শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০১৪ ০০:০০ টা
কুমিল্লায় গৃহবধূ হত্যা

৬৫ ফুট মাটির নিচ থেকে উঠল শাহিনার লাশ

৬৫ ফুট মাটির নিচ থেকে উঠল শাহিনার লাশ

প্রবাসী স্বামীর ভাড়াটে খুনি দ্বারা হত্যার ৩৫ দিন পর ৬৫ ফুট গভীর ডিপ টিউবওয়েল থেকে গৃহবধূ শাহিনার লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। খননকর্মীরা ৬ দিন কাজ করে ৮০ ফুট গভীর ডিপ টিউবওয়েলের ৬৫ ফুট পাইপ উত্তোলনের পর গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় এ লাশ উদ্ধার করা হয়। কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর ইউপির ছেচড়াপুকুরিয়া গ্রামের প্রফেসর আবুল হোসেনের বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপ থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ শাহিনার লাশ একনজর দেখার জন্য ভিড় জমায়। সকাল সাড়ে ১০টায় ৮০ ফুট গভীর পাইপের ৬৫ ফুট উত্তোলন শেষে লাশ দেখা যায়। পরে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘাতকরা হত্যার পর কাপড় পেঁচিয়ে মাথার অংশ নিচের দিকে দিয়ে পাইপের ভেতরে ফেলে দেয়। লাশটি দ্রুত পাইপের নিচের দিকে চলে যাওয়ার জন্য ইটভর্তি একটি ব্যাগের সঙ্গে রশি দিয়ে লাশটি বেঁধে দেয়। লাশ উঠানোর পর স্বজনদের কান্নায় উপস্থিত অন্যদের চোখেও পানি নেমে আসে। নিহতের দুই ছেলে ইমরান হোসেন (১১), তুষার আহমেদ (৮) ও একমাত্র মেয়ে রোজিনা আক্তার (৫) এবং মা জামিনা খাতুনকে (৬৫) এ সময় আহাজারি করতে দেখা যায়। ইমরান হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, আমার আম্মুকে যেভাবে মেরে পাইপের ভেতরে ফেলে দিয়েছে তাদেরকেও মেরে সেইভাবে পাইপের ভেতরে ফেলে দেওয়া হোক। দেবিদ্বার থানার এস আই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ্ কামাল আখন্দ জানান, গৃহবধূ শাহিনা নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে আমরা বিভিন্নভাবে তদন্ত চালাই। গত ৬ মার্চ রাতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ছেচরাপুকুরিয়া গ্রামের সোলায়মান মিয়ার ছেলে আবদুল করিমকে সন্দেহভাজনভাবে ময়নামতি সেনানিবাস এলাকা থেকে আটক করি। রাতে তার জবানবনন্দি নিলে আবদুল করিম (৩৫) হত্যার ঘটনা স্বীকার করে বলে, শাহিনাকে হত্যা করার জন্য শাহিনার স্বামী মোবারক হোসেন তাদের সঙ্গে দুই লাখ টাকা চুক্তি করে। ওই চুক্তি মোতাবেক আবদুল করিম গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে আরও ৪/৫ জনকে নিয়ে শাহিনাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। শাহিনাকে হত্যার পর গ্রামের একটি অব্যবহৃত গভীর নলকূপের (ডিপ টিউবওয়েল) পাইপের ভেতর ফেলে দেয়। গত ৮ মার্চ কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সফিকুল ইসলামের আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিমলূক স্বীকারোক্তিতে আবদুল করিম জানায়, নিহতের প্রবাসী স্বামী মোবারক হোসেনের সঙ্গে ২ লাখ টাকার চুক্তিতে এক লাখ টাকা নগদ পেয়ে করিম তার ২ সহযোগী নিয়ে শাহিনাকে হত্যা করে অব্যবহৃত গভীর নলকূপের পাইপের ভেতরে ফেলে দেয়। দেবিদ্বার থানার ওসি তারেক মো. আবদুল হান্নান জানান, দেবিদ্বার থানায় ১০ জনের নামে শাহিনার বড় ভাই মজিবুর রহমান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

 

সর্বশেষ খবর