শিরোনাম
শনিবার, ১১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
আলাপন

মানুষের ভালোবাসা আমাকে স্পর্শ করে

মানুষের ভালোবাসা আমাকে স্পর্শ করে

মঞ্চ, টিভি, ওটিটি ও চলচ্চিত্রের দাপুটে অভিনেতা-নির্দেশক ও মুক্তিযোদ্ধা তারিক আনাম খানের জন্মদিন ছিল গতকাল। এ মহারথীর অভিনয় জগতে পথচলা দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি বেশকিছু ওয়েব ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনয় জীবনের জানা-অজানা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

৭১ বসন্তে পদার্পণ। ফিরে তাকালে স্মৃতিপটে কী ভেসে ওঠে?

কত কী যে দেখতে পাই, কত স্মৃতি ভেসে ওঠে চোখের সামনে! কতটা পথ হেঁটে এসেছি। এতটা বছর, কম তো নয়! কিন্তু একই পথে আছি। অন্য কোনো পথে যাইনি কিংবা টানেনি। আজ এত বছর পর মনে হয় অর্থপূর্ণ কিছু করতে পেরেছি। জন্মদিন এলে দেখতে পাই অনেক মানুষ আমাকে ভালোবাসে। মানুষের ভালোবাসা আমাকে স্পর্শ করে। কেউ কেউ আমাকে শিক্ষক, গুরু, ওস্তাদ মনে করে। হয়তো কিছু একটা করতে পেরেছি বলেই আমাকে ভালোবাসে। এটা পরম প্রাপ্তি।

 

কখনো কি মনে হয় কেন অভিনয় করছেন?

সহজ উত্তর, অভিনয় করি ভালোবাসা থেকে। নাটকে ও সিনেমায় অভিনয় এবং পরিচালনা করতে ভালোবাসি। যখন মুক্তিযুদ্ধ করি, যখন দিল্লিতে পড়ালেখা করতে যাই তখনই ভেবেছিলাম আমার দায় আছে দেশের এবং শিল্পের প্রতি। সেই দায় থেকে একটুও সরিনি কখনো। আগামীতেও প্রিয় দেশের জন্য অনেক কিছু করে যেতে চাই।

 

আপনাকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং ও বৈচিত্র্যময় চরিত্রে খুঁজে পাওয়া যায়। অভিনয়ের কোনো সূত্র বিশ্বাস করেন?

অভিনয়ের কিছু কনসেপ্ট বিশ্বাস করি। মানুষের টেন্ডেন্সি হলো স্বাভাবিক মানুষকে দেখা। আমি যে কয়টা চরিত্র করেছি, চিন্তা করেছি সেটা যেন মানুষের জীবনের সঙ্গে মেলে, দেখে, বিশ্বাস করে। গ্রহণযোগ্য অভিনয়ই সবার করা উচিত। আই অলওয়েজ লার্ন। এটা খুবই ইম্পোর্টেন্ট। ফরীদি, আসাদ, বাচ্চু ভাই, আলী যাকের, সারা যাকের, আসাদুজ্জামান নূর, আবুল হায়াত- এদের সঙ্গে মিশে কিন্তু আমি অনেক ঋদ্ধ হয়েছি; অনেক কিছু শিখেছি। সবারই শেখার অ্যাটিচিউড রাখাটা কিন্তু খুবই জরুরি। মানুষ আসলে একটি কূপমণ্ডূক জায়গার মধ্যে মানে একটি হাঁড়ির মধ্যে বন্দি হয়ে আছে। এটিকে ভাঙতে হবে।

 

ফরীদির সঙ্গে ছিল সখ্য...

হুমায়ুন ফরীদির সঙ্গে তো প্রতিটি মুহূর্তই মজার। তার সঙ্গে প্রতিদিন দেখা হতো। ফরীদির সঙ্গে ক্রিয়েটিভ আলোচনা ছিল খুবই ইন্টারেস্টিং। তার কথায় ছিল মুগ্ধতা। এমনও হয়েছে সে এক ঘণ্টা ধরে জোকস বলছে কেউ বিরক্ত হয়নি, সবাই হেসেই যাচ্ছিল। তার কথায় সময় কীভাবে যে চলে গেছে কেউ টেরই পেত না। আমার নাট্যকেন্দ্র করার পেছনে তার বড় ভূমিকা ছিল। অদ্ভুত স্বভাবের ছিল সে। সে সব সময় আউট অব দ্য ফ্রেম থাকতে চাইত। ও ওর ইচ্ছামতো চলত। ভালো লাগলে চাকরি করত, না লাগলে ছেড়ে দিয়ে চলে আসত। ছবি দেখা, আবৃত্তি করা, আড্ডা দেওয়া, জোকস করা তার খুবই পছন্দ ছিল। ফিল্মে সে লেট করে যেত, লেট করে আসত। ভালো লাগলে করেছে, না লাগলে করেনি। আসলে ফিল্মে ফরীদি টোটালি নিজেকে ওয়েস্টেড করেছে। ও মোটামুটিভাবে নিজেকে কমার্শিয়ালাইজড বেশি করেছে।

 

হুমায়ূন আহমেদের কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন...

হুমম... তবে ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিকে কাজ করতে গিয়ে একটু মনোমালিন্য হয়। তার শেষ কাজ ‘ঘেটুপুত্র কমলা’র জমিদার চরিত্রেও কাজ করেছি। তিনি অসাধারণ ছিলেন তাঁর লেখায়।

 

সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন মনে হচ্ছে?

ইন্ডাস্ট্রি কিন্তু স্টাবলিশ না। একটু সুবাতাস শুরু হয়েছে কেবল। আমার মনে হয় আরও ডেভেলপ হবে। পরিবর্তন আসবে। প্রচুর ভিন্ন ভিন্ন ছবি তৈরি হবে আশা রাখছি।

 

টিভি ইন্ডাস্ট্রির উত্তরণে কী প্রয়োজন।

নাটকের অবস্থা আগের অবস্থায় নেই। আমরা বিটিভির মানুষ, নাটকের মানুষ। একটু যদি আমরা মান নিয়ন্ত্রণ করি, মার্কেট বুঝে কাজ করি তাহলে ভালো কিছুই হবে। আমি আশাবাদী মানুষ।

 

সর্বশেষ খবর