শিরোনাম
রবিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ইসি কঠোর না হলে অস্থিরতা বাড়বে

জুলকার নাইন

ইসি কঠোর না হলে অস্থিরতা বাড়বে

শারমিন মুরশিদ

নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ব্রতী’র প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশিদ বলেছেন, বর্তমানে আমরা একটি অস্থির সময় পার করছি। এই অস্থির সময়ের মধ্যেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। তাই নির্বাচন কমিশন বা ইসি যদি কঠোর না হয় তাহলে আসন্ন পৌর নির্বাচন অস্থির সময়কে আরও বেশি অস্থির করবে। তিনি গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন।

ব্রতীর প্রধান নির্বাহী বলেন, মাঠপর্যায়ের বর্তমান অস্থিরতা যত কমানো যায় ততই ভালো। অস্থিতিশীলতা কমিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে নির্বাচন কমিশনকে কঠোরভাবে তাদের আইন প্রণয়ন করতে হবে। আর এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দলগুলো যতখানি স্থিতিশীল আচরণ করবে ততটাই দেশের জন্য ভালো। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো দায়িত্বশীল আচরণ না করলে মাঠ গরম হয়ে যায়, নির্বাচনের সময় মানুষ অস্থির হয় এবং সহিংসতা বেড়ে যায়। কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ই যদি সংসদ সদস্যদের অবাধে অংশ নিতে দেওয়া হয় তাহলে ভবিষ্যতে কী হতে পারে তা ভাবাই যায় না। শারমিন মুরশিদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন নির্বাচনে প্রচার চালানোর সুযোগ পাচ্ছেন। এটা তাদের ক্ষমতার বাইরে থাকার সুবিধা। ক্ষমতায় থাকা বা না থাকা উভয় ক্ষেত্রেই কিছু সুবিধা-অসুবিধা থাকে, এটা তারই একটি অংশ। এ নিয়ে বিতর্ক করার কোনো সুযোগ নেই। তবে দেখতে হবে, মাঠে নিয়ম ভঙ্গ হচ্ছে কিনা। এটা নিয়ন্ত্রণে কমিশন কঠোর না হলে নির্বাচনের সময়টা অস্থির হবে। তিনি বলেন, অনেক সময়ই স্থানীয় প্রশাসন নানা ভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে থাকে, এবারও যদি তেমন হয় তবে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এমন ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যদি প্রতিটি ঘটনায় কঠোর হয় তাহলে আর শঙ্কা থাকে না, কিন্তু কঠোর না হলে সব আয়োজনই ভণ্ডুল হয়ে যাবে। তিনি বলেন, দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দোষণীয় নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন দলীয়ভাবেই হয়। কিন্তু বাংলাদেশে বহুদিন ধরে নির্দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে, সেখান থেকে এখন দলীয়ভাবে আয়োজনের ক্ষেত্রে একটা বড় ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন ছিল। সেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, প্রস্তুতি যেমন জনগণের প্রয়োজন ছিল, তেমনি প্রয়োজন ছিল নির্বাচন কমিশনেরও। এই নতুন চর্চায় অন্তর্ভুক্তির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোরও সময় নিয়ে পুরো পরিস্থিতি ও কর্মপদ্ধতি বুঝে তারপর প্রক্রিয়ায় আসা প্রয়োজন ছিল। তা না হওয়ায় বড় ধরনের ঘাটতি থেকে গেল। শারমিন মুরশিদ বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর গাইডলাইন তৈরি করা প্রয়োজন ছিল। কীভাবে কোন পদ্ধতিতে মনোনয়ন দেওয়া হবে তা নির্ধারণের জন্য তাদের মধ্যে আলোচনার সময় প্রয়োজন ছিল। বিপরীতদিকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনের বিশ্বের নানা প্রান্তের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আচরণবিধির উদাহরণগুলো খতিয়ে দেখে বাংলাদেশের বাস্তবতায় আচরণবিধি তৈরির প্রয়োজন ছিল। শুধু সময় নিলেই এটা হতো। সবমিলিয়ে দলীয় প্রতীকে পৌর নির্বাচনের জন্য স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব, প্রশাসন বা ভোটার কেউই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারেনি। তাই নির্বাচনের আগে আরও সময় নিয়ে আলোচনা করে মানুষের মনে নির্বাচনের নতুন পদ্ধতিটা গাঁথতে দেওয়া দরকার ছিল। তা হলেই আস্থা তৈরি হতো।

সর্বশেষ খবর