রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

শিল্পী সমিতি জয় করলেন মিশা-ডিপজল

মাহমুদ কলি-নিপুণ প্যানেলের ভরাডুবি

শিল্পী সমিতি জয় করলেন মিশা-ডিপজল

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে মিশা  সওদাগর- ডিপজল প্যানেল। এ নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে মিশা-ডিপজল প্যানেল জয় করলেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। দুটি পদ ছাড়া সবই করায়ত্ত হয়েছে এ প্যানেলের। মাত্র দুটি কার্যকরী সদস্য পদ জেতার মধ্য দিয়ে চরম ভরাডুবি ঘটেছে মাহমুদ কলি-নিপুণ প্যানেলের। ২৬৫ ভোট পেয়ে মাহমুদ কলিকে হারিয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মিশা সওদাগর। আর ১৬ ভোটের ব্যবধানে চিত্রনায়িকা নিপুণকে হারিয়ে ২২৫ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল। ফল ঘোষণার পর বিজয়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ফুলের মালা পরিয়েছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে রাতভর উৎসব আনন্দে  মেতে ওঠে শিল্পীরা। ভোট গণনা শুরু হয় রাত ৮টা ৫০ মিনিটে। এরপর পেরিয়ে যায় ১০ ঘণ্টা। ঘড়ির কাঁটায় যখন সকাল সাড়ে ৬টা তখন আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ভোটের ফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু।

সহসভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন মাসুম পারভেজ রুবেল। তিনি পেয়েছেন ২৩১ ভোট ও ডি এ তায়েব পেয়েছেন ২৩৪ ভোট। সহসাধারণ সম্পাদক আরমান, তিনি পেয়েছেন ২৩৭ ভোট, সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী, তিনি পেয়েছেন ২৫৫ ভোট, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো, তিনি পেয়েছেন ২৯৬ ভোট, দফতর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর, তিনি পেয়েছেন ২৪৫ ভোট, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন হাসান ইমন, তিনি পেয়েছেন ২৩৫ ভোট এবং কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী কমল, তিনি পেয়েছেন ২৩১ ভোট। কার্যনির্বাহী সদস্য পদে মিশা-ডিপজল পরিষদ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ৯ জন। তারা হলেন- সুচরিতা, তিনি পেয়েছেন ২২৮ ভোট, রোজিনা, তিনি পেয়েছেন ২৪৩ ভোট, আলীরাজ, তিনি পেয়েছেন ২৩৯ ভোট, সুব্রত, দিলারা ইয়াসমিন পেয়েছেন ২১৮ ভোট, শাহনূর, তিনি পেয়েছেন ২৪৫ ভোট, নানা শাহ, তিনি পেয়েছেন ২১০ ভোট, রত্না কবির, তিনি পেয়েছেন ২৬৩ ভোট ও চুন্নু, তিনি পেয়েছেন ২৪৮ ভোট। কলি-নিপুণ পরিষদ থেকে রিয়ানা পারভিন পলি, তিনি পেয়েছেন ২২০ ভোট ও সনি রহমান ২৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে জিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, সবাই মিলে এক হয়ে পথ চলব। মিশা ও ডিপজলকে ফুলের মালা পরিয়ে দেন চিত্রনায়িকা নিপুণ। তিনি বলেন, একসঙ্গে শিল্পীদের স্বার্থে কাজ করব। বিজয় শেষে আনন্দ মিছিল করেন মিশা-ডিপজলসহ বিজয়ীরা। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। এর আগে ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে সকাল সাড়ে ৯টায় এফডিসির শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ৫৭০ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ৪৭৫টি। বৈধ ব্যালট ৪৩৪টি। বাতিল ব্যালট ৪১টি। এবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু। সদস্য হিসেবে ছিলেন এ জে রানা ও বি এইচ নিশান।

 

প্রথম কথাই হলো উন্নয়ন

----মিশা সওদাগর

নির্বাচনে জয়ী হলেন, অনুভূতি কেমন?

আমি খুবই খুশি, এ বিজয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। কারণ অতীতে সমিতির নেতৃত্ব দেওয়ার সময় আমি সদস্যদের বিপদ-আপদে সবার পাশে ছিলাম, তাই এবার তারা আমাকে নিরাশ করেননি। আমি ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

এবার সমিতি ও এর সদস্যদের কল্যাণে কী করবেন?

প্রথম কথাই হলো উন্নয়ন। সমিতি এবং এর সদস্যদের সব ধরনের উন্নয়নে যা কিছু করা সম্ভব আমার নির্বাচিত কমিটি সবই করবে। কোনো সদস্য যেন অসহায় না থাকে সেদিকে প্রথমেই দৃষ্টি দেব। শিল্পীরা সবসময় যাতে ভালো থাকে সেই চেষ্টাই করব।

আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত প্যানেলের প্রতি কী বলবেন?

না, আমি কখনো কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করিনি। এ নির্বাচন মানে একটা সিস্টেম। তাই সবাই মিলে এতে অংশগ্রহণ করেছি। আমরা শিল্পীরা সবাই এক পরিবারের সদস্য। এবার সবাই মিলে শিল্পী ও চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করব।

একসঙ্গে কাজ করব

--- ডিপজল

বিজয়ের অনুভূতি কেমন?

অনুভূতি অবশ্যই ভালো লাগার। আমি বলব, আমরা সবাই এক। সবাই একসঙ্গে কাজ করব। শিল্পীদের মধ্যে আর কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে কাজ করে যাব। এটিই আমার লক্ষ্য ও প্রত্যাশা।

শিল্পীদের কল্যাণে এবার কী করবেন?

আমি এমনিতেই কখনো শিল্পীদের দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে পারি না। আমার পক্ষে যতটা সম্ভব তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। আর এবার নির্বাচিত হয়ে আমার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। নির্বাচনে যারা কষ্ট করে ভোট দিয়েছেন সবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা রইল। সবার দোয়া চাই যাতে তাদের কল্যাণে কাজ করতে পারি।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলের প্রতি কী বলবেন?

আমি কখনো কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি না। সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। কারণ আমরা সবাই শিল্পী, মানে একটি পরিবার।

ফল মেনে নিয়েছি : কলি

আমি খুব খুশি। কারণ আমি শুরু থেকেই চাচ্ছিলাম সবার অংশগ্রহণে যেন এ নির্বাচনটা হয়। এমনটাই হয়েছে, তাই আমি খুশি। নির্বাচনের ফলাফল আমি মেনে নিয়েছি। কারণ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু হয়েছে। তবে হারজিত বড় কথা নয়, আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য। এখন সবাই মিলে শিল্পীদের কল্যাণে কাজ করতে চাই।

নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে : নিপুণ

ডিপজল ভাইয়ের বিপক্ষে মাত্র ১৬ ভোটে হারব সেটা আমি চিন্তাও করিনি। আমার মনে হয়েছিল উনার বিপরীতে আমি হয়তো মাত্র ৫০ ভোট পাব। আমার ২৬টা ভোট নষ্ট হয়েছে, ২০৯টি ভোট আমি পেয়েছি। যেখানে ডিপজল ভাই পেয়েছেন ২২৫টি ভোট। শিল্পী সমিতির ভাই-বোনেরা আমাকে ভালোবাসেন। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।

সর্বশেষ খবর