কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত লোকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জাসদ সমর্থিত লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে জাসদের এক সমর্থকের মৃত্যুর খবর ওই এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল সকাল ৭টার দিকে উপজেলার চাঁদগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ৬ নভেম্বর রাতে চাঁদগ্রামে আওয়ামী লীগ ও জাসদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আওয়ামী লীগের দুজন ও জাসদ কর্মী বাবুল গুরুতর আহত হন। বাবুলকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ১১ নভেম্বর তার অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বাবুল মারা যান। রাতেই এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জাসদ নেতা-কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের আট নেতা-কর্মীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালান। আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মসফের, ছাত্তার মণ্ডল, মমিন, ছাদেক, মিরাজ, নাসির, মিজান ও বদর মণ্ডলের বাড়ি। এ ছাড়াও লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয় আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল মেম্বার, মালেক, কুদ্দুস, সদর মণ্ডলের বসতবাড়ি এবং কামাল ও মজিবরের মুদি দোকানে। খবর পেয়ে ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ব্যাপারে ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এলাকায় একজন নিহত হওয়ার ঘটনার জেরে তার সমর্থকরা বেপরোয়া অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভাঙচুর চালান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। চার প্লাটুন পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে। উলেখ্য, জাসদ সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের বাড়ি ভেড়ামারা উপজেলায়। এ দুই নেতার সমর্থকরা এলাকায় নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে গত দুই মাসে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে বেকায়দায় পড়েছে পুলিশ প্রশাসন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভেড়ামারা থানার এক এসআই জানান, তাদের এখন ‘শ্যাম রাখি না, কুল রাখি’ অবস্থা।