শিরোনাম
বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪ ০০:০০ টা

দেলোয়ারসহ ১৫৪ জামায়াত নেতা-কর্মীর বিচার শুরু

রাজধানীর মতিঝিল থানায় করা দ্রুত বিচার আইনের একটি মামলায় জামায়াত-শিবিরের ১৫৪ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। একই সঙ্গে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১২ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়েছে। ঢাকার ৬ নম্বর দ্রুত বিচার আদালতের হাকিম মোহাম্মাদ তারেক মইনুল ইসলাম ভূঁইয়া গতকাল এ আদেশ দেন।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পিপি আবদুল্লাহ আবু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২-এর ৪ ও ৫ ধারায় আসমিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১২ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়েছে। এর ফলে এ মামলায় জামায়াত-শিবিরের ১৫৪ নেতা-কর্মীর বিচার শুরু হলো। এই মামলার অভিযোগ গঠনের সময় ৬০ আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। এ সময় মামলার অভিযোগ পড়ে শোনানো হলে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। এ ছাড়া ৯৪ আসামি পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। এদের মধ্যে ১৬ আসামি মামলার শুরু থেকেই পলাতক এবং ৭৮ আসামি জামিনে গিয়ে পলাতক আছেন। আবদুল্লাহ আবু বলেন, এ মামলায় জামায়াতের নির্বাহী সদস্য শফিকুল ইসলাম মাসুদ এবং ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ও ফখরুদ্দিন মানিকসহ আসামি ১৫৪ জন। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদালত সর্বোচ্চ পাঁচ বছর ও সর্বনিু দুই বছর কারাদণ্ড দিতে পারবেন। এর আগে এ মামলার দায় থেকে মুক্তির জন্য আসামিদের পক্ষে অব্যাহতির আবেদন করেন আইনজীবী এস এম কামাল। তিনি বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা আইনসম্মত হয়নি। এ মামলার আসামিদের মধ্যে পাঁচজন হচ্ছে শিশু। তাদের শিশু আইনে বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু বিচারক বিষয়টি আমলে না নিয়ে আমাদের আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। এ ছাড়া একই ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। এ তিন মামলার জব্দ তালিকা একই। এ কারণে আমরা ফৌজদারি কার্যবিধির ২৩৫ ও ২৩৯ ধারায় দরখাস্ত দিয়ে তিনটি মামলা একই সঙ্গে বিচারের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এ আবেদনও খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক। আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। ন্যায়বিচার পেলে আসামিরা খালাস পাবেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে রয়েছেন জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মো. ইজ্জত উল্লাহ সানা, মতিঝিল থানা জামায়াতের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি শফিক মাইনু, সাবেক ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার খন্দকার আবদুর রব, মতিঝিল থানা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের, শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আহাম্মদ ইয়াসিন ও রফিকুল ইসলাম। মামলায় অভিযোগ করা হয়, রাজধানীর মতিঝিল থানা এলাকার শাপলা চত্বর, মতিঝিল সিটি সেন্টারের সামনে, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, দৈনিক বাংলার মোড় ও ফকিরাপুল মোড় এলাকায় অতর্কিতভাবে জামায়াত ও শিবিরের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান। এ সময় আসমিরা জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তি দাবিসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিলের দাবিতে লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে পুলিশের প্রতি চড়াও হন। এ ছাড়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি, জনমনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে একযোগে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি মিছিল বের করে আসামিরা পুলিশ হত্যার উদ্দেশ্যে দফায় দফায় ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা সৃষ্টি করেন, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুর করেন। এ সময় অগ্রণী ব্যাংকের লিফটম্যান মো. জাফর মুন্সি গুরুতর আহত হন। এ ছাড়া পুলিশের একটি ভ্যান ও একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেন আসামিরা। পরে এ ঘটনার তদন্ত করে মতিঝিল থানার এসআই হাবিবুর রহমান ২০১৩ সালের ২৫ ফেব্র“য়ারি জামায়াত-শিবিরের ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

সর্বশেষ খবর