রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৪ ০০:০০ টা

চার লেন সড়কের টাকা মার্কেন্টাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি

ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আটকে আছে বেসরকারি মার্কেন্টাইল ব্যাংকে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও ওই টাকা নগদায়ন না করে ব্যাংকটি গড়িমসি করছে। নিরুপায় মন্ত্রণালয় এখন ওই টাকা নগদায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে গত ৬ জানুয়ারি সড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব (আইন ও সংস্থা) আবদুর রৌফ খানের সই করা একটি চিঠি কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের কাছে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আদালতের কোনো স্থিতাবস্থা না থাকা সত্ত্বেও মার্কেন্টাইল ব্যাংক অ্যাডভান্স পেমেন্ট গ্যারান্টি (এপিজি) নগদায়ন না করে সময়ক্ষেপণ করে আসছে। এতে সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। এদিকে আসল (অরিজিনাল) ব্যাংক গ্যারান্টি ফেরত না পাওয়ায় এপিজি-এর অর্থ নগদায়ন করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তবে মন্ত্রণালয় বলছে, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে মতামত দেওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, ঢাকা (জয়দেবপুর)-ময়মনসিংহ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের দুটি প্যাকেজের কাজ নির্মাণের জন্য এইচআরবিসি-ইনট্রাকো (বিডি) জেভি নামে একটি ঠিকাদার কোম্পানির সঙ্গে ২০১১ সালের ২৩ মার্চ চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদার কোম্পানি ওই বছরের ২৭ এপ্রিল মার্কেন্টাইল ব্যাংকে (মতিঝিল শাখা) প্রথম প্যাকেজের বিপরীতে ১২ কোটি ৬২ লাখ ২১ হাজার ৮২০ এবং ২য় প্যাকেজের ২০ কোটি ৩৪ লাখ ৭৩ হাজার ৬৬০ টাকাসহ মোট ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৯৫ হাজার ৪৮০ কোটি টাকার এপিজি (অ্যাডভান্স পেমেন্ট গ্যারান্টি) দাখিল করে। পরদিন ২৮ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দুটি প্যাকেজের এপিজির বিপরীতে মোট ২৭ কোটি ৯৮ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকা অগ্রিম হিসেবে গ্রহণ করে। কিন্তু প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঠিকাদারের চুক্তিতে জালিয়াতি ধরা পড়ায় একই বছরের ১৪ জুলাই সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে এটি বাতিলের নোটিস দেওয়া হয়। বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় গড়ালে শুনানি শেষে ১৮ অক্টোবর আদালত চুক্তি বাতিলের চূড়ান্ত আদেশ দেয়। এরপর ১৯ অক্টোবর সড়ক বিভাগ এপিজির টাকা নগদায়ন করতে ব্যাংকে চিঠি দেয়। কিন্তু সড়ক বিভাগের দাবি করা টাকা আর ঠিকাদারের গ্রহণ করা টাকার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে উল্লেখ করে মার্কেন্টাইল ব্যাংক ওই সময় টাকা নগদায়ন করতে আপত্তি জানায়। এদিকে বিষয়টি আবারও আদালতে গড়ালে এর ওপর স্থিতাবস্থা জারি হয়। আইনি প্রক্রিয়ায় ওই স্থিতাবস্থা চূড়ান্তভাবে প্রত্যাহার হওয়ার পর গত বছরের ৪ জুন থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবারও বেশ কয়েকবার চিঠির মাধ্যমে এপিজির টাকা নগদায়ন করার তাগিদ দেয় সড়ক বিভাগ। তবে এবার ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, অরিজিনাল ব্যাংক গ্যারান্টি না পাওয়ায় এপিজি নগদায়নে তাদের প্রক্রিয়াগত সমস্যা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর একটি লিখিত বিবৃতি দেওয়া মাত্রই অ্যাডভান্স পেমেন্ট গ্যারান্টি (এপিজি) নগদায়ন করতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বাধ্য। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক কোনো শর্ত আরোপ করতে পারে না। অথচ মার্কেন্টাইল ব্যাংক একের পর এক শর্ত আরোপ করে নগদায়নে বিলম্ব করছে বলে অভিযোগ করেন ওই কর্মকর্তা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর