শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৩ ০০:০০ টা

সংসদে গেলেও তত্ত্বাবধায়কের দাবি তুলবে না বিএনপি

আসন্ন বাজেট অধিবেশনে অংশ নিলেও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রস্তাব দেবে না প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এ প্রস্তাব তুলে ধরলে ক্ষমতাসীনদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে নাকচ হয়ে যাবে এমন আশঙ্কা দলটির। তাই নির্বাচন কালীন সরকার নিয়ে প্রস্তাব ও বিল পাস দুটিই আওয়ামী লীগকেই করতে হবে বলে মনে করে বিরোধী দল। তবে অধিবেশনে যোগ দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতারা তাদের বক্তৃতায় সামগ্রিক আলোচনার অংশ হিসেবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কথা বলতে পারেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বাজেট অধিবেশনের প্রথমদিন থেকেই সংসদে যোগদান করতে পারে বিএনপি। তবে পরিস্থিতির অবনতি হলে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন আসতে পারে। দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্রে জানা যায়, অন্তর্বর্তী বা যে নামেই হোক নিদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে আপত্তি নেই বিএনপির। তবে নির্বাচনকালীন সেই সরকারের প্রধানকে অবশ্যই নির্দলীয় ব্যক্তি হতে হবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কোনো নেতা সরকার প্রধান থাকলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফারনানদেজ তারানকোকে এমন কথাই বলেছেন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। ক্ষমতাসীনদের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সংসদে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে ক্ষমতাসীনদের মধ্য থেকে প্রস্তাব তুলে ধরতে হবে এবং সবাই মিলে বিল আকারে পাস করতে হবে। সংসদে বিএনপির পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো প্রস্তাব দেওয়া হবে না। সরকার না চাইলে রাজপথেই এর সমাধান হবে। সূত্রমতে, সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে আসা জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিবকে বিরোধীদলীয় নেতা জানিয়েছেন, ১৯৯৪ সালে নির্বাচন নিয়ে সংকট উত্তরণে কমনওয়েলথের সাবেক মহাসচিব স্যার স্টিফেন নিনিয়ান সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ওই সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দুই দলের পাঁচজন করে প্রতিনিধি নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা (শেখ হাসিনা) বলেছিলেন, ওই ধরনের প্রস্তাব নির্দলীয় সরকারের নয়, দলীয় সরকারের। তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তাই বিএনপিও এখন এ ধরনের কোনো প্রস্তাব মানবে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যাখ্যা চেয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলছেন, তা সংবিধানের কোথাও নেই। তাহলে কি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য সংবিধান সংশোধন করা হবে। এসব বিষয়ে আসন্ন অধিবেশনে পরিষ্কার করতে হবে। বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক জানান, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে আওয়ামী লীগ পঞ্চদশ সংশোধনী এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করেছে। আমরা ইতোমধ্যে জনগণের প্রত্যাশার বিভিন্ন দাবি টেবিল চাপড়িয়ে তুলে ধরলেও তা স্পিকার পর্যন্ত যায়নি। কাজেই আমাদের পক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব তুলে ধরলে কোনো লাভ হবে না। সমগ্র জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকারি দলকেই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়কের বিল আনতে হবে।

সর্বশেষ খবর