বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

দুদকের বারান্দায় মন্ত্রী-এমপি হাজির করেছি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুদকের বারান্দায় মন্ত্রী-এমপি হাজির করেছি

মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেছেন, আমরাই দুদকের বারান্দায় সরকারের উপদেষ্টা, মন্ত্রী ও সচিব এবং সরকারদলীয় এমপিদের ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পেরেছি। যা আগের কমিশন করতে পারেনি। গতকাল আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদযাপন উপলক্ষে দুদক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন দুদকের অন্যতম প্রধান এ নির্বাহী। দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার। বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. নাসির উদ্দিন ও দুদক সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল। এবারের দুর্নীতিবিরোধী দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল- ‘দেশপ্রেমের শপথ নিন। দুর্নীতিকে বিদায় দিন।’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে দ্বাদশ আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালন করে দুদক। কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু আরও বলেন, বর্তমান কমিশন নিরপেক্ষভাবে কাজ করায় অনেক ক্ষমতাধরের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিতে পেরেছি। যেমন মুক্তিযুদ্ধে সনদ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। হাইপ্রোফাইল ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর সময় প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে সক্ষম হয়েছি। ওই সময় কোনো কোনো পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, আমরা অব্যাহতি দিয়ে দেব। শেষ পর্যন্ত আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। রাজনৈতিক বিবেচনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। দুদক কমিশনার বলেন, সরকার বা বিরোধী দল সবাই এখন আমাদের কাছে সমান। আমরা ব্যক্তি না দেখে ব্যক্তির অপরাধ দেখি। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, আমরা নাকি সরকারি দলকে অব্যাহতি দেই। আমরা তো বিএনপি চেয়ারপারসনকেও (খালেদা জিয়া) ভৈরব সেতুর দুর্নীতি মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। এগুলো মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হয় না। হয় কেবল সমালোচনা। দুদক কাউকে দায় মুক্তি দেয় না। আমরা কেবল তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজ করে থাকি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, বর্তমান কমিশন মন্ত্রী-আমলা ও অনেক হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিকে দুদক কার‌্যালয়ে হাজির করতে পেরেছে। এটা সত্যি। কিন্তু শুধু হাজির করাই যথেষ্ট নয়। তাদের বিরুদ্ধে কার্যত কী ব্যবস্থা নেওয়া হলো সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রবীণ এ সাংবাদিক আরও বলেন, দুর্নীতির অনেক রাজা-মহারাজা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্তে¡ও দুর্নীতির দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এটা মিথ্যা নয়। কারণ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে তাদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের তথ্য ছিল। এরা যখন অব্যাহতি পেয়ে যান তখন জনসাধারণের মনে ধারণা হয়, দুদক তাহলে ওমুক দুর্নীতিবাজকে অব্যাহতি দিয়ে দিল। সমকাল সম্পাদক আরও বলেন, আমরা দুদকের সার্বিক কার্যক্রম বিবেচনা করলে দেখতে পাই, দুদকের অব্যাহতির তালিকায় বিরোধী দলের লোকের সংখ্যা খুব কম। এটা সত্যি। দুদকের প্রতি জনগণের আস্থা বাড়ানোর মতো কাজ করার আহ্বান জানান গোলাম সারওয়ার। দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বলেন, দুদকের সমালোচনা হচ্ছে। হবেই। এর মানে দুদক কাজ করছে।

 আর কাজ করলে সমালোচনা হবে। তবে সব মিডিয়াকে বলব, আপনারা গঠনমূলক সমালোচনা করুন। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে এর আগে সকালে দুদকের প্রধান কার‌্যালয় থেকে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও মানববন্ধনের আয়োজন করে দুদক।

সর্বশেষ খবর