বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা
দক্ষিণ এশিয়ায় ভূমিকম্প

প্রাণহানী বেড়ে ৪০০ উদ্ধার তৎপরতা শুরু

প্রতিদিন ডেস্ক

প্রাণহানী বেড়ে ৪০০ উদ্ধার তৎপরতা শুরু

পাকিস্তান-আফগানিস্তান ভূমিকম্প : ভূমিকম্পে আফগানিস্তান নিহত স্কুল শিক্ষাথীদের সামনে রেখে স্বনরা কান্না ভেঙে পড়েন (উপরে) পাকিস্তানে গতকাল ধ্বংসস্তূপ থেকে মালামাল উদ্বার করেছেন এক ব্যক্তি । -এএফপি

ভূমিকম্পে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন উদ্ধারকর্মীরা। এদিকে গত পরশু দিনের ভূমিকম্পের সঙ্গে ২০০৫ সালের ভূমিকম্পের মিল দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। ওই ভূমিকম্পে যারা বেঁচে গেছেন তাদের মধ্যে বেশি আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ২০০৫ সালের ৮ অক্টোবর পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হন প্রায় এক লাখ ২৮ হাজার মানুষ, আর গৃহহীন হয়ে পড়েন অন্তত ৩৫ লাখ মানুষ। ২০০৫ সালের ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া পাকিস্তানের নাগরিক শাহনাজ রাশেদ বলেন, ‘ওই ভূমিকম্পে আমার সাত বছরের মেয়েটি মারা যায়। এরপর সোমবারও একই ধরনের ভূমিকম্প হয়। আমার কাছে মনে হচ্ছিল কেয়ামত নাজিল হয়েছে।’ গতকাল সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ভূমিকম্পে প্রায় ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ চিত্র এখনো স্পষ্ট নয়। উদ্ধারকাজ চলছে। পাকিস্তানের জাতীয় দৈনিক ডন-এর অনলাইন সংস্করণের খবরে জানানো হয়, ভূমিকম্পে পাকিস্তানে কমপক্ষে ৩১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই হাজার মানুষ।  দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। এদিকে বিবিসির অনলাইনের খবরে জানানো হয়, আফগানিস্তানের প্রধান নির্বাহী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭৬ জন নিহত ও ২৬৮ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভূকম্পন ভারতেও অনুভূত হয়েছে। উত্তর ভারতে চারজন নিহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করছেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা। দেশ দুটির কর্মকর্তারা জানান, উদ্ধার তৎপরতার গতি বাড়ানো হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের আশপাশের এলাকাগুলোর প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির খবর আসতে কয়েক দিন লেগে যেতে পারে।

 

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, সবচেয়ে অগ্রাধিকার পাবে জীবন বাঁচানোর কাজ। দিন-রাত উদ্ধারকাজ চলবে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্তি¡ক জরিপ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের জুরম জেলা। এলাকাটি হিন্দুকুশ পাহাড়ি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। রাজধানী কাবুল  থেকে ২৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এলাকাটি অবস্থিত। এদিকে পাকিস্তানের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে অনেকে গত রাত হিমশীতল আবহাওয়ার মধ্যেই বাইরে রাত কাটিয়েছেন। ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পনের ভয়ে  কোনো ভবনের ভিতরে তারা আশ্রয় নেননি বলে গতকাল পাকিস্তানি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পেশোয়ার শহরের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা লতিফ-উর-রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার অভিযান চলছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে কম্বল, তাঁবু ও স্লিপিং ব্যাগ সরবরাহ করা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও বেসরকারি কর্তৃপক্ষ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ এবং উদ্ধার তৎপরতা চালাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে বলে  দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ যুক্তরাজ্য সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে এসেছেন। এএফপি, বিবিসি, টাইমস অব ইন্ডিয়া

সর্বশেষ খবর