শিরোনাম
বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪ ০০:০০ টা

অপকর্মে কনসাল পদ হারালেন সেই শাহজাহান

অপকর্মে কনসাল পদ হারালেন সেই শাহজাহান

বাংলাদেশে অনারারি কনসাল হিসেবে মোহাম্মদ শাহজাহানের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেনি মলদোভা সরকার। ওই পদে নতুন কাউকে নিয়োগও দেওয়া হয়নি। এর ফলে বাংলাদেশে মলদোভার অনারারি কনস্যুলেট বন্ধ হয়ে গেছে। জানা গেছে, মলদোভা সরকার বাংলাদেশে অনারারি কনসাল হিসেবে মোহাম্মদ শাহজাহানকে আর না রাখা ও নতুন করে কাউকে নিয়োগ না দেওয়ার কথা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তা মোহাম্মদ শাহজাহানকে অবহিত করে। একই সঙ্গে অনারারি কনসাল হিসেবে বাংলাদেশ সরকারপ্রদত্ত সুযোগ-সুবিধাও বাতিল করা হয়েছে। মলদোভা সরকার আনুষ্ঠানিক চিঠিতে মোহাম্মদ শাহজাহানের সঙ্গে ১৫ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া এবং বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশে অনারারি কনস্যুলেট বন্ধ করার কথা জানিয়েছে। তবে স্থানীয় কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, মোহাম্মদ শাহজাহান সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এসব কথা দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে এসেছে এবং তা মলদোভা সরকারের নজর এড়ায়নি।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র শাহজাহানের চুক্তি নবায়ন না হওয়ার নেপথ্যে বিশেষ তিনটি ঘটনা উল্লেখ করে। প্রথমত, মোহাম্মদ শাহজাহান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান থাকাকালে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হওয়ার পরও আগের মতো প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনেরও তোয়াক্কা করেন না। দ্বিতীয়ত, তার বিরুদ্ধে নৈতিক অবক্ষয় এমনকি নারীঘটিত কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে। তৃতীয়ত, এক-এগারোর সময় তিনি দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় আবাসন কোম্পানির জমি অবৈধভাবে নিয়ে নেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এটি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। অনারারি কনসাল পদে থেকে এসব ঘটনা সংঘটিত হওয়ায় এর সঙ্গে মলদোভা সরকারের প্রসঙ্গও চলে আসে। বিতর্ক এড়াতেই অনারারি কনসাল পদে মোহাম্মদ শাহজাহানের মেয়াদ নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিতে মলদোভাকে উদ্বুদ্ধ করা হতে পারে বলে ঢাকার সূত্রগুলো জানিয়েছে।
এদিকে মোহাম্মদ শাহজাহান ১৯ আগস্ট ঢাকা ও চট্টগ্রামে সব কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের সব সংস্থা, অনারারি কনস্যুলেট ও কনসালকে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মলদোভার অনারারি কনসাল পদে তার আর না থাকার কথা জানান। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে মলদোভার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার বিভাগের মহাপরিচালকের সঙ্গে তার স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী তাকে ১৫ বছরের জন্য বাংলাদেশে ওই দেশটির অনারারি কনসাল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। চুক্তি নবায়নের সুযোগ থাকার কথাও তাতে উল্লেখ ছিল। এ বছরই ওই মেয়াদ শেষ হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়- ইউরোপীয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্তি উপলক্ষে মলদোভা সরকার বিভিন্ন দেশে তার কনস্যুলার ও কূটনৈতিক কার্যক্রম পর্যালোচনা করেছে। মলদোভা সরকার তার নীতির অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো ছাড়া প্রায় অর্ধেক অনারারি কনস্যুলেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মোহাম্মদ শাহজাহানের দাবি, মলদোভার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে তাদের অনারারি কনস্যুলেট ও কনসালের ভূমিকা ও সেবার প্রশংসা করলেও দুঃখের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। বাংলাদেশের পররাস্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি নোটভারবাল/বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।

সর্বশেষ খবর