রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৪ ০০:০০ টা
ধাপে ধাপে অনুষ্ঠানের পক্ষে ইসি

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি উপজেলা নির্বাচন

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন। শীঘ্রই এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। এ ছাড়া আজ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সিইসির নেতৃত্বে বেলা ১১টায় কমিশনের সভা হওয়ার কথা রয়েছে। জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে অন্তত ১১৫টি, মার্চে ২২৩টি, এপ্রিলে ৩৫টি, মে-তে ৮৫টি ও জুনে ১৮টি উপজেলার মেয়াদ উত্তীর্ণ হচ্ছে। বাকিগুলো জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে উত্তীর্ণ হবে।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, আজ কমিশনের বৈঠক শেষেও দেওয়া হতে পারে তফসিল। তা না হলে কাল-পরশু দেওয়া হবে এ নির্বাচনের তফসিল। আর গতকালের বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১৮ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ও ১৮ থেকে ২৫ মার্চ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ২০ ফেব্রুয়ারিকেই ভোট গ্রহণের দিন হিসেবে পছন্দের তালিকায় রাখা হয়েছে। কেননা এ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা থাকেন শিক্ষকরা। এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে কিছু উপজেলায় নির্বাচন করা হবে। গতকাল শিক্ষা, স্থানীয় সরকার এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পরই চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের উদ্যোগ নিল ইসি। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা না থাকলেও স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুরোধে স্থানীয় সরকারের এ প্রতিষ্ঠানের ভোট পরিচালনা করে সাংবিধানিক সংস্থাটি। সিইসি বলেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি কতগুলো উপজেলার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এগুলো করতে আইনি বাধ্যবাধ্যকতা আছে। তবে এটা আমরা দেখেশুনে যাতে করে শিক্ষার্থীদের কম সমস্যা হয় এবং আইন যাতে ভাঙতে না হয় সেগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। দেশে বর্তমানে ৪৮৭টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। এর মধ্যে শতাধিক উপজেলার নির্বাচনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হচ্ছে ফেব্রুয়ারিতে। গতকাল বিকাল ৩টায় ইসির সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে শিক্ষা সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব কাজী আখতার হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মহাপরিচালক শ্যামলকান্তি ঘোষ, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন, স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম-সচিব আকরাম আল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে চার নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ সাদিকসহ ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক শেষে সিইসি জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। সব কিছু যাচাই করে শীঘ্রই ইসি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। রবিবার কমিশন সভা শেষে তফসিল ঘোষণা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, রবিবার দেখি মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেব। আমরা যখন সিদ্ধান্ত নেব তখন আপনারা জানতে পারবেন। বৈঠকের বিষয়ে কাজী রকিব জানান, এটা প্রিপারেটরি মিটিং ছিল। সামনে এসএসসি ও পরে এইচএসসি পরীক্ষা রয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ায় গুড অ্যাডভানটেজ হয়েছে ইসির জন্য। তবে এসএসসি পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষাটি দেশব্যাপী হয়। সে জন্য যতটুকু সম্ভব ছাত্রদের ডিস্টার্ব না করে কীভাবে করা যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চাওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। এখন আমরা বসে স্থির করব কবে নির্বাচন করা হবে। আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় ফেব্রুয়ারি থেকে একাধিক দিনে নির্বাচন শুরু করার কথা জানান সিইসি। সিইসি বলেন, আমদের আইনি বাধ্যবাধকতা আছে। এ সময়ের মধ্য নির্বাচনটি করতে হবে। অনেক ম্যাচিউরড হয়ে গেছে। এখন আমরা নিজেরা যাচাই-বাছাই করে সুবিধাজনক সময়ে করব।
ধাপে ধাপে নির্বাচন : এক দিনে না করে একাধিক দিনে পর্যায়ক্রমে করার বিষয়ে যৌক্তিকতা তুলে ধরে সিইসি বলেন, একসঙ্গে বিরাট সমস্যা হবে। কারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর বিরাট প্রভাব পড়বে। তাই সেভাবে ধাপে ধাপে করতে হবে। কতগুলো সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। মেয়াদোত্তীর্ণের সঙ্গে সঙ্গে করার চেষ্টা হবে। ফেব্রুয়ারিতে অন্তত ১১৫, মার্চে ২২৩, এপ্রিলে ৩৫, মে-তে ৮৫ ও জুনে ১৮টি উপজেলার মেয়াদ উত্তীর্ণ হচ্ছে। বাকিগুলো জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে উত্তীর্ণ হবে। 
স্থানীয় সরকার বিভাগের তালিকা নিয়ে ভোটের জন্য উপযুক্ত উপজেলার নাম নির্ধারণ করবে ইসি। দেশে বর্তমানে ৪৮৭টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। এর মধ্যে নলডাঙ্গার গেজেট বিজ্ঞপ্তি পায়নি ইসি। তারাকান্দায় ভোট হয় ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, পটুয়াখালী, বগুড়া ও রাজবাড়ীতে নবগঠিত চার উপজেলা রয়েছে। এ ছয়টি বাদ দিয়ে ৪৮১টি উপজেলার মধ্যে ১১৩টির নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে প্রথম ধাপে। ইসি সচিবালয় জানায়, কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী তফসিল ঘোষণা ১ দিন, মনোনয়নপত্র দাখিল ১৫ দিন, বাছাই ২ দিন, বাছাইয়ের পর আপিল ৩ দিন, আপিল নিষ্পত্তি ৩ দিন, প্রত্যাহার ১ দিন, প্রচারণা ও ব্যালট পেপার মুদ্রণ ২৭ দিন এবং ভোটের জন্য ১ দিন লাগবে। দেড় যুগ পর তৃতীয়বারের মতো উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে। এর আগে ১৯৮৫ সালে প্রথম ও ১৯৯০ সালে দ্বিতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় একাধিক দিনে উপজেলা নির্বাচন হলেও সেবারই প্রথম একযোগে সারা দেশের উপজেলায় নির্বাচন হয়। চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪৮৭ উপজেলায় মোট ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৪২ হাজার ২৯৪টি, ভোটকক্ষ ২ লাখ ৩ হাজার ৭৬৩টি। ৯ কোটি ১৯ লাখ ভোটারের মধ্যে এসব উপজেলায় প্রায় ৮ কোটি ভোটার থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর