রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৪ ০০:০০ টা

নাটোরে আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান খুন

ঝিনাইদহে দুই কর্মী নিহত

নাটোরে আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান খুন

নাটোরের সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফজলার রহমান ফনুকে (৫৯) গতকাল দুপুরে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় তিনি মোটরসাইকেলে উপজেলা সদরের সমন্বয় সভা শেষে পাশের পারসাঐল গ্রাম হয়ে কলমে ফিরছিলেন। এ ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক আহত হয়েছেন। অন্যদিকে ঝিনাইদহে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত ১০ জন। 
নাটোর প্রতিনিধি জানান, গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান ফজলার রহমান ফনু মোটরসাইকেলে উপজেলা সদরের সমন্বয় সভা শেষে পারসাঐল গ্রাম হয়ে কলম ইউনিয়ন পরিষদে যাচ্ছিলেন। পথে পারসাঐল গ্রামের শাহপাড়ায় প্রতিপক্ষের করিম ও তার সহযোগীরা তাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি করে এবং পরে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। এ সময় তার মোটরসাইকেল চালক ভাতিজা জাহিদুল ইসলাম (২৫) আহত হন। গুরুতর অবস্থায় চেয়ারম্যান ফনু ও জাহিদকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চেয়ারম্যানকে মৃত ঘোষণা করেন। ফনুর নিহতের খবরে সদর হাসপাতালে তাৎক্ষণিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং নাটোর সদরের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদকসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী ভিড় জমান। জানা গেছে, ১৯ আগস্ট একই এলাকার ছোট কালিকাপুর গ্রামে বাজার থেকে ফেরার পথে কলম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে আসা মোজাম্মেল হকের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী মোল্লাকে (৬৫) প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় একই গ্রামের আবদুল করিমসহ কয়েকজনকে সে মামলায় আসামি করার ক্ষোভে করিমের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসী আরও জানায়, হামলাকারী করিম একসময় ফনুর অন্যতম সহযোগী ছিলেন, কিন্তু কিছু দিন আগে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দুজনের মধ্যে শত্রুতার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন থেকে ওই এলাকায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে একের পর পর খুন হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান ফনুসহ ছয়জন সম্প্রতি খুন হলেন। এ রিপোর্ট লেখার সময় হাসপাতালে চেয়ারম্যান ফনুর লাশের ময়নাতদন্ত চলছিল। নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, 'আমরা আহত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করেছি। তাকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। তার দেওয়া তথ্যমতে অভিযান চালানো হবে। এরই মধ্যে আমাদের দুটি টিম কাজ শুরু করেছে।'
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, সদর উপজেলার ফুরসন্দি ইউনিয়নের টিকারী গ্রামে গতকাল রাতে প্রতিপক্ষের গুলিতে দুই আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। তারা হলেন একই গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে আরিফুল ইসলাম ও ইবরাহিমের ছেলে শাহ আলম। তারা আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মালেক গ্রুপের সমর্থক। এ ছাড়া প্রতিপক্ষের ব্রাশফায়ারে আহত হয়েছেন শাহবুল, কামরুল, মোজাম্মেল ও শফিকসহ ১০ আওয়ামী লীগ কর্মী। তাদের মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাকালে ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন দুই পুলিশ সদস্য। সদর থানার ওসি জানান, পূর্ববিরোধের জেরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফুরসন্দি ইউপি চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা শহীদ শিকদারের ভাতিজা শরিফুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আবদুল মালেকের সমর্থক সাহেব আলীর তর্কবির্তক হয়। একপর্যায়ে শরিফ সাহেব আলীর মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। কিছুক্ষণ পর শরিফ টিকারী বাজারে এলে মালেক গ্রুপের নেতা-কর্মীরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। এ ঘটনার জেরে রাত ৮টার দিকে শহিদ শিকদারের সমর্থকরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে টিকারী গ্রামের কলেজপাড়ায় মালেক গ্রুপের বাড়িঘরে হামলা ও গুলিবর্ষণ করেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই আরিফ নিহত ও গুরুতর আহত হন শাহ আলম। তাকে প্রথমে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল পরে মাগুরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় রেফার্ড করেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যান শাহ আলম। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর