বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ প্রতিদিন উধাও নেত্রকোনায়

শেখ সফিউদ্দিন জিন্নাহ

‘তবুও রাখতে হবে তাকে’ শিরোনামে গতকাল দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত প্রধান সংবাদ নিয়ে নেত্রকোনাসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহ তথা  সারা দেশে তোলপাড় শুরু হয়। খেলার মাঠ ও রাজনৈতিক মাঠে সবচেয়ে আলোচিত যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, তার সংবাদটিতে পাঁচ ভাই ও মামার কৃতকর্মের বিবরণ ছিল। ফলত বৃহত্তর ময়মনসিংহে গতকাল দিনভর ছিল আলোচনা। নেত্রকোনার জন্য পাঠানো বাংলাদেশ প্রতিদিনের সব কপি গতকাল সকালেই উধাও হয়ে যায়। কিছু লোক ঢাকা থেকে যাওয়া পত্রিকার গাড়িতে হানা দিয়ে পত্রিকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় প্রতিবাদ করেন হকাররা। তখন তাদেরকেও ভয়-ভীতি, হুমকি দেয়। অনিয়ম ও দখলবাজির হাঁড়ির খবর ফাঁস হয়ে যাওয়ায় চরম বেকায়দায় পড়েছেন উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়। শুধু তাই নয়, তাকে নিয়ে এখন এমপি মহলেও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ‘তবুও রাখতে হবে তাকে’ শিরোনাম ছিল ‘টক অব দ্য নেত্রকোনা অ্যান্ড ময়মনসিংহ’। বাংলাদেশ প্রতিদিনের এদিনের সংখ্যা নিয়ে ছিল কাড়াকাড়ি। জেলা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, বাসস্ট্যান্ড, অফিস, মিল ফ্যাক্টরি, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্রই আলোচনার শীর্ষে ছিল এ সংবাদ। পত্রিকার কিছু কপি ময়মনসিংহ থেকে ও ঢাকা থেকে রেলযোগে গেলে তা নিয়ে মানুষের মধ্যে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। অনেকে সাড়া জাগানো সংবাদটি ফটোকপি করতে ব্যস্ত হয়েছেন। উৎসুক মানুষেরা পত্রিকা আনতে ময়মনসিংহে ছুটে যান। কিন্তু সেখানেও কাড়াকাড়ি। স্থানীয়রা জানান, কাক্সিক্ষত বাংলাদেশ প্রতিদিনের কপি না পেয়ে নেত্রকোনার অনেক প্রত্যন্ত পল্লীতে ফটোকপি সংগ্রহের ধুম পড়ে যায়। কুকীর্তি প্রকাশ করায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাহসী ভূমিকার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নেত্রকোনার সাধারণ মানুষ ও আওয়ামী লীগের যেসব নেতা এতদিন অন্যায়ের প্রতিবাদ করে আসছিলেন তারা এখন উপমন্ত্রী জয় তার ভাই ও মামার প্রতিহিংসার শিকার হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন। তারা বলেন, জয় ও তার ভাই মামার ত্রাসের রাজত্বে শুধু দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণ নির্যাতিত হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের মতো বৃহৎ সংগঠনটিও এদের হাতে বিপর্যস্ত। অবিলম্বে এদের লাগাম টেনে ধরা দরকার। গতকাল জয়ের লালিত সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন পত্রিকা স্টলে গিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সব কপি ছিনিয়ে নেয়। বাধা দিলে তারা হকারদের ওপর চড়াও হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গোপাল পণ্ডিত এবং সুপ্রিয় সরকার রাজু নামের দুই ব্যক্তির হস্তক্ষেপে নেত্রকোনায় পাঠানো বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্যাকেট পথিমধ্যে উধাও হয়ে যায়। পাঠকরা সারাদিনে হন্যে হয়ে পত্রিকা খুঁজে ঢাকায় খোঁজ নেন। নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আশরাফ আলী খান খসরু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পত্রিকার একটি কপিও আমরা পাইনি। পরে ইন্টারনেটে পত্রিকার সংবাদটি ডাউনলোড করে ফটোকপি করেছি। জয়ের লালিত গুণ্ডারা সকাল থেকেই শহরে মহড়া দিচ্ছে। নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগ নেতা লে. কর্নেল (অব.) নূর খান জানান, জয় ও তার পাঁচ ভাই এবং মামা বিমল এরা সবাই সন্ত্রাসী। এদের কোনো বিশ্বাস নেই, কখন কী করে বসে। পুরো নেত্রকোনা এখন গরম হয়ে আছে। আওয়ামী লীগ ও বাস মালিক সমিতির কর্মকর্তারা জানান, যারা বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্যাকেট ছিনতাই করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের এগিয়ে আসা।

এদিকে ‘উপমন্ত্রীর লোক’ পরিচয়ে কয়েক ব্যক্তি পত্রিকার হকার আবু বক্কর সিদ্দিককে হত্যার হুমকি দিয়েছে বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর