সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সংসদ পুতুল নাচের নাট্যশালা, নতুন নির্বাচনই সমাধান : টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্তমান জাতীয় সংসদ শুধুই নিয়ম রক্ষার এবং এটি কেবল ক্ষমতাসীন দলের একচ্ছত্র ভুবনে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, আরেকটি নির্বাচনই পারে জাতীয় সংসদকে কার্যকর করতে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ‘পার্লামেন্টওয়াচ’ বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সার্বিকভাবে সংসদের  কার্যক্রমে আমরা হতাশ। সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলের উপস্থিতি গ্রহণযোগ্য নয়। সংসদীয় আচরণ থেকে ব্যাপক বিচ্যুত হয়েছে। একটি দল বা জোট যাদের সংসদে উপস্থিতি নেই, তাদের নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। প্রতিপক্ষের সমালোচনা আগের সংসদের চেয়ে ১২ গুণ  বেড়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান সংসদ পুতুল নাচের নাট্যশালায় পরিণত হয়েছে। সংসদ বিরোধী দলের সমালোচনা ও ক্ষমতাসীন দলের প্রশংসার স্থান হিসেবে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, সংসদীয় কমিটির মূল দায়িত্ব পালনের প্রতি অনীহা ও সংসদ সদস্যদের অবহেলা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। নবম সংসদে বিরোধী দলের উপস্থিতির হার চার শতাংশ। এবার বিরোধী দলের উপস্থিতি ৫৩ শতাংশ। সেদিক থেকে সংসদে বিরোধী দলের অংশগ্রহণ বেড়েছে। তবে বিরোধী দল কতটুকু বিরোধী তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বিতর্কিত’ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর থেকে প্রশ্নবিদ্ধ ‘প্রধান বিরোধী দল’-এর জোরালো ভূমিকার ঘাটতিসহ নানা কারণে সংসদ প্রত্যাশিত পর্যায়ে কার্যকর হয়নি। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের একচ্ছত্র ভুবন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মূলত বর্তমান জাতীয় সংসদ। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দশম সংসদের দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ অধিবেশন পর্যন্ত সময়ে আইন পাসের জন্য বিল প্রতি ব্যয়িত গড় সময় ও প্রতি কার্যদিবসের সদস্যদের গড় উপস্থিতির হার তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি ও গড় কোরাম সংকট হ্রাস পাওয়ার মতো কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু ‘বিতর্কিত’ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর  থেকে প্রশ্নবিদ্ধ প্রধান বিরোধী দলের প্রত্যাশিত জোরালো ভূমিকার ঘাটতি; সংসদের বাইরের রাজনৈতিক জোট নিয়ে অপ্রাসঙ্গিক সমালোচনা ও অশালীন ভাষার প্রাধান্য; অসংসদীয় আচরণ ও ভাষার ব্যবহার বন্ধে স্পিকারের শক্তিশালী ভূমিকার অনুপস্থিতি; বিধান থাকলেও আন্তর্জাতিক চুক্তিবিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত না হওয়া; আইন প্রণয়ন; প্রশ্নোত্তর ও জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিসের আলোচনায় সদস্যদের কম অংশগ্রহণ; কমিটির সদস্যদের ব্যবসায়িক সংশ্লিষ্টতাসহ স্বার্থের দ্বন্দ্ব; সংসদীয় কার্যক্রমে তথ্যের উন্মুক্ততা ও অভিগম্যতার ঘাটতি ইত্যাদি কারণে সংসদ প্রত্যাশিত পর্যায়ে কার্যকর হয়নি। প্রতিবেদনটি ‘পার্লামেন্টওয়াচ’ ধারাবাহিকের ১২তম ও দশম জাতীয় সংসদের ওপর দ্বিতীয় প্রতিবেদন। ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৫ সালের জুলাই পর্যন্ত সময়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী উপ-নির্বাচহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসানসহ অনেকেই এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর