বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

নতুন দল নিবন্ধনের সুযোগ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন দল নিবন্ধনের সুযোগ নেই

দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশোধিত আইনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, পৌরসভা নির্বাচনের জন্য সামনে কম সময় হাতে থাকায় বিধিমালা প্রস্তুতের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কাজ এগিয়ে রাখছি। এ ছাড়া আসন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে সময় স্বল্পতার কারণে নতুন কোনো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল ঢাকার উত্তর সিটির জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিইসি। পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকারের আইন সংশোধন মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের দুই সপ্তাহ পার হলেও অধ্যাদেশ না হওয়ায় এ কথা বলেন তিনি। সিইসি বলেন, আমরা ওয়েট করছি। আইনের আলোকে কাজ করতে হবে। খুব কম সময় পাব। আইনের কপি হাতে না পেলে এগোনো সম্ভব হবে না বলেন সিইসি। এদিকে আগামী নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ও ডিসেম্বরের শেষে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। নির্বাচন কমিশন আয়োজিত গতকালের মতবিনিময় সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক, জাবেদ আলী, মো. শাহনেওয়াজ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম ও উত্তর সিটির কাউন্সিলররাসহ সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। গতকাল শেরেবাংলানগরের এনইসি মিলনায়তনে ঢাকা সিটির জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন সিইসি।

দলভিত্তিক নির্বাচন অনুষ্ঠানে সাংবিধানিক সংস্থাটির নির্বাচন পরিচালনা বিধি ও আচরণ বিধিমালা প্রস্তুতের প্রসঙ্গ তুলে ধরে সিইসি বলেন, মন্ত্রিসভায় আইন সংশোধন অনুমোদন হয়েছে। অধ্যাদেশের জন্য আমরা অপেক্ষায় রয়েছি। পৌর নির্বাচনের জন্য সামনে কম সময় হাতে থাকায় বিধিমালা প্রস্তুতের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কাজ এগিয়ে রাখছি। ৮ নভেম্বর থেকে সংসদে অধিবেশন শুরু হওয়ায় প্রস্তাবিত সংশোধনী বিল আকারে উপস্থাপনেরও সুযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে অধ্যাদেশও হতে পারে। তা না হলে সংসদে তুলতে হবে। তার জন্য কিছুটা সময় দরকার, আমরা কিছু কাজ এগিয়ে রাখছি। আইনটি হাতে পেলে আমরা স্বল্প সময়ে বিধিমালা জারির ব্যবস্থা নেব বলেন সিইসি।

আগ্রহী দলকে স্বতন্ত্র হওয়ার পরামর্শ : স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী নতুন দলের প্রার্থীদের স্বতন্ত্র হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সিইসি। সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন জানান, জাতীয় নির্বাচনের আগে নতুন দলের জন্য নিবন্ধন আবেদন করার সুযোগ দিলেও সময় স্বল্পতার কারণে স্থানীয় নির্বাচনে তা করার সুযোগ নেই। নতুন দলকে নিবন্ধন দিতে হলে সময় দরকার, আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের দরকার। এখন সে সময় নেই। স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রভিশন রয়েছে। যারা ইচ্ছুক হবে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় কোনো শর্তারোপ করা হচ্ছে কিনা আইনের সংশোধন কপি হাতে না পাওয়ায় তা নিয়ে মন্তব্য করেননি সিইসি। তিনি বলেন, আগেও দলীয় সমর্থনে নির্বাচন হতো। তখন প্রতীক থাকত নির্দলীয়। এবার দলীয়ভাবে প্রতীক দিয়ে এটাকে আনুষ্ঠানিক করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে নির্বাচন হয়। কিন্তু কোথাও পুলিশ দেখি না। নির্বাচনে সহিংসতা হয় শুধু আমাদের এ অঞ্চলে। সহিংসতা ঠেকানোর জন্য পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য থাকবে।

মৃতদের বাদ দিতে সিটিতে ‘এক্সট্রা এফোর্ট’ : হালনাগাদ ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটার বাদ দেওয়ার বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করে সহযোগিতা চেয়েছে ইসি। সিইসি জানান, ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রামে মৃত ভোটার বাদ পর্যাপ্ত হয়নি। স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা এ কাজে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, মৃত ভোটার বাদ দিতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে বাড়তি প্রচেষ্টা (এক্সট্রা এফোর্ট) চালানো হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট কবরস্থান ও শ্মশান থেকে সদ্য মৃতদের তালিকা দিয়ে, মৃত্যু নিবন্ধন তথ্য দিয়ে এ কাজে সহায়তা দেবেন। পর্যায়ক্রমে ঢাকা দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করা হবে বলে জানান তিনি। উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের উদ্ধৃতি দিয়ে সিইসি বলেন, মেয়র বলেছেন, দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে হালনাগাদ ভোটার তালিকা নির্বাচন কমিশনে দিয়ে দেবেন।

সর্বশেষ খবর