শিরোনাম
সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

মমতাকে বুঝাবেন খুরশিদ

মমতাকে বুঝাবেন খুরশিদ

সংসদের চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই স্থলসীমান্ত চুক্তি সংশোধনী বিল পেশের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত সরকার। আগামী বুধবারই সংসদে এ বিলটি উত্থাপন করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। তার আগে আগামীকাল মঙ্গলবার শেষবারের মতো বিষয়টি নিয়ে ইউপিএর একসময়ের শরিক তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ। এ চুক্তিটি যে প্রতিবেশী বাংলাদেশের কাছে অত্যন্ত আবেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে সে কথা বুঝতে পেরেই দেশটির সরকার জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। এ ছাড়া এই চুক্তির ব্যাপারে বারবার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে ভারতের তরফে। কিন্তু ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতায় এ চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়ে ওঠেনি। অতি সম্প্রতি ঢাকা সফরকালে ভারতের বিদেশসচিব সুজাতা সিংও সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ চুক্তি সম্পাদন করার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেছেন। বিষয়টি নিয়ে ভারত সরকার দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারবে বলেও হাসিনাকে জানান সুজাতা সিং।

এর আগে বিজেপির অসম শাখা, অসম গণপরিষদ এবং তৃণমূলের বিরোধিতার ফলে দুবার সংসদে এই সংবিধান সংশোধনী বিলটি পেশ করা যায়নি। কিন্তু সরকার এবার বদ্ধপরিকর। তারা চায় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় ১১৯তম সংশোধনী বিলটি পেশ করতে। যাতে চলতি অধিবেশন শেষ হওয়ার পরও বিলটির কার্যক্ষমতা হারিয়ে না যায়। সেক্ষেত্রে আগামী বছর দেশটির সাধারণ নির্বাচনের পর নতুন সরকার ক্ষমতায় এলেও সংসদের বাদল অধিবেশনে এই সংশোধনী বিলটি পুনরায় পেশের সুযোগ থাকবে। সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রেই এ কথা জানা গেছে। নাম না জানানোর শর্তে মন্ত্রণালয়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, 'বিলটি সংসদে পেশ করার ব্যাপারে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, আমরা আশা করছি রাজনৈতিক মতভেদ ভুলে এই চুক্তির বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলই পাশে থাকবে।' যদিও বিলটি নিয়ে এখনো নিজেদের কঠোর অবস্থানেই আছে তৃণমূল। সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুকে পোস্ট করে এই বিলের বিরোধিতা করে লিখেছেন 'জমি হস্তান্তর হলে পশ্চিমবঙ্গ মাত্র ৭০০০ একর জমি পাবে, বদলে বাংলাদেশকে দিতে হবে ১৭ হাজার একর জমি। রাজ্যের জনগণের অমতে এটা কিছুতেই মানা সম্ভব নয়।' বিরোধিতা করেছে বিজেপিও। কিন্তু সরকার এখনো আশাবাদী যে, শেষ পর্যন্ত বিরোধীরা তাদের মত পাল্টাবে। সে কারণে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ শেষবারের মতো এ চুক্তির প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য, ৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন, চলবে ২০ তারিখ পর্যন্ত। ১২ দিনের এ অধিবেশনে স্থলসীমান্ত সংশোধনী বিল, লোকপাল বিল, মহিলা বিল, তেলেঙ্গানা বিলসহ একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস করানোর চেষ্টা চালাবে কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সালের ১৬ মে দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এই দ্বিপাক্ষিক আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। বাংলাদেশের পক্ষে শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভারতের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ওই প্রোটোকল স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী, ভারতে বাংলাদেশি ছিটমহল রয়েছে ৫১টি, যার মোট এলাকা প্রায় ৭ হাজার একর। অন্যদিকে বাংলাদেশের মধ্যে ভারতের যে ১১১টি ছিটমহল রয়েছে সেই জমির পরিমাণ প্রায় ১৭ হাজার একর।

 

 

সর্বশেষ খবর