজন কর্মশালা করাতে আসতেন। একটা ডায়েরি কেনারও পয়সা ছিল না। এক পাতার কাগজেই সব পয়েন্ট টুকে রাখতাম। তখনই মনে হয়েছিল, অভিনয় অনুধাবনের বিষয়, অনুভবের বিষয়, সবকিছু কাগজে-কলমে লেখার প্রয়োজন নেই।

 

কাজ কমিয়ে দেওয়ার কারণ?

অনেক কাজ আসে হাতে। গল্প, চরিত্র যেগুলো হাতে আসে সেগুলো আমার মনের মতো হয় না। গল্প-চিত্রনাট্য যদি পছন্দ না হয় তাহলে কীভাবে কাজ হবে!

 

নাটকের মান নিয়ে কী বলবেন?

এখন তো আগের মতো ভালো কাজ তেমন হচ্ছে না। যেগুলো হচ্ছে তাও হাতেগোনা কিছু। তবে অনেকেই ভালো কিছু করার চেষ্টা করছে।

সর্বশেষ খবর