প্রধান দুই রাজনৈতিক দল দেশের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান। তিনি বলেন, দেশের রাজনীতি কলুষিত হয়ে গেছে। রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন দরকার। গতকাল সকালে রাজধানীর বসুন্ধরায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ কনফারেন্স হলে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম আয়োজিত 'স্থানীয় সরকার : সংবিধান ও রাজনীতি' শীর্ষক অনলাইন সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, আগামী দিনে কাকে ভোট দেব সে বিষয়ে দ্বিধায় ভুগছি। সুযোগ থাকলে 'না' ভোট দিতাম। সেই সুযোগও তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলের আগ্রহ নেই স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার। আওয়ামী লীগ-বিএনপি সবাই এটিকে রাজনৈতিক উপাদান হিসেবে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন সময় আইনের পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে তা স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে নয়, করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, কোনো সরকার একে কার্যকর ও শক্তিশালী করতে চায়নি। এর কোনো রাজনৈতিক গুরুত্ব নেই। স্থানীয় সরকার ও সরকার ব্যবস্থা দ্বান্দ্বিক বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি রাষ্ট্রপতিশাসিত পদ্ধতি মেনে, অপরটি সংসদীয়। তাই স্থানীয় সরকার কাঠামোর ক্ষমতা নেই, কাজ নেই। আলোচনায় তিনি বলেন, আমরা নিজের কাজ না করে অন্য কাজ করি। কথা বলি বেশি। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কিনা সেটি নির্বাচন কমিশনের বিষয়। কিন্তু বিএনপি সেনা মোতায়েন চায়। আর আওয়ামী লীগ এর জবাব দেয়। কিন্তু এটি তাদের বলার কথা নয়।
এ সংলাপে অংশ নেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, সুপ্রিমকোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমেদ, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা আখতার, এ এইচ এম নোমান, যুব ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল্লাহ-আল কাফি প্রমুখ। এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ডিসিসি নির্বাচন না করতে পারলে বুঝতে হবে নির্বাচন কমিশনের মেরুদণ্ড ঠিক নেই। ডিসিসি নির্বাচনের শিডিউল বাতিল করা হয়নি। স্থগিত করা হয়েছে। এখানে নির্বাচন করা না করা সম্পূর্ণ ইসির এখতিয়ার। অন্যদের ইন্টারফেয়ার করার সুযোগ নেই। নির্বাচন না হওয়ার কোনো কারণ নেই বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় বা নির্দলীয় লেখা নেই। তবে এই নির্বাচন দলীয়ভাবেই করা ভালো। ড. তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বর্তমান সরকার ব্যবস্থা ও এক কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের কারণে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গুরুত্ব পাচ্ছে না। ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে একটি মাত্র সরকার পুরো দেশের সব ভালোভাবে চালাতে পারে না। দেশের বিচার বিভাগ, শাসন ব্যবস্থা, পুলিশ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও যে দেশে আইন আছে এটাই বড় বিষয়। ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে সেনাবাহিনী ডেকে নির্বাচন করার কোনো বিধান নেই। সেনাবাহিনী ডেকে আনা কোনো ইনোভেটিভ আইডিয়া না।