শিরোনাম
বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪ ০০:০০ টা

বিএনপির তৃণমূল নেতাদের শাস্তি প্রত্যাহার হচ্ছে

বিএনপির তৃণমূল নেতাদের শাস্তি প্রত্যাহার হচ্ছে

বিএনপির তৃণমূলের দেড় শতাধিক নেতার বহিষ্কারের খড়গ উঠে যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়াসহ ওই সময় নানা কারণে শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। তৃণমূলে সংগঠনকে শক্তিশালী ও আন্দোলনমুখী করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত হওয়ার পর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ইতিমধ্যে শতাধিক নেতার বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয়েছে। অন্যদেরও পর্যায়ক্রমে করা হবে। তবে বহিষ্কার হওয়া নেতাদের আবেদন করার শর্তেই শাস্তি প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যারা আবেদন করছেন তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হচ্ছে। অনেকের শাস্তি এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে। যারা আবেদন করবেন তাদের সবারই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হবে। তৃণমূলে সংগঠনকে জোরদারের পাশাপাশি আন্দোলন সামনে রেখে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ সূত্র জানায়, উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের উপজাতি বিষয়ক সম্পাদক ম্যা ম্যা চিং, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেনসহ তৃণমূলের অন্তত ১৬০ জন নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। ইকবাল হোসেন আবেদন করলে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইভাবে প্রায় ১০০ নেতা কেন্দ্রে আবেদন করে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তবে ম্যা ম্যা চিংসহ আরও অনেকেই এখনো আবেদন করেননি। বহিষ্কার হওয়া অনেক নেতাই উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বিএনপির জেলাপর্যায় থেকে সুপারিশ করা প্রার্থীরা তৃতীয়, চতুর্থ এমনকি অনেকে জামানত হারিয়েছেন বলেও জানা গেছে। দলের আরেকটি সূত্র জানায়, বহিষ্কার প্রত্যাহার হওয়ার জন্য নেতাদের জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সুপারিশ নিতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে যেসব আবেদনকারীর সঙ্গে জেলা নেতৃত্বের সম্পর্ক ভালো না, তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। সুপারিশ না থাকায় তারা কেন্দ্রে আবেদন করেও ফল পাচ্ছেন না। এ জন্য দলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার দ্বারে দ্বারেও তাদের ধরনা দিতে হচ্ছে। প্রভাবশালী নেতাদের সুনজরে পড়লেই তারা জেলা নেতাদের সুপারিশ পাচ্ছেন।

কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্র জানায়, গত দুই দিনে চট্টগ্রাম জেলা দক্ষিণের সদস্য ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. লিয়াকত আলী, ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে এম তোফাজ্জল হক, মাগুরার শালিকা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মিল্টন, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুসাহিদুল আলম মুরাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। জানা গেছে, তৃণমূল নেতারা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে দলীয় গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারা অনুযায়ী বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেন। তাদের আবেদন যাচাইবাছাই করে দফতর সম্পাদক রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে একই ধারা অনুযায়ী বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয়। প্রত্যাহার হওয়া চিঠিতে ভবিষ্যতে দলের নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্য বলা হয়েছে। এদিকে গত সোমবার রাতে রংপুর বিভাগে বিএনপি সমর্থিত নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে গুলশান কার্যালয়ে বেগম খালেদা জিয়ার রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। তৃণমূল নেতারা এ সময় উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার ভূমিকার সমালোচনা করেন। উপজেলা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কারণেই তৃণমূলে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে এমনকি অনেকের ওপর বহিষ্কারের খড়গ এসেছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। কেন্দ্রের কারণে তৃণমূলে কোন্দল বাড়ছে বলেও অভিযোগ চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের।

সর্বশেষ খবর