রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঈদ নাটকে আলোচনায় যারা

ঈদ নাটকে আলোচনায় যারা

ঈদ মানেই আনন্দ আর ঈদের আনন্দের এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ নাটক। যদিও হারিয়ে গেছে টিভি নাটকের সেই ঈদ! এখন টেলিভিশনের জায়গাটা দখল করে নিয়েছে ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফরম। সিনিয়র অনেক জনপ্রিয় শিল্পী এখন কাজ কমিয়ে দিয়েছেন। এ কারণে নতুনদের ওপরই বেশি চাপ পড়েছে। এবার ঈদে মানবিক গল্প তথা ভিন্নধর্মী কাজ নিয়ে আলোচনায় রয়েছেন বেশকিছু অভিনয়শিল্পী। সেসব নিয়ে লিখেছেন- পান্থ আফজাল

এখন শুধু টেলিভিশনের নাটকের জন্যই ব্যস্ত থাকেন না ছোট পর্দার শিল্পীরা। টিভির পাশাপাশি ইউটিউব চ্যানেলের জন্যও কয়েক শ নাটক নির্মিত হয় উৎসবকে কেন্দ্র করে। নাটকের সংখ্যার তুলনায় তাই অভিনয়শিল্পীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। ফলে ঘুরেফিরে কয়েকজন প্রিয়মুখকে নিয়েই নির্মিত হয় উৎসবের নাটক। আফরান নিশো, নুসরাত ইমরোজ তিশা তো নাটকের কাজ ছেড়েই দিয়েছেন। অন্যদিকে অপূর্ব, মেহজাবিন চৌধুরী, তাসনিয়া ফারিণ, চঞ্চল চৌধুরী, আবদুন নূর সজল, তানজিন তিশাদেরও ছোট পর্দায় দেখা যায় কালেভদ্রে। যদিও ঈদে ছোট পর্দার জনপ্রিয় তারকাদের অনেককেই নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা পাওয়া যায় এখন। এ সময়ে ঈদের কাজ করেছেন মোশাররফ করিম, নিলয় আলমগীর, তৌসিফ মাহবুব, সাবিলা নূর, মুশফিক আর ফারহান, তানিয়া বৃষ্টি, ফারহান আহমেদ জোভান, জান্নাতুল হিমি, সাদিয়া আয়মান, ইয়াশ রোহান, তানজিম সাইয়ারা তটিনী, খায়রুল বাসার, কেয়া পায়েল, আরশ খান, নওবা তাহিয়া, মনোজ প্রামাণিক, ইরফান সাজ্জাদ, নাজনীন নিহা, তাসনুভা তিশা, আবু হুরায়রা তানভীর, সাফা কবির, আইশা খান, জিয়াউল পলাশ, রাশেদ সীমান্ত, ফারিন খান, সারিকা সাবরিন, সারিকা সাবাহ, শ্যামল মাওলা, চমক, মৌসুমী হামিদ, শামীম হাসান সরকার, অহনা রহমান, শাশ্বত দত্ত, সালহা নাদিয়া, সুদীপ বিশ্বাস দ্বীপ, ইরেশ যাকের, স্পর্শিয়া, শাওন, তানজিন তিশা, সামিরা খান মাহি, ভাবনাসহ নতুন-পুরনো শিল্পীরা। দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী এই ঈদে ভিন্নধর্মী একটি কাজ নিয়ে আলোচনায় রয়েছেন। তার অভিনীত ও ভিকি জাহেদ নির্মিত নাটকটির নাম ‘তিথি ডোর’। যেখানে দেখানো হয়েছে ৩০ বছর বয়সী অবিবাহিত মেয়েদের নানা টানাপোড়েন থেকে হতাশা এবং সর্বশেষ আত্মহননের চিন্তা। বাংলাদেশ থেকে ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে এগিয়ে থাকা নাটকের মধ্যে রয়েছে আরেক দর্শকপ্রিয় অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান অভিনীত মানবিক গল্পের নাটক রুবেল আনুশের ‘মাস্তান’। এই অভিনেতা গত কয়েক বছরে ছোট পর্দার অন্যতম অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এ নাটকে মুশফিকের সঙ্গে অভিনয় করেছেন তানিয়া বৃষ্টি, যিনি চরিত্রের প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্বাসযোগ্যভাবেই নিজেকে তুলে ধরছেন প্রতিনিয়ত। এই ঈদে প্রায় ডজনখানেক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। এর মধ্যে রাবেয়া খাতুনের রচনা ও আবুল হায়াতের পরিচালনায় ‘কদম’ করেছেন। মোশাররফ করিমের সঙ্গে বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। এর মধ্যে আছে ‘গ্রামের ভাইরাল বউ’, ‘জীবন আপনার রিস্ক আমার’ ও ‘জায়গায় ব্রেক’। মুশফিক ফারহান ছাড়াও শামীম হাসান সরকার, নিলয় আলমগীর প্রমুখের সঙ্গে অভিনয় করেছেন তানিয়া। প্রতিটি নাটকেই ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে নিরীক্ষা করেছেন তিনি। এর আগে ‘জায়গায় খায় জায়গায় ব্রেক’, ‘পিনিকম্যান সিকুয়েল’, ‘মাথা গরম জামাই’সহ একাধিক নাটকে দেখা গেছে মোশাররফ করিমকে। এবার কমেডি গল্পের পাশাপাশি মানবিক গল্পে কাজ করেছেন তিনি। এখনো কমেডি ঘরানার নাটক থেকে বের হতে পারেননি নিলয় আলমগীর। এসব নাটকে নিলয়ের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি জুটি হয়েছেন জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। ঈদের ছয়-সাতটি নাটকে কাজ করেছেন তারা। এরমধ্যে মোহন খানের লেখা ও পরিচালনায় ‘শ্বশুরবাড়ির আপ্যায়ন’ দর্শকরা পছন্দ করছেন। ওয়েব ফিল্ম ‘পয়জন’ নিয়ে ঈদ রাঙালেও তানজিন তিশা ‘নরসুন্দরী’ এবং তৌসিফ মাহবুবের সঙ্গে জুটি বেঁধে করা ইমরোজ শাওনের ‘ফ্যামিলি’তে ছিলেন সপ্রতিভ। এদিকে সাবিলা নূরও ঝুঁকেছেন ওয়েবে। হইচই-এর মুক্তি পাওয়া শিহাব শাহীনের ‘গোলাম মামুন’-এ অপূর্বর সঙ্গে রাহী চরিত্রটি করেছেন। এরই মধ্যে পার্থ শেখের সঙ্গে নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল নির্মিত নাটক ‘প্রিন্সেস ডায়না’, ইরেশ যাকেরের সঙ্গে ইমরাউল রাফাতের ‘সুতো’তে অভিনয় করেছেন। মুরসালিন শুভর ‘রাত বাকি’ও করেছেন। এ সময়ে নওবা তাহিয়া অভিনয়গুণে দর্শক মুগ্ধতা কাড়ছেন। ঈদে তার অভিনীত নাটক ‘আমার ঠিকানা তুমি’, ‘মধুযাত্রা’ ও ‘বড্ড মায়া লাগে’ অন্যতম। দর্শকপ্রিয় অভিনেতা জোভান ও তটিনী ঈদে বেশ কয়েকটি নাটকে জুটি বেঁধেছেন। এরমধ্যে মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘ভিতরে বাহিরে’ নাটক দর্শকের ভালো লাগার মধ্যে একটি। শেখ নাজমুল হুদা ইমনের ‘ভ্যানিশিং ম্যান’-এ জিয়াউল হক পলাশ-সাফা কবির রয়েছেন দর্শকের পছন্দের তালিকায়। মুশফিক ফারহান ও অর্চিতা স্পর্শিয়া অভিনীত তৌফিকুল ইসলামের ‘নূর’ও দর্শক বেশ পছন্দ করেছে। সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পির ‘সামার ব্রেক’-এ তৌসিফ-কেয়া পায়েলের অভিনয় ছিল অনবদ্য। হাসান রেজাউলের ‘বাউন্সার’ (সাদিয়া-শাওন), ‘লেগুনা প্রেম’ (আরশ-তানিয়া), ‘বারবিকিউ প্রেম’ (খায়রুল-তটিনী) ও ‘মেঘদল’ (সাদিয়া-তানভীর হুরায়রা) ছিল দর্শক পছন্দের নাটক। মোশাররফ করিমকে নিয়ে ‘বাদী যখন বেগম’ নির্মাণ করে প্রশংসিত শামস করিম। রাশেদ সীমান্ত-অহনা-শামীম সরকার অভিনীত ও মাবরুর রশীদ বান্নাহর ‘প্রেম পরীক্ষা’ও ছিল আলোচনায়। দর্শকদের আলোচনায় আরও ছিল সালাহউদ্দিন লাভলু-চঞ্চল জুটির ‘পোকা দিয়ে পোকা ধরা’, তৌসিফ-কেয়া পায়েলের ‘ইচ্ছে পূরণ’, ইয়াশ-সাদিয়ার ‘সোনিয়া সিন্ড্রোম’, শাওন-সাদিয়ার ‘ইলিশের গন্ধ’, তৌসিফ-কেয়ার ‘রূপকথা’, ইয়াশ-দর্শনা বণিকের ‘ইতিবৃত্ত’, মোস্তফা কামাল রাজের পরিচালনায় ‘ঈদ ভ্যাকেশন’, খায়রুল বাসার-কেয়ার ‘নয়নতারা’, তৌসিফ-আইশা-রোদশীর ‘বয়ফ্রেন্ডের সাথে বেস্টফ্রেন্ড ফি’, মোশাররফ করিম-অলংকারের ‘একদিনে সেলিব্রেটি’, দিলারা জামান-জিয়াউল ফারুক অপূর্বর ‘মন দুয়ারী’, নিলয়-হিমির ‘লুঙ্গীম্যান’, সালহা নাদিয়া-পাভেলের ‘ত্রিরত্ন’, মোশাররফ-এনিলার ‘মিস্টার মোতালেব’, হানিফ সংকেতের ‘ব্যবহার বিভ্রাট’, ভাবনার ‘হবিগঞ্জের হরবোলা’, সোহেল মণ্ডল-সামিরা মাহির ‘বকুলের লটারি’, সাবিলা নূর-সুদীপ বিশ্বাস দ্বীপ অভিনীত ‘রাত বাকি’, চঞ্চল চৌধুরী-সারিকা সাবরিনের ‘বিষদাঁত’, তৌসিফ-কেয়া পায়েলের ‘চাঁদের হাট’সহ বেশকিছু নাটক। এদিকে দুই-তিন বছর ধরেই নাটকে প্রেম, পরিবার ও মানবিক গল্পের প্রাধান্যই বেশি দেখা যাচ্ছে। এবারও সেই চিত্রই দেখা যায়। পাশাপাশি কমেডি ঘরানার নাটকও দেখা যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর