বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
আলাপন

বাংলাদেশে প্রথম মিউজিক ভিডিও আমার হাত ধরে

বাংলাদেশে প্রথম মিউজিক ভিডিও আমার হাত ধরে

হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো তিন দশকের বেশি সময় ধরে দেশের মানুষকে বুঁদ করে রেখেছেন শুভ্রদেব।  তার অসাধারণ গায়কী দিয়ে তিনি শুধু দেশের মানুষেরই মন জয় করেননি, সমানভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন বিদেশের মাটিতেও। বাংলাদেশ প্রতিদিনের জন্য বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- সাইফ ইমন

 

আপনার পছন্দ তবলা, ছেলের পিয়ানো...

সন্তান মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমার ছেলে খুব ছোট থেকেই আমার গানগুলো গাইত। স্টেজে গান গাওয়ার সময় সে কোলে উঠে যেত। আবার আমার পছন্দ ক্রিকেট, ছেলের পছন্দ ফুটবল, বাস্কেটবল। আমার বাবা খেলতেন লং টেনিস। মিউজিকে আমার ছেলের আগ্রহ অনেক। পিয়ানো বাজাতে পছন্দ করত খুব। কিন্তু সানবিমস-এ পড়াশোনা করছে সে। স্কুলে পড়ার চাপে সে এখন আগের মতো সময় দিতে পারছে না।

 

দেশে প্রথম মিউজিক ভিডিও আপনার হাত ধরে...

১৯৯১ সালে বাংলাদেশের প্রথম মিউজিক ভিডিওর যাত্রা আমার হাত ধরে। সুইডেনের স্টকহোম থেকে ‘শেষ চিঠি’ শিরোনামে একটি গান ছিল সেটা। সে সময় আমি আয়ারল্যান্ডে একটি বড় আয়োজনে আইরিশ ফুটবল দলের উপস্থিতিতে একটা স্টেজ পারফর্ম করি। তখন থেকেই  মিউজিক ভিডিওতে আগ্রহী হয়ে উঠি। সেখান থেকে আমি সুইডেন যাই, গানটা শুট করি। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম মিউজিক ভিডিও। যার শুরুটা আমার হাত ধরে। তখনো কলকাতার কেউ-ই মিউজিক ভিডিও প্রচার করেনি স্যাটেলাইটে।

 

আরও অনেকগুলো প্রথম এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আপনার নাম...

ঠিক অনেক প্রথমের সঙ্গেই আমি জড়িত। বিশ্বের প্রথম ক্রিকেট থিম সং আমার করা। বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস যখন পায় সেই থিম সংও আমার করা। শুধু তাই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি থিম সং আমার করা। আর্চারি, গলফ, ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টনসহ আরও অনেক কিছু নিয়ে থিম সং করেছি।

 

 

তিন দশকের জনপ্রিয় গায়ক শুভ্র দেব কোনো অপ্রাপ্তি?

অপ্রাপ্তি আসলে বলব না, আমিই মনে হয় একমাত্র শিল্পী যে কোনো কম্প্রমাইজ করে চলি না। অনেক আগের কথা বলছি, একসময় বিটিভিতে কার গান আগে যাবে, কার গান পরে যাবে এসব নিয়েও ব্যাপক কম্পিটিশন হতো। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক পক্ষপাতিত্ব হতো। আরও একটা বিষয় হলো- আমি নাম বলব না একটি পত্রিকা আমাকে কখনো অ্যাওয়ার্ড দেয়নি। আমি আন্তর্জাতিকভাবে আমির খানের সঙ্গে সিলেক্টেড হলাম, দক্ষিণ এশিয়ার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলাম, একটার পর একটা হিট গান দিলাম কিন্তু দেখা গেল শেষ মুহূর্তে লবিংয়ের কারণে আমি স্বীকৃতি পেলাম না।   

 

দেশের কোটি কোটি সংগীতপ্রিয় মানুষ কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না আপনার গান শুনেননি বা পছন্দ করেননি...

একটা কথা বলি, আমার বাবা ও মা শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিলেন। আমি সারা জীবন নীতি ধরে রেখে চলাফেরা করেছি। এমনও ঘটনা আছে যে আগের দিন জানি যে আমি অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছি, পরে দেখা গেল লবিং ও রিকোয়েস্ট করে অ্যাওয়ার্ড নিয়ে নিল। এগুলো আসলে সব ক্ষেত্রে নয়। ৯০ শতাংশ লোকই ভালো কিন্তু কিছু খারাপ লোকের কারণে নষ্ট হয়ে যায় অনেক কিছু। আমি পজিটিভলি দেখার চেষ্টা করি সবকিছু সবসময়। জীবনে অনেক চড়াই-উতরাই পার করেছি। টাকা-পয়সা খুব গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু আমি কখনো সব জায়গায় টাকা পয়সার হিসাব করি না। এটা আমার বেসিক প্রিন্সিপ্যাল।

 

বর্তমানে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি কেমন দেখছেন?

এখন মোটামুটি মানের শিল্পীরাও টাকা আয় করতে পারছেন। এখন অনেক ধরনের অনুষ্ঠান হয়। অনেক শিল্পীতো প্রচুর আয়ও করে থাকেন। এখন গানের অনেক ক্ষেত্রও তৈরি হচ্ছে। কিন্তু মানের কোনো উন্নতি নেই। আর নকল হচ্ছে প্রচুর। গানের কথা থেকে শুরু  করে সুর অনেক কিছুই নকল হচ্ছে। বেশিরভাগ গানই এখন নকল।

সর্বশেষ খবর