মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
কলকাতায় চিঠি

কলকাতায় পাকিস্তানি গোয়েন্দা এজেন্ট ধরা পড়ায় চাঞ্চল্য

সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত

প্যারিস ঘটনায় গোটা বিশ্ব যখন তোলপাড়, ঠিক সেই সময় ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ধরা পড়ল আইএসআইয়ের প্রথম সারির এক সন্দেহভাজন এজেন্ট। কলকাতা শহরের বুকে আইএসআই তৎপরতা খুব স্বাভাবিক কিংবা নিয়মিত  ঘটনা নয়। ফলে খাস কলকাতায় আইএসআই এজেন্ট গ্রেফতারের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বর্ধমানের খাগড়াগড়ের জেএমবি জঙ্গিদের বিস্ফোরণের পর আইএসআইয়ের এই এজেন্ট ধরা পড়ায় রীতিমতো উদ্বেগের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ধৃত আখতার খান কলকাতায় বসে পাকিস্তানের করাচিতে পাকিস্তানের মদদপুষ্ট জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। কলকাতায় বসে নিজের আলাদা পরিচয় তৈরি করে ফেলেছিল আখতার। এ রাজ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই জাল নোট ছড়াচ্ছিল সে। তার কাছ থেকে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করেছে কলকাতা পুলিশ।

ভর সন্ধ্যাবেলা কলকাতার কলুটোলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে আখতারকে। পাকিস্তানি নাগরিক আখতার তিলজলায় তার বোনের বাড়িতেই ঘাঁটি গেড়েছিল। তবে মধ্য কলকাতার কলিন স্ট্রিটেও তার আলাদা একটি বাড়ি ছিল। কলকাতায় বসে আইএসআইয়ের নির্দেশমতো কাজ করত আখতার। শহরে আইএসআই কার্যকলাপ সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়ার জন্য তাকে জেরা করছে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের প্রাথমিক জেরায় আখতার খান কবুল করেছে। পাকিস্তানে দেড়-দুই বছর ধরে জঙ্গি প্রশিক্ষণও নিয়েছে সে।

কলকাতার রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের একটি অফিসে নিয়মিত কলকাতায় এসে বারটেন্ডারের কাজ শিখে নেয় আখতার। ওই অফিস থেকে শহরের বিভিন্ন পার্টিতে পানীয় সরবরাহ করত। সেই সূত্রে শহরের বড় বড় হোটেলে নিয়মিত যাতায়াত ছিল আখতার ও তার কলকাতার সহযোগীদের। স্পেশাল টাস্কফোর্স (এসটিএফ) এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ অপারেশনে ধরা হয়েছে আখতারকে। গত কয়েক দিন ধরে তার গতিবিধির ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছিল। গোয়েন্দাদের ধারণা, ফোর্ট উইলিয়াম, পানাগড়ের সামরিক ঘাঁটি ও সেনা ছাউনির গোপন নথি এবং ছবি পাকিস্তানে পাচার করার দায়িত্ব ছিল আখতারের ওপর। আখতারের বাবা পাকিস্তানি হলেও মা ভারতীয়। তার বোনের শ্বশুরবাড়ি তিলজলায়। আইএসআইয়ের নির্দেশে ২০১১ সালে নেপাল সীমান্ত হয়ে উত্তরবঙ্গ দিয়ে কলকাতার তিলজলায় পৌঁছে সে। কলকাতায় এসেই সচিত্র ভোটার কার্ড এবং ভারতীয় পাসপোর্ট জোগাড় করে নিয়েছিল আখতার।

সর্বশেষ খবর