শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০১৪ ০০:০০ টা
আদালত অবমাননা

প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদককে জরিমানা

আদালত অবমাননার দায়ে প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। তবে নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন করায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতের কাঠগড়ায় ওই সাংবাদিকের দাঁড়িয়ে থাকার সময়কে তার শাস্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এই সাংবাদিককে পাঁচ কার্যদিবসে কয়েক ঘণ্টা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সংবিধানের ১০৮ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ সাজা দেন হাইকোর্ট। রায় ঘোষণার সময় মতিউর রহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আর মিজানুর রহমান খান আদালতের নির্দেশে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়- আলোচ্য নিবন্ধে মিজানুর রহমান খান আদালত অবমাননা করেছেন। তিনি আদালতের কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং জনগণের কাছে আদালতকে বিতর্কিত করেছেন। আদালতের এখতিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ করে এমন কোনো সংবাদ বা প্রবন্ধ প্রকাশ অথবা প্রচারের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। উচ্চ আদালত থেকে হওয়া জামিন আদেশ নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি 'এক মিনিটে একটি আগাম জামিন কীভাবে' ও ১ মার্চ 'ছয় থেকে আট সপ্তাহের স্বাধীনতা' শিরোনামে মিজানুর রহমান খানের দুটি নিবন্ধ প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়। ওই দুটি নিবন্ধ নজরে আনা হলে ২ মার্চ আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। পরে আরেকটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রুল জারির পাশাপাশি মিজানুর রহমান খানকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ৬, ৯, ১০ ও ১১ মার্চ এ বিষয়ে হাইকোর্টে শুনানি হয়। আদালতের আদেশে হাজির হয়ে ওই চার দিনের শুনানিতে মিজানুর রহমান খান কাঠগড়ায় ছিলেন। মতিউর রহমান ১০ মার্চ আইনজীবীর মাধ্যমে রুলের জবাব দেন। এ জবাবের বিষয়টি নিশ্চিত করতে তাকে ১১ মার্চ হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আদালতে হাজির হয়ে নিজের জবাবের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আদালতে প্রথম আলোর পক্ষে শুনানি করেন ড. শাহদীন মালিক। রুলের পক্ষে ও প্রথম আলোর বিরুদ্ধে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম, ব্যারিস্টার খায়রুল আলম চৌধুরী, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট এম আসাদুল্লাহ ও অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন দোলন।

প্রথম আলোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানিতে সাংবাদিকদের সততা নিয়ে ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদের অসত্য বক্তব্যের প্রতিবাদ ও প্রকাশকে কেন্দ্র করে দৈনিক সমকাল ও নয়া দিগন্তের সম্পাদক ও প্রকাশক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ঢাকাস্থ বরিশাল বিভাগীয় সাংবাদিক সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের বিরুদ্ধে রুল জারি করে আট সাংবাদিককে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১২ মার্চ সাংবাদিকরা আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন করেন। পরে আদালত তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।

সর্বশেষ খবর