বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০১৫ ০০:০০ টা

কুমিল্লায় বাসে হঠাৎ পেট্রলবোমা দগ্ধ ৭

কুমিল্লায় বাসে হঠাৎ পেট্রলবোমা দগ্ধ ৭

কুমিল্লায় যাত্রীবাহী বাসে বোমা হামলায় দগ্ধদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলায় নারীসহ সাতজন দগ্ধ হয়েছেন। রাঙামাটির উদ্দেশে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ইউনিক পরিবহনের একটি বাসে মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। দগ্ধদের মধ্যে ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের উপদেষ্টা অঞ্জন কুমার দে (৫০) ও রাঙামাটি কলেজের শিক্ষক     রণজিৎ শর্মাকে (৫৫) আইসিইউতে রাখা হয়েছে। আগুনে অঞ্জন কুমার দের ২৬ ভাগ ও রণজিৎ শর্মার ৪৪ ভাগ পুড়ে গেছে। পুড়েছে তাদের শ্বাসনালিও। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এদিকে এ হামলার ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দগ্ধ অন্যরা হলেন- রাঙামাটি জেলার সুধীরচন্দ্র নাথের ছেলে সুমন চন্দ্র নাথ (২৪), গোপালগঞ্জ পৌর এলাকার নবীনবাগের সাঈদুর রহমানের ছেলে ইমরান হোসেন (২৫), রাঙামাটি সদরের বড়ধোনা এলাকার যুক্তমনি চাকমার ছেলে খোকন চাকমা (৩৩), নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার জহিরুল ইসলাম (৩০) ও তার স্ত্রী লাভলী আক্তার (২৫)। তাদের চারজনের শরীরের ১০-২৫ ভাগ পুড়ে গেছে। লাভলী আক্তার ছাড়া সবাই ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। চান্দিনা থানার ওসি রসুল আহমেদ নিজামী জানান, মহাসড়কের চান্দিনার কাঠেরপুল এলাকায় ইউনিক পরিবহনের বাস লক্ষ্য করে পেট্রলবোমা ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে বাসের জানালার গ্লাস ভেঙে ভিতরে আগুন ধরে যায়। বাসে প্রায় ৩৫ জন যাত্রী ছিলেন। তবে কারা, কী কারণে হামলা করেছে তা বলা যাচ্ছে না। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সার্জারি বিভাগের সহকারী ডা. সাদাত আহমেদ সায়েম জানান, রাত ১টায় ৭ জন রোগী বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন। চালক সিরাজুল ইসলাম জানান, চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড অতিক্রম করে পাট গবেষণা কেন্দ্রের সামনে এলে হঠাৎ বাসে বিকট শব্দ হয় এবং আগুন ধরে যায়। জানা গেছে, অঞ্জন কুমার দে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের উপদেষ্টা। অসুস্থ মাকে দেখতে রাঙামাটি যাচ্ছিলেন অঞ্জন কুমার। রণজিৎ শর্মা রাঙামাটি সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। আগুনে তার শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। দগ্ধ খোকন চাকমা আদমজী মিলের কর্মকর্তা। দগ্ধ সুমন ময়মনসিংহের একটি টেক্সটাইল মিলে কর্মরত। দগ্ধদের স্বজনদের আহাজারিতে ঢামেক বার্ন ইউনিটে হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এদিকে ঘটনা তদন্তে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলামুর রহমানকে প্রধান করে ৫ সদস্য ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিকে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক হাসানুজ্জামান কল্লোল দগ্ধ দুজনকে ১৫ হাজার ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ৩ জনকে ১০ হাজার করে টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। এর আগে গতকাল সকালে জেলা প্রশাসক হাসানুজ্জামান কল্লোল, পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন, ডিজিএফআই কর্মকর্তা কর্নেল একেএম নাজমুল হাসান, হাইওয়ে পুলিশের (বাংলাদেশ পূর্বাঞ্চল) এসপি রেজাউল কবির, র‌্যাব-১১ কোম্পানি কমান্ডার খুরশিদ আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসপি শাহ মো. আবিদ হোসেন জানান, জড়িতদের ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল বলেন, এটি পরিকল্পিত ঘটনা। কয়েক মাস অগে নাশকতার সঙ্গে এর যোগসূত্র থাকতে পারে।

সর্বশেষ খবর