বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাংলাদেশে আইএস নিয়ে নিশ্চিত নয় যুক্তরাষ্ট্র

উদ্বেগ নেই, সতর্ক ইইউ-ফ্রান্স

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট (আইএস) কোন মাত্রায় তৎপরতা চালাচ্ছে বা চালাচ্ছে না, তা বলা কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জন কারবি। গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে কারবি এ মন্তব্য করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশে কানাডার নাগরিকদের জন্য নতুন করে সতর্কবার্তা হালনাগাদ করা হয়েছে এবং ইইউ ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, এখন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ নেই তবে তারা সতর্ক রয়েছেন।

বাংলাদেশে ইতালির এক ত্রাণকর্মীকে হত্যাসহ কয়েকটি হামলার দায় আইএস স্বীকার করেছে বলে উল্লেখ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এই মুখপাত্রের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আইএস কতটা প্রভাব বিস্তার করেছে? জবাবে মুখপাত্র বলেন, আইএসের দাবির বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। অন্য সব ক্ষেত্রের মতো এসব দাবিকে তারা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে সহায়তা করতে বাংলাদেশ ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের সঙ্গে তারা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন। বাংলাদেশে সত্যিই আইএসের উপস্থিতি আছে কি নাÑ এমন প্রশ্নে কারবি বলেন, বাংলাদেশে কোন মাত্রায় আইএস তৎপরতা চালাচ্ছে বা চালাচ্ছে না, তা বলা কঠিন। এর সত্যতা নিশ্চিত করার মতো অবস্থানে আমি নেই। কারবি উল্লেখ করেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র সাহায্য করতে চায়। দায় নিশ্চিত করার কাজটি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর। তবে আইএসের দাবিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়াও দূরদর্শিতা।

কানাডার সতর্ক বার্তা হালনাগাদ : বাংলাদেশে কানাডার নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা আবারও হালনাগাদ করেছে সে দেশের সরকার। হোসনি দালানে শিয়া সমাবেশে বোমা হামলার প্রেক্ষাপটে গতকাল হালনাগাদ করা বার্তায় কানাডার সরকার উচ্চ মাত্রার সতর্কতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে। এতে জঙ্গি হামলার ঝুঁকি থাকার কথাও বলা হয়েছে। কানাডা সরকারের বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উচ্চ পর্যায়ের ঝুঁকি রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরের শেষার্ধে যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার সরকার পশ্চিমা স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের ওপর হামলার শঙ্কা প্রকাশ করে তাদের নাগরিকদের সতর্ক করেছিল। এই হামলা যে কোনো সময় যে কোনো স্থানে নির্বিচারে হতে পারে। এ জন্য বিদেশিদের সমাগমের সব স্থান পরিদর্শন ও গাড়ি ছাড়া চলাচল থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে কানাডা। এই বার্তায় ইতালির নাগরিক তাভেলা, জাপানের হোশি কোনিও হত্যাকাণ্ড ও হোসনি দালানে বোমা বিস্ফোরণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে কানাডার নাগরিকদের উদ্দেশ্য করে আরও বলা হয়, ভ্রমণের সিদ্ধান্তের দায়-দায়িত্ব একান্তই আপনার নিজস্ব। বিদেশে নিরাপত্তার দায়িত্বও আপনার। তবে কানাডার সরকার বিদেশে তার নাগরিকদের নিরাপত্তা বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ পরামর্শ হিসেবে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য উপস্থাপন করে থাকে। এর আগে, গত সেপ্টেম্বরের শেষার্ধ থেকেই পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো তাদের নাগরিকদের সতর্ক করে আসছে। সর্বশেষ হোসনি দালানে বোমা হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আবার সতর্কতা হালনাগাদ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া। এবার করলো কানাডা।

নিরাপত্তা উদ্বেগ নেই, তবে সতর্ক ইইউ ও ফ্রান্স : বাংলাদেশে নিরাপত্তা নিয়ে এখন আর উদ্বেগ নেই তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় সতর্ক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত। গতকাল রাজধানীর একটি জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে এক কর্মশালা শুরুর আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইইউ ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত এই মন্তব্য করেন। ইইউ রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়দু বলেন, এ মুহূর্তে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ নেই। তবে সব পরিস্থিতির ব্যাপারে তারা সতর্ক আছেন। বাংলাদেশ সরকার যে তদন্ত করছে, এ ব্যাপারে তারা সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, কিছুদিন আগের পরিস্থিতির কারণে ঢাকার বাইরের প্রকল্প বন্ধ ছিল। এখন আস্তে আস্তে ঢাকার বাইরের সব প্রকল্প চালু করবেন তারা। ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সোফি অবার্ট বলেন, এ মুহূর্তে উদ্বেগের কিছু নেই। তবে তারা সতর্ক আছেন। কূটনৈতিক এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করায় বাংলাদেশ সরকারের ওপর তারা বেশ সন্তুষ্ট। এ কারণে সরকারকে ধন্যবাদও জানান এই কূটনীতিক।

সর্বশেষ খবর